Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » ভারতের 'মুক্তচিন্তার' বিশ্ববিদ্যালয়গুলিই কেন হিন্দুত্ববাদীদের টার্গেট হয়ে উঠছে




দিল্লির জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় বা জেএনইউ ক্যাম্পাসে রবিবার রাতে যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে সারা দেশেই ছাত্রছাত্রী আর নাগরিক সমাজ প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছে।
সেদিন জেএনইউতে যা হয়েছে, সেই মাত্রায় না হলে কয়েক মাস আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ছাত্ররা ঘেরাও করে রাখার পরে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল।
জেএনইউ-এর মতোই সেদিনের ঘটনার জন্যও অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছিল হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর দিকেই।
এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয় হোক বা হায়দ্রাবাদের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বারে বারেই প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে এমন কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, যেগুলিকে 'মুক্তচিন্তাভাবনা'র প্রতিষ্ঠান বলে মনে করা হয়।
কেন এই কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় সহিংসতা হচ্ছে বারে বারে, সেটা বুঝতে কথা বলেছিলাম জেএনইউ-এর অর্থনীতির অধ্যাপক জয়তী ঘোষের সঙ্গে।
তিনি বলছিলেন, "আমরা ছাত্রছাত্রীদের শুধুই পরীক্ষার জন্য পড়িয়ে ছেড়ে দিই না, তাদের সবসময়ে প্রশ্ন করতে শেখাই। নিজেদের মতো করে বিশ্লেষণ করতে শেখাই যাতে তারা পরবর্তী জীবনে প্রশ্ন করে, ভেবে চিন্তে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে। আর ঠিক এই জিনিষটাই বর্তমান ক্ষমতাসীন দল চায় না।"
জেএনইউ-তে হামলার ঘটনার বিরুদ্ধে ভারতজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছবির কপিরাইটPUNIT PARANJPE
Image captionজেএনইউ-তে হামলার ঘটনার বিরুদ্ধে ভারতজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে
"তারা মনে করে তারা যেটা বলবে, সেটা নিয়ে কেউ যেন কোনও প্রশ্ন না করে। তারা যদি বলে আকাশটা সবুজ, তাতেই হ্যাঁ বলতে হবে। তারা যদি বলে অর্থনীতি খুব ভাল অবস্থায় আছে, সেটাতেই যারা সায় দেবে, সেরকম লোকই পছন্দ এদের," মন্তব্য জয়তী ঘোষের।
জেএনইউ-এর মতোই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রছাত্রীদের যে প্রথম থেকেই নিজের মতো করে বিশ্লেষণ আর খোলা মনে চিন্তা করতে শেখানো হয়, সেটা বলছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই গবেষক দেবস্মিতা চৌধুরী। তিনিই কয়েক সপ্তাহ আগে সমাবর্তনে স্বর্ণপদক নিতে উঠে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কপি ছিঁড়ে ফেলে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।

বা আমাদের যাদবপুর - এগুলো কলা বিভাগগুলোকেই বামপন্থী বলে টার্গেট করা হয়। কারণ এখানে আমাদের সবসময়ে ক্রিটিকালি ভাবতে শেখানো হয়, নিজের মতো করে - যে চিন্তাভাবনা সমাজের একটা বড় অংশের কাজে লাগে। এখানে একটা মুক্তচিন্তার আবহাওয়ায় আমরা থাকি," বলছিলেন মিজ চৌধুরী।

যে নকশালপন্থী ছাত্র সংগঠন এআইএসএ বা আইসা জেএনইউতে খুবই সক্রিয় এবং যাদের কথা হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি বারে বারেই উল্লেখ করে থাকে, সেই সংগঠনটির যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সহসভানেত্রী দেবপ্রিয়া অধিকারী বলছিলেন, এইসব ক্যাম্পাস প্রতিবাদ করতে শেখায় বলেই তারা হিন্দুত্ববাদীদের টার্গেট।
জেএনইউ'র ভাইস চ্যান্সেলরের অফিসের সামনে বিক্ষোভছবির কপিরাইটHINDUSTAN TIMES
Image captionজেএনইউ'র ভাইস চ্যান্সেলরের অফিসের সামনে বিক্ষোভ
"এইসব প্রতিষ্ঠানগুলো এজন্যই পরিচিত যে এখানকার ছাত্রছাত্রীরা শুধুই পড়াশোনা করে চাকরির জন্য দৌড়য় না। এখানে প্রশ্ন করতে, প্রতিবাদ করতে জানে। তারা জানে যে কোন নীতি কেন প্রণয়ন করা হচ্ছে - তা শিক্ষা হোক বা স্বাস্থ্য বা জাতীয় জীবনের মূল সমস্যাগুলো নিয়ে তারা ভাবে। প্রতিবাদের আওয়াজ এইসব প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই ওঠে বরাবর। এটাতেই এদের আপত্তি," বলছিলেন দেবপ্রিয়া অধিকারী।
তবে কলকাতার একটি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক বিমল শঙ্কর নন্দ মনে করেন যে শুধুমাত্র এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে মুক্তচিন্তার ক্ষেত্র বললে ভুল হবে।
"শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেই মুক্তচিন্তাভাবনা হয়, অন্য কোথাও হয় না, এটা মানতে আমার আপত্তি আছে। তবে ঠিকই এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শুধু নয় -সারা দেশেই দুই বিপরীত মতাদর্শের সংঘাত হচ্ছে। বাম এবং অতিবামপন্থীদের যে ভাবধারা এতদিন প্রাধান্য পেয়ে এসেছে এখন সেটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে কারণ জাতীয়তাবাদী ভাবধারা ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। তাই এই দুই মতাদর্শের লড়াই চলতেই পারে, আর তা যদি শান্তিতে হয়, সেটাতে আপত্তিরও কিছু নেই। কিন্তু জে এন ইউতে যা হয়েছে সেই ভ্যান্ডালিজম কোনওভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু বুঝতে হবে এধরণের ঘটনা হচ্ছে কেন জে এন ইউ বা যাদবপুরে," বলছিলেন মি. নন্দ।
"এই কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে তথাকথিত মুক্তচিন্তার নাম করে বাম এবং অতিবামপন্থীদের একটা ঘাঁটি তৈরি হয়ে গেছে। তারা আতঙ্কিত হচ্ছে যে তাদের পরিবর্তে কোনও চিন্তাধারা যদি চলে আসে এই জায়গাগুলোতে, তাদের নিয়ন্ত্রণ যদি চলে যায়, তাদের মৌরসী পাট্টা নষ্ট হয়ে যেতে পারে," ব্যাখ্যা মি. নন্দর।
মু্ক্তচিন্তার ধারক বলে পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেই কি শুধু টার্গেট করা হচ্ছে?ছবির কপিরাইটNOAH SEELAM
Image captionমু্ক্তচিন্তার ধারক বলে পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেই কি শুধু টার্গেট করা হচ্ছে?
জাতীয়তাবাদী ভাবধারা আর বামপন্থী ভাবধারার যে সংঘাতের কথা অধ্যাপক নন্দ বলছিলেন, তা অবশ্য মানতে চাইলেন না যাদবপুরের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের গবেষক দেবস্মিতা চৌধুরী ।
তার পাল্টা প্রশ্ন, "জাতীয়তাবাদী চিন্তা কথাটা বলা হচ্ছে আজকাল ঠিকই কিন্তু এই জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা কী? ফ্যাসিস্টরাও নিজেদের জাতীয়তাবাদী বলত! আসলে দেশপ্রেম শব্দটারই বিকৃত অর্থ হল জাতীয়তাবাদ। একটা জোর করার, বলপ্রয়োগের ব্যাপার আছে এই জাতীয়তাবাদ কথাটাতেই। আমি যদি জাতীয়তাবাদী ভাবনায় বিশ্বাস না করি, তার অর্থ কী আমি দেশকে ভালবাসি না?"
মিজ চৌধুরী যদিও জাতীয়তাবাদী ভাবধারা আদৌ কী, সেটা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন, কিন্তু ঘটনাচক্রে সাম্প্রতিক কালে তাদের ওই জাতীয়তাবাদী মতামতের বিরোধিতা করলেই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি তাদের দেশবিরোধী বলে চিহ্নিত করছে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply