আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সীমান্তে সংঘর্ষে নিহত ১৬
আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এক বেসামরিক লোকসহ ১৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন সেনা কর্মকর্তা রয়েছেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, আজারবাইজানের ১১ সেনা ও এক বেসামরিক নাগরিক এবং আর্মেনিয়ার ৪ সেনা নিহত হয়েছেন।
দেশ দুটির মধ্যে রোববার শুরু হয় এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। গত তিনদিনের সংর্ঘে বিভিন্ন সময় আজারবাইজানের এসব সেনা নিহত হন। পক্ষান্তরে শুধু বুধবারই ৪ সেনা নিহত হয়েছেন আর্মেনিয়ার।
আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত আজারবাইজানের নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে এই দুই সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। তবে এবারের সংঘর্ষের ঘটনাটি ওই বিরোধপূর্ণ অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে আর্মেনিয়ার তাভুশ অঞ্চলে ঘটেছে।
আজারবাইজানের পার্বত্য অঞ্চল নাগোর্নো-কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর হাতে আছে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর অঞ্চলটিতে লড়াই শুরু হলে আর্মেনীয়রা স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়।
১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে অস্ত্রবিরতি হলেও আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া ধারাবাহিকভাবে পরস্পরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছে। নাগোর্নো-কারাবাখের এ পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলের জন্যও উদ্বেগের বিষয়। কারণ পাইপলাইনে করে বিশ্ব বাজারে তেল ও গ্যাস সরবরাহের করিডর হিসেবে ব্যবহৃত এই অঞ্চলটিকে অস্থিতিশীল করে তোলার হুমকি তৈরি করে এই অঞ্চলকে ঘিরে প্রতিবেশী দেশ দুইটির দ্বন্দ্ব।
দেশ দুটির দ্বন্দ্ব নিরসনে আন্তর্জাতিক সব প্রচেষ্টা বন্ধ রয়েছে কয়েকবছর যাবত। তবে এবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর মধ্যস্ততার প্রস্তাব দিয়েছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান।
গত কয়েকদিন আগে দেশ দুটির সীমান্তে কোনো একটি পক্ষ হঠাৎ গুলি ছোঁড়ে। এটিকে কেন্দ্র করে দেশ দুটির শীর্ষ রাজনৈতিকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব এবং বিতর্ক চলে আসছিলো। এরই প্রেক্ষিতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলো। তাই স্বাভাবিকভাবেই দুপক্ষই একে অপরকে যুদ্ধের উষ্কানির জন্য দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছে।
ঘটনার এমন প্রবাহের ম্যধ্যে মঙ্গলবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ আলাদাভাবে আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইলমার মোহাম্মদ ইয়ারব এবং আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহরাব এমনাতসাকানিয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেন বলে খবর প্রকাশ করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পার্স টুডে।
খবরে বলা হয়, টেলিফোন সংলাপের সময় জাওয়াদ জারিফ দু পক্ষকে ধৈর্যধারণ এবং আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। এছাড়া, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত এ দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার চলমান উত্তেজনা কমানোর ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করার জন্য ইরান প্রস্তুত বলেও তিনি জানান।
No comments: