বহুল আলোচিত-সমালোচিত রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে আজ বুধবার ভোরে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সকাল ঠিক ৯টার দিকে তাঁকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়। ঢাকায় এনেই উত্তরার রিজেন্ট গ্রুপের দ্বিতীয় অফিসে অভিযানের পরিকল্পনা করে র্যাব।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন
আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর রোডের ৬২ নম্বর বাসায় রিজেন্ট গ্রুপের দ্বিতীয় অফিস। ওই অফিসে আমরা অভিযানে যাব একটু বাদেই। সাহেদকে গ্রেপ্তারের পরই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আমাদের এ তথ্য জানিয়েছেন। তাই আমরা সাহেদকে নিয়ে তাঁর অফিসে অভিযানে যাব। অভিযানের পর এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।’
পরে সাহেদকে নিয়ে অভিযানে বের হয় র্যাব। বর্তমানে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে তাঁর গোপন অফিসে অভিযান চালাচ্ছে র্যাব।
এদিকে, রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণার ঘটনার প্রধান আসামি মো. সাহেদ আজ বুধবার ভোর ৫টা ১০ মিনিটের দিকে দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর সীমান্ত এলাকার বেইলি ব্রিজের নিচ দিয়ে লবঙ্গবতী নদীপথে নৌকায় করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় তিনি জিন্সের প্যান্ট ও নীল রঙের শার্টের ওপর কালো রঙের বোরকা পরে ছিলেন। ঠিক সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
চিকিৎসাসেবা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গত ৬ জুলাই বিকেল থেকে রাত অবধি উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালের মূল কার্যালয়ে প্রথমে অভিযান পরিচালনা করেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখান থেকে অভিযান শেষে হাসপাতালটির মিরপুর শাখায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় হাসপাতালটির আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করা হয়।
এরপর ৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের কোভিড ডেডিকেটেড রিজেন্ট হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয় র্যাব-১। এ ছাড়া উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের রিজেন্ট গ্রুপের মূল কার্যালয়ও সিলগালা করা হয়। ৭ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করা হয়।
রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি প্রায় সাড়ে চার হাজার করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে। একজন কম্পিউটার অপারেটর বসে বসে সাড়ে চার হাজার রিপোর্ট তৈরি করেছেন। মনগড়া রিপোর্ট পজিটিভ-নেগেটিভ দিয়েছেন।
তা ছাড়া মোট ১০ হাজার রোগীর করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করে রিজেন্ট হাসপাতাল। মাত্র চার হাজার ২৬৪টি নমুনা সরকারিভাবে টেস্ট করে রিপোর্ট দেয়। এ ক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রতারণার কৌশল গ্রহণ করে রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কারো জ্বর থাকলে তাকে পজিটিভ আর জ্বর না থাকলে নেগেটিভ রিপোর্ট প্রদান করে।
No comments: