জনশুমারি হবে নির্ভুল ও নির্মোহ: পরিকল্পনামন্ত্রী
দেশের ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনা শুরু হচ্ছে ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি। ওই জনশুমারির প্রারম্ভিক কর্মশালা উদ্বোধন করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন: এবারের জনশুমারি হবে নির্ভুল ও নির্মোহ। সঠিক তথ্যের সাথে কোন আপস করা হবে না।
এছাড়াও মন্ত্রী বলেছেন: ক্রয় বিক্রয়ে আমাদের সাবধান হতে হবে, যাতে কোনো ধরনের অপচয় না হয়।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিবিএস ভবনে জনশুমারি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
এসময় তিনি বলেন: প্রতিটি কাজ আমাদের নিয়মনীতি অনুযায়ী করতে হবে। আমাদের লিখিত নিয়মনীতি আছে। এখানে মৌখিক কোনো ব্যাপার নয়। সরকারি বিধি-বিধান ছাপানো আছে। সেগুলো পালন করতে হবে অক্ষরে অক্ষরে।
ক্রয়, নিয়োগ ও পরিচালনা প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান ব্যুরোসহ সবাইকে সঠিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
এম এ মান্নান বলেন: জনগণের জন্য আমরা কাজ করি। তারা যেন আমাদের কাজে সন্তুষ্ট হয় এবং আমাদের কাজের মাঝে তাদের যেন আস্থা প্রতিফলিত হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন: দুর্নীতি সম্পর্কে আমাদেরকে সাবধান হতে হবে। ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কে আমাদের সাবধান হতে হবে। যারা ক্রয়-বিক্রয় করে নিয়মনীতি অনুযায়ী করে। যাতে আমরা সঠিক দরদাম পেতে পারি।
তিনি আরও বলেন: এই গণনার কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা এই কাজে জড়িত প্রত্যেকের কাজই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারাই গণনার কাজ করবে তাদের কাজগুলো সঠিকভাবে মনিটরিং করতে হবে। যাতে এই গণনার কাজে কেউ বাদ না পড়ে।
এসময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন: আমরা যেভাবে চাচ্ছি সেটা আমরা পাচ্ছি না। উন্নয়ন করলে সেটা একটা সিস্টেমে করতে হবে। সিস্টেম অনুযায়ী কাজ না করার ফলে আমাদের কাজগুলো বিশ্বের সামনে ফুটে উঠছে না।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন: আমরা ডিজিটাল আর্কিটেকচার ফাইনাল করেছি। এখন সব তথ্য একটা ডাটা লিস্টে থাকবে। ফলে এখন আর একই তথ্য বারবার গণনার প্রয়োজন হবে না। তথ্য কালেকশনে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। তথ্য কালেকশনে ভালোভাবে মনিটরিং করতে হবে।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনএফপিএ’র প্রতিনিধি ড. আশা টেরকলনস।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ও স্মরণীয় করে রাখতে দেশের ষষ্ঠ ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা’র ক্ষণগণনা (কাউন্ট ডাউন) শুরু হবে আগামী ১৭ মার্চ। দেশব্যাপী জনশুমারির মূল গণনা ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
বিবিএস জানিয়েছে: খানা তালিকা প্রণয়নের জন্য প্রথমবারের মতো এ শুমারিতে মূল শুমারির আগে লিস্টিং অপারেশন পরিচালনা করা হবে। প্রতিটি খানার জন্য একটি ইউনিক হাউজ-হোল্ড আইডি প্রদান করা হবে।
এবারই প্রথম মাল্টিমোড (মোবাইল অ্যাপ, ওয়েব অ্যাপ, পিক অ্যান্ড ড্রপ, পেপার বেইজড, কল সেন্টার ইত্যাদি) পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো সীমিত আকারে ই-সেন্সাস পরিচালনা করা হবে।
বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিক ও বিদেশে অবস্থানরত অথবা ভ্রমণরত বাংলাদেশি নাগরিকদেরও প্রথমবারের মতো গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
২০২১ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনায় গণনাকারী ও সুপারভাইজারের যোগ্যতা ন্যূনতম উচ্চ মাধ্যমিক হতে হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় যুবক ও নারীদের গণনাকারী ও সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হবে বলেও জানায় বিবিএস।
জনশুমারির জন্য গত ২৯ অক্টোবর ১ হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক)। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের ১ হাজার ৫৭৮ কোটি ৬৮ লাখ এবং বিদেশি অর্থায়ন ১৮৩ কোটি ১১ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
১৯৭৪ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জনশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সর্বশেষ ও পঞ্চম জনশুমারি ও গৃহগণনা হয় ২০১১ সালে।
পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী আদমশুমারিকে জনশুমারি নামকরণ করা হয়। ২০১১ সালে দেশের সর্বশেষ জনশুমারি ও গৃহগণনা সম্পন্ন করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস। তখন দেশের মোট জনসংখ্যা ছিলো প্রায় ১৪ কোটি ৪০ লাখ।
Tag: politics
No comments: