মুশফিক-লিটনের ব্যাটে প্রথম দিনে দুর্দান্ত বাংলাদেশ
দারুণ খেলেছেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। ছবি : সংগৃহীত
প্রথম সেশনটা মোটেই ভালো কাটেনি। ৪৯ রান তুলতেই চার ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। শুরুতে উইকেট হারানোর চাপ থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। সব সমালোচনাকে দূরে ঠেলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন দাস। ব্যাট হাতে দারুণ ছিলেন মুশফিকুর রহিমও। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারে চড়ে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে ৪ উইকেটে ২৫৩ রান করে বাংলাদেশ। দিন শেষে ২২৫ বলে ১১৩ রানে অপরাজিত আছেন লিটন। তাঁর সঙ্গে ১৯০ বলে ৮২ রানে অপরাজিত মুশফিক।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সাবধানী ব্যাটিংয়ে শুরু করেন দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সাদমান ইসলাম। দুজনে মিলে ভালো ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত দেন। তবে বেশিদূর যেতে পারেনি ওপেনিং জুটি। দলীয় ১৯ রানে মাথায় জুটি ভাঙে।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে শর্ট ফাইন লেগে আবিদ আলীর হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাইফ। অবশ্য বলটি সাইফের ব্যাট ছুঁয়ে কাঁধে লেগে ওপরে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ক্যাচ লুফে নেন আবিদ। ব্যক্তিগত ১৪ রানে সাজঘরে ফিরেছেন তরুণ এই ওপেনার। এরপর টিকলেন না আরেক ওপেনার সাদমান। ঠিক ১৪ রান করে তিনিও বিদায় নিয়েছেন।
চট্টগ্রামে দারুণ খেলা মুমিনুল হক এদিন সাফল্য পাননি। সাজিদের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। অবশ্য সাজিদের বলেই প্রথমে রিভিউতে বাঁচেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাঁর ওভারেই আউট হন। যদিও শুরুতে মুমিনুলের আউটটি দেননি আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়ে সফল হয় পাকিস্তান। ১৯ বলে ৬ রান করে ফিরে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক।
দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর হতাশা বাড়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। ফাহিম আশরাফের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট ছেড়ে দিতে পারতেন তিনি। কিন্তু পারলেন না। ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ নিয়ে নেন সাজিদ খান। ৩৭ বলে ২ চারে ১৪ রান করেন শান্ত। ৪৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে প্রথম সেশনে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
ওই চাপের মধ্যেই শক্ত জুটি বাঁধেন মুশফিক ও লিটন দাস। দুজনের ব্যাটে দ্বিতীয় সেশন দারুণভাবে পার করে বাংলাদেশ। প্রথম দেড় ঘণ্টায় চার উইকেট হারানো বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশনে একটিও উইকেট হারায়নি। সমালোচনাকে দূরে ঠেলে দারুণ ব্যাটিং করেন লিটন। নুমান আলীকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯৫ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের দশম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি। লিটনের পর হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। হাসান আলীকে পরপর দুটি চার মেরে পঞ্চাশের ঘরে পৌঁছে যান অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। হাফসেঞ্চুরি করতে মুশফিকের লেগেছে ১০৮ বল।
পরে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যান লিটন। আগেরবার আক্ষেপ নিয়ে ফেরা লিটন এবার হাল ছাড়েননি। ঠিক পেয়ে গেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ১৯৯ বলে নুমানের বলেই সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি। সেঞ্চুরির পথে হাঁটছেন মুশফিকও। আলোস্বল্পতার কারণে প্রথম দিনে ৫ ওভার কম খেলা হয়েছে। তাই সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকতে হলো অভিজ্ঞ এই ব্যাটারকে। তবে মুশফিক-লিটনের ২০৪ রানের অপরাজিত জুটিতে ভালোভাবেই লড়াইয়ে ফিরল বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে ৫০ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। ৩৮ রান দিয়ে সমান একটি উইকেট নেন হাসান আলী। ফাহিম আশরাফ ও সাজিদ খানের শিকারও সমান একটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ৮৫ ওভারে ২৫৩/৪ (সাইফ ১৪, সাদমান ১৪, মুমিনুল ৬, নাজমুল ১৪, লিটন ১১৩*, মুশফিক ৮২* ; শাহীন ১৮-৪-৫০-১ , ফাহিম ১০-২-৩৮-১, হাসান ১৩-৩-৩৮-১, নুমান ২২-৫-৫১-০, সাজিদ ২২-৩-৬৮-১)
Tag: English News lid news national
No comments: