Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » শাহিনার স্বপ্নপূরণঃ মুম্বাইয়ের বস্তি থেকে মাইক্রোসফ্টের অফিসার




শাহিনার স্বপ্নপূরণঃ মুম্বাইয়ের বস্তি থেকে মাইক্রোসফ্টের অফিসার

শাহিনা আটারওয়ালা, মাইক্রোসফ্ট সংস্থার ডিজাইন লিডার কম্পিউটার যন্ত্রটা একসময়ে স্বপ্নের মতো ছিল তার কাছে। এখন তিনিই বিশ্বের অন্যতম সেরা এক প্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করছেন। রাস্তায় ঘুমোতেন তিনি এক সময়ে, এখন থাকেন বিলাসবহুল এক বড়সড় ফ্ল্যাটে। তিনি মুম্বইয়ের শাহিনা আটারওয়ালা, মাইক্রোসফ্ট সংস্থার ডিজাইন লিডার। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন বস্তি থেকে তার নিজের উত্থানের কাহিনি, তার হাল না ছাড়া লড়াইয়ের কাহিনি। তবে এই কাহিনি ভাইরাল হওয়ার পিছনে রয়েছে নেটফ্লিক্সের একটি সিরিজ, 'ব্যাড বয় বিলিয়নিয়ারস: ইন্ডিয়া'। এই সিরিজটিতে মুম্বাইয়ের একটি সুবিশাল বস্তিকে দেখানো হয়েছে, ড্রোন শটে। বান্দ্রা স্টেশনের কাছে 'দরগা গলি' বস্তি। সেই বস্তির দৃশ্য দেখেই শাহিনা সেই বস্তিতে তার পুরোনো থাকার জায়গাটি দেখতে পান। তার পরেই সেই দৃশ্যটি টুইট করে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন, "আমি ২০১৫ সালে নিজের ভাগ্যসন্ধানে বেরিয়ে পড়ার আগে পর্যন্ত এই বস্তিরই একটা ঘরে থাকতাম। যে ঘরগুলো আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, তারই একটা ছিল আমাদের।" শাহিনার বাবার তেলের ব্যবসা ছিল। সেই ব্যবসা বাড়াতেই উত্তরপ্রদেশ থেকে সপরিবার মুম্বাই এসেছিলেন তিনি। থাকতে শুরু করেছিলেন 'দরগা গলি' বস্তিতে। শাহিনা বলেন, "বস্তির জীবন খুবই কঠিন ছিল। আমায় অনেক খারাপ পরিস্থিতি চিনিয়েছিল ওই দিনগুলো। ওখানেই আমি লিঙ্গবৈষম্য ও যৌন হেনস্থার শিকার হই। কিন্তু ওখানেই আমি তাগিদ খুঁজে পাই, নিজের জন্য একটা আলাদা জীবন গড়ে তোলার।" শাহীনা বলতে থাকেন, "মাত্র ১৫ বছর বয়সেই আমি অনেক কিছু দেখে ফেলেছিলাম। মহিলারা কত অসহায়, কত অত্যাচারিত, সব দেখতাম আমি। আমার আশপাশের মহিলারা এমন একটা জীবন কাটাতেন, যেখানে ওদের নিজেদের ভাল-মন্দ কোনও কিছুর কোনও স্বাধীনতা ছিল না। যে যেমনটা চায়, তেমনটা থাকতে পারত না। আমি কখনওই মেনে নিতে পারিনি, আমার কপালে যা আছে তা হবে বলে। আমি আমার ভাগ্য নিজে গড়তে চেয়েছিলাম।" স্কুলে পড়ার সময়ে শাহিনার সঙ্গে প্রথম পরিচয় গয় কম্পিউটারের। তখনই যন্ত্রটির প্রতি আকৃষ্ট হয় সে। তার মনে হতো, কম্পিউটার একটি এমন যন্ত্র, যা হাতে পেলে যা খুশি তাই করে ফেলা যায়। যদিও স্কুলে কম্পিউটার শেখার সুযোগ হয়নি তার। শিখতে হতো সেই সেলাইফোঁড়াই। তবে স্বপ্ন বোনা হয়ে গেছিল মনের ভিতরে। শাহীনা বাবার কাছে বায়না করে স্থানীয় কম্পিউটার শেখার স্কুলে ভর্তি হয়। বাবা টাকা ধার করে এনে ভর্তি করেন মেয়েকে। শাহিনা কম্পিউটার শিখতে থাকে এবং টাকা জমাতে থাকে। দিনের পর দিন টিফিন না খেয়ে পয়সা বাঁচাত, হেঁটে বাড়ি ফিরে গাড়িভাড়া বাঁচাত। কারণ পয়সা জমিয়ে একটি কম্পিউটার কেনার স্বপ্ন দেখেছিল কিশোরী শাহিনা। শাহিনা বলেন, "আমি প্রোগ্রামিং শিখেছিলাম, ধীরে ধীরে ডিজাইনিং শুরু করি। কারণ আমার মনে হতো, আমি এভাবেই বদল আনতে পারি এই দুনিয়ায়।" ধীরে ধীরে রোজগার করতে শুরু করেন শাহিনা। সুযোগ পান মাইক্রোসফ্টের মতো বড় কোম্পানিতে যুক্ত হওয়ার। লড়াইটা নেহাত সহজ ছিল না। দীর্ঘ পরিশ্রমের পরে গত বছর 'দরগা গলির' বস্তি ছেড়ে মুম্বইয়ের বড় একটি ফ্ল্যাটে উঠে আসেন শাহিনা এবং তার পরিবার। সূর্যের আলো ঢোকে সে ফ্ল্যাটে, হাওয়া চলে, আকাশ দেখা যায়, সবুজ গাছপালা দেখা যায়। বস্তির ঘরে এসবই স্বপ্ন ছিল। শাহিনা নিজের কথা লিখতে গিয়ে টুইট করেছেন, "আমার বাবা হকার ছিলেন, আমরা একসময়ে রাস্তাতেও রাত কাটিয়েছি। এরকম একটা জীবন স্বপ্নের মতো ছিল। কিন্তু সৌভাগ্য, পরিশ্রম এবং হাল না ছাড়া লড়াই-ই দিনের শেষে জয়ী হয়েছে।" এখনকার প্রজন্মের মেয়েদের উদ্দেশে শাহিনার বার্তা, "পড়াশোনা, শিক্ষা, কেরিয়ারের জন্য যা করতে হয় তাই করো। এটাই তোমাদের জীবনের অঙ্ক বদলে দেবে।"






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply