নারায়ণগঞ্জে ৩৯ র্যাব সদস্যের পর ৪৩ পুলিশ করোনায় আক্রান্ত
নারায়ণগঞ্জে র্যাবের চার কর্মকর্তাসহ ৩৯ জন করোনায় আক্রান্তের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই জেলা পুলিশের ৪৩ সদস্য করোনায় শনাক্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে জেলায় র্যাব-পুলিশের ৮২ জনের শরীরের করোনায় পজিটিভ। এদিকে পুলিশের ৪৩ সদস্য শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম।
জেলা পুলিশের সূত্র জানায়, এই ৪৩ জন সদস্য চার দফায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রথম দফায় ১৫ জনের শরীরে ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার একদিন বাদে আরও চারজনকে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর দুই দিন পর আরও সাত জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। সর্বশেষ ২৯ এপ্রিল আরও ১৭ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, আক্রান্তদের মধ্যে চারজন পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তা রয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া অন্যদের কেউ কেউ নিজ বাসায় এবং কিছু কিছু সদস্য সংশ্লিষ্ট থানায় তৈরি করা আইসোলেশনে রয়েছেন।
তবে থানার আইসোলেশনে থাকা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদেরকে কেন্দ্র করে অন্যদের মাঝে কিছুটা ভীতি কাজ করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
তারা বলছেন, থানার মধ্যে আক্রান্তদের রাখাটা নিরাপদ নয়। এতে করে অন্যদেরও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। যেহেতু থানায় কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট একটা মেসের খাবার খেয়ে থাকেন। টিফিন-কেরিয়ার করে তাদের খাবার আসে। আক্রান্তরাও একই মেস থেকে খাবার আনিয়ে খাচ্ছেন। ফলে আজ যে টিফিন-কেরিয়ার আক্রান্ত ব্যক্তি ব্যবহার করেছে সেটি কাল অন্যজনের কাছে যাচ্ছে। এ নিয়ে করোনা বিস্তৃতির ভীতি কাজ করছে অন্যদের মাঝে।
এদিকে ৪৩ জন আক্রান্তের সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানিয়েছেন, যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা প্রত্যেকেই পুলিশ লাইন্সের রয়েছে। এর মধ্যে কেউ কেউ নিজ বাসস্থানে আছেন। এছাড়া নতুন যারা আক্রান্ত হবেন এর মধ্যে ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ ও সদর থানার টপ ফ্লোরে আইসোলেশন করা হয়েছে সেখানে থাকবেন। এর বাইরে অন্য কোনও থানাতে কোনও সদস্যকে রাখা যাবে না।
সহকর্মীদের ভয়ভীতি প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, এখানে কেউ কেউ ভয় পেয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু ভয় পেলে চলবে না। তাদেরকে মনোবল বাড়াতে হবে। এবং আমাদের যে সহকর্মীটি আক্রান্ত হয়েছেন তার মনোবলও বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি যাই হোক না কেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার যে দায়িত্ব আমাদের এবং চলমান পরিস্থিতিতে আমাদেরকে কাজ চালিয়ে যেতেই হবে। এ জন্য মনোবল নষ্ট করা যাবে না। আক্রান্ত কাউকেই টিফিন কেরিয়ারে খাবার দেওয়া হবে না। তাদের খাবার ওয়ানটাইম প্যাকেটে যাবে।
No comments: