চরম খাদ্য সংকটে পড়তে যাচ্ছে আফগানিস্তান
করোনাভাইসে আক্রান্ত শুরুর দিকে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলসহ বেশকিছু এলাকা লকডাউন করা হয়। এছাড়া অভ্যন্তরীণ ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশটি। ফলে দেশটিতে খাদ্যের দাম বেড়েছে। এমতাবস্থায় দেশটির প্রায় ৭০ লাখেরও বেশি শিশু খাদ্য সংকটের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে এক গবেষণায় জানা গেছে।
মহামারি করোনাভাইরাস শুরুর আগে থেকেই আফগানিস্তানের প্রায় ৫০ লাখেরও বেশি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিল। এবার করোনাভাইরাসের কারণে চরম খাদ্য সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশটি।
সেভ দ্য চিলড্রেনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি পদক্ষেপ না নেয় তবে ক্ষুধা, রোগ ও মৃত্যুর কবলে পড়বে দেশটি। সংস্থাটি জানায়, দেশটির জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ খাদ্যের অভাবে পড়তে যাচ্ছে। এদের মধ্যে ৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন শিশুও রয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যখন শিশুদের বেশি করে পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন হয় এমন সময়েই খাদ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে দেশটিতে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটির প্রায় ২০ লাখ শিশু খাদ্যের অভাব রয়েছে।
দেশটিতে খাদ্য সংকটের পাশাপাশি চিকিৎসা সংকট রয়েছে। জানা গেছে, আফগানিস্তানে প্রতি হাজার মানুষের জন্য চিকিৎসক রয়েছে মাত্র ০ দশমিক ৩ জন। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, সেখানে অসুস্থ ও অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পাবে না।
সম্প্রতি দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর তালিকায় আফগানিস্তানের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে জাতিসংঘ।সংস্থাটির বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এক সতর্ক বার্তায় জানিয়েছে, ক্ষুধা মহামারির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব।
আফগানিস্তান ২০০১ সালে তালেবানদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর থেকে প্রায় দুই দশক ধরে যুদ্ধের মধ্যে ছিল এতে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে গেছে।
আফগানিস্তানে নিযুক্ত সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিচালক টিমোথি বিশপ বলেন, দেশটিতে ভাইরাসের ঝুঁকির চেয়ে বড় মহামারি হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্ষুধা। কেননা লকডাউনের কারণে খাদ্যের যোগান ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে সেখানে। এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া হলে ক্ষুধা, রোগ ও মৃত্যুর ঝড় বয়ে যাবে দেশটিতে। ক্ষুধার কারণে শিশুদের মৃত্যুও হতে পারে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, এই মুহূর্ত থেকে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সহযোগিতা না করলে চরম বিপর্যয়ে মধ্যে পড়বে দেশটি। কারণ লকডাউন শুরুতে দেশটির প্রধান শহরগুলোর বাজারে গমের আটা ও ভোজ্য তেলের দাম ২৩ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া চাল, চিনি ও ডালের দামও ৭ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া কোনো কাজও নেই মানুষের হাতে।
সূত্র: বিবিসি
No comments: