ইউক্রেন ছেড়ে পালাচ্ছেন লাখ লাখ নাগরিক
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন ছেড়ে লাখ লাখ নাগরিক প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে যাচ্ছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলছে, এ পর্যন্ত ২০ লাখ লোক ইউক্রেন ছেড়েছেন। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এমন তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রধান ফিলিপো গ্রান্ডি।
এর আগে তিনি বলেন, কিয়েভ-মস্কোর চলমান যুদ্ধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি ও দ্রুত সময়ে শরণার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে।
এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, কেবল সাতদিনের মধ্যে আমরা দশ লাখ মানুষের ঢল দেখেছি। ইউক্রেন থেকে তারা প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মুখপাত্র জোয়াং-আহ গেডিনি-উইলিয়ামসন বলেন, গেল ২ মার্চ মধ্যরাতে শরণার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনের জনসংখ্যার দুই শতাংশের বেশি অন্য দেশে পাড়ি জমাতে চাইলে এই ঢল নেমেছে।
আরও পড়ুন: কার্যালয়ে বসে ভিডিও পোস্ট দিলেন জেলেনস্কি
ইউক্রেনের দুই শহর মারিউপুল ও ভলনোভাক থেকে নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার দ্বিতীয় দফার চেষ্টার সময়ে শরণার্থীদের নিয়ে নতুন এই তথ্য দিলেন ফিলিপ্পো গ্রান্ডি।
স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া, পোল্যান্ড, মালডোভা ও হাঙ্গেরি হাজার হাজার শরণার্থীকে স্বাগত জানাচ্ছে। ইউক্রেনের শরণার্থীর সিংহভাগকে আশ্রয় দিয়েছে পোল্যান্ড। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশটিতে সাড়ে ছয় লাখ শরণার্থী প্রবেশ করেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার পক্ষে ভারতে হিন্দু সেনার মিছিল (ভিডিও)
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলোনিস্ক সামাজিকমাধ্যমে নতুন একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। কিয়েভে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে বসে তিনি ভিডিওটি তৈরি করেছেন। সোমবার (৭ মার্চ) পোস্ট করা ভিডিওতে তিনি বলেন, আমি পালাইনি এবং ভীত নই।
তার এই ভিডিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনকে জোরালোভাবে প্রতিরোধ করছে ইউক্রেনের বাহিনী।
রাজধানী কিয়েভের নিরাপত্তায় প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়েছে দেশটির সাধারণ নাগরিকও। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। বালুর বস্তা দিয়ে রাস্তার দুইপাশে তৈরি করা হয়েছে ব্যারিকেড। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সুসজ্জিত অস্ত্র হাতে দূরবিন দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় অন্তত ১০০ চেকপয়েন্ট বসিয়েছেন রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায়। অনেক স্থানে ভারী কংক্রিট দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে।
ইউক্রেনে সামরিক আভিযানের পরপরই কিয়েভের নিরাপত্তায় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় স্থানীয় নাগরিকদের অংশগ্রহণে প্রতিষ্ঠা করে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বাহিনী। দেশকে ভালোবেসে অনেকেই অংশ নিয়েছেন এতে।
প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা জানান, দিন- রাত ভারী অস্ত্র নিয়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিচ্ছেন তারা। প্রত্যেকের পরিচয় নিশ্চিত হতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রত্যেকটি যানবাহনও যাচাই করা হচ্ছে।
No comments: