ফুটবলের রাজপুত্রের আজ জন্মদিন
৫ ফেব্রুয়ারি। ক্যালেন্ডারের হিসেবে আর পাঁচটা স্বাভাবিক দিনের মতোই একটা তারিখ। কিন্তু ফুটবল দুনিয়ার জন্য, তারিখটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এদিনই যে পৃথিবীর বুকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন পর্তুগীজ রাজপুত্র ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। আধুনিক ফুটবলে, যার সঙ্গে তুলনা করার মতো আর এক দুটি নামই পাওয়া যাবে খোঁজাখুঁজি করে। জন্মদিনের প্রথম প্রহরে এই ফুটবল কিংবদন্তীর জন্য রইলো খেলার সময়ের বিশেষ শুভেচ্ছা।
বলা হয়ে থাকে এ মুহূর্তের বিশ্ব সেরা ফুটবলার, আবার কারো কারো মতে সর্বকালের সেরা ফুটবলারেরদের একজন। অনেকের কাছে আধুনিক ফুটবলের অন্যতম একজন সুনিপুণ শিল্পী তিনি। তার পাঁয়ের প্রতিটি ছোঁয়া এক একটি অমূল্য শিল্প, যার ক্যানভাস ১১৫/৭৪ গজের ওই সবুজ গালিচা।
এই ফুটবল নক্ষত্রের নাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ডস সান্তোস অ্যাভেইরো। ১৯৮৫ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি পর্তুগালের মাদেইরা শহরের মিউনিসপালের মালি হোসে ডিনিস অ্যাভেইরো এবং কুক মারিয়া ডলোরেসের ঘর আলো করে আসেন তিনি। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের নামানুসারে অ্যাভেইরো পরিবারের ৪র্থ সন্তানের নাম রাখা হয় রোনালদো। বাবা মা'র আশা ছিলো শিক্ষাদীক্ষায় বড় হয়ে ছেলেও একদিন নাম করবে রোনালদোর মতোই।
কিন্তু মুচকি হেসেছিলেন ফুটবল বিধাতা। তার গল্প যে লেখা ছিলো অন্যভাবে। শৈশব থেকেই বড় ছেলেদের সঙ্গে মাঠের খেলাতেই বেশি মনোযোগী ছিলেন রোনালদো। ফুটবলার হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মাত্র ৭ বছর বয়সেই যোগ দেন আন্ডোরিনহাতে। সেখানে ৪ বছর কাটিয়ে চলে যান ন্যাশিওনালে। এরপর সেখান থেকে স্পোর্টিং লিসবনের যুব দলে। বদলে যেতে থাকে ক্রিস্টিয়ানোর জীবন।
ধীরে ধীরে লিসবনের মূল দলে জায়গা করে নেন ২০০২ মৌসুমে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি পর্তুগীজ রাজপুত্রকে। ২০০৩ সালে স্যার আলেক্স ফার্গুসনের নজরে পড়েন কিশোর রোনালদো। যোগ দেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। সফলতা এসে ঠুকরে পরে তার পায়ের তলায়।
৭ মৌসুম পর তৎকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোর রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ড ছেড়ে পাড়ি জমান স্পেনে। যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। এরপরের গল্প তো জানা আছে সবারই। ক্লাব ফুটবলের ক্যারিয়ারে জেতা যায়, এমন সব কিছুই দখলে এসেছে সি আর সেভেনের। রেকর্ড টানা তিনবারের সঙ্গে চারবার মাদ্রিদিস্তাদের হয়ে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।
তবে, সেই সুখ টেকেনি বেশিদিন। আয়কর দেয়া নিয়ে সৃষ্টি জঠিলতায় ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে মনোমালিন্য করে চলে যান ইতালিতে। যোগ দেন তুরিনের বুড়িদের সঙ্গে। যে মধুচন্দ্রিমা চলছে এখনো।
জন্মদিনের কেকে বয়সের জায়গায় লেখা থাকবে ৩৫। সময়ের খেরোখাতার হিসেব বলছে, বুড়িয়ে যেতে বসেছে বুটজোড়া। কিন্তু, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা কোটি সমর্থকদের মন বলছে, আরো কিছুদিন হয়তো এভাবেই আনন্দ বেদনা মিলিয়ে তাদের সঙ্গে থেকে যাবেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তাদের অভিলাষ, ক্যারিয়ারের শেষটা তিনি করবেন একটা সোনালি বিশ্বকাপ হাতে।
শুভ জন্মদিন সি আর সেভেন।
Tag: games
No comments: