সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা, ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকিসহ নানা অজুহাত তুলে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী ওই নিষেধাজ্ঞা আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে উঠে যাওয়ার কথা।
ইরানের ওপর মার্কিন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের চেষ্টার প্রেক্ষাপটে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হ'তামি বলেছেন, মার্কিন সরকারের এ প্রচেষ্টা সফল হবে না।
ইসলামী বিপ্লবের পর থেকেই ইরান নানা ধরনের মার্কিন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছে। প্রেসিডেন্ট কার্টার, রিগান ও সিনিয়র বুশ থেকে শুরু করে সব মার্কিন প্রেসিডেন্টই ইরানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কোনো অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছেন। পারমাণবিক নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকে ইউরোপও ২০০৭ সাল থেকে ইরানের কাছে অস্ত্র কেনা ও ইরানের কাছে অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
পার্স টুডের খবরে বলা হয়, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু ক্ষেত্রে সমঝোতার চুক্তি স্বাক্ষর সত্ত্বেও মার্কিন কংগ্রেস ২০১৭ সালে ইরানে অস্ত্র সামগ্রী রপ্তানি ও সরবরাহ নিষিদ্ধ করা সংক্রান্ত বিল পাস করে। কিন্তু ইরান বিগত ৪১ বছর ধরে প্রতিরক্ষা ও সমরাস্ত্র ক্ষেত্রে ঘরোয়া সামর্থ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এ ক্ষেত্রে প্রায় পুরোপুরি স্বনির্ভরতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
মার্কিন আটলান্টিক কাউন্সিল সম্প্রতি ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা অবসানের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বলেছে, ইরান ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ প্রতিরক্ষার নানা সিস্টেমে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। ফলে খুব দামি অস্ত্র আমদানি করার চাহিদা কমে গেছে ইরানের জন্য।
ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নির্মাণে ব্যাপক সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। কাসেম সুলায়মানির ওপর মার্কিন হামলার পর ইরাকে মার্কিন সেনা-ঘাঁটিতে অত্যন্ত নিখুঁত মানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইরান তার সামরিক শক্তির ব্যাপক অগ্রগতির বিষয়টি প্রমাণ করেছে।
মঙ্গলবার ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ইরান এখন নিজেই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের কৌশলগত সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর করছে। সিরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত তেহরান-দামেস্ক চুক্তি প্রমাণ করেছে যে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকলেও তা ইরানের সামরিক ও রাজনৈতিক সক্ষমতা ও কর্তৃত্বে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। ইরান সিরিয়ার সঙ্গে এ চুক্তি স্বাক্ষর করে দেশটির ওপর মার্কিন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাকে প্রকাশ্যেই অকার্যকর করতে সক্ষম হয়েছে।
এরমধ্যে চীনের সঙ্গেও ২৫ বছর মেয়াদী প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে ইরান। যা পুরো এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে বদলে দিতে পারে বলে মত দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র: পার্সটুডে।
No comments: