যবিপ্রবি’র উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ছবি বিকৃতি’র ঘটনায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, জনসংযোগ কর্মকর্তাসহ দোষীদের বিরুদ্ধে সংবিধান ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত এক রিটের পর জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। এই রায়ের অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম কে রহমান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলে সাইফুল ইসলাম
এই রিটের শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার
আদালতে বলেন: সংবিদানের ৭(ক) অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি সংবিধানের কোনো অংশ লঙ্ঘন করেন বা লঙ্ঘনের ষড়যন্ত্র করেন বা সহযোগিতা করেন তবে সেই ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে অভিযুক্ত হবেন। যেহেতু সংবিধানের ৪(ক)অনুচ্ছেদে জাতির জনকের প্রতিকৃতি সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের বিষয়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। তাই এটি সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফলে এই অংশের যদি কেউ ব্যত্যয় ঘটানোর চেষ্টা করেন তাহলে অবশ্যই সে ব্যক্তি ৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
এর আগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ডেস্ক ক্যালেন্ডারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতির অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারিতে হাইকোর্টে রিট করেন যশোর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল।
সেই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট যবিপ্রবি ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেনসহ তিন জনের বিরুদ্ধে রুল জারি করে। সেই সাথে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়ে এ ঘটনায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ কর্মকর্তাকে তলব করা হয়। এরপর গত বছরের ৪ নভেম্বর এরা আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
অন্যদিকে ঘটনা তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদারকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এরপর গত বছরের ১৫ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিল করে এই কমিটি।
সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০১৮ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির পিতার ছবি এবং ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করা হয়নি। এছাড়া ২০১৮ সালের ক্যালেন্ডারে জাতির পিতার ছবির ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির নাম লেখাও সমীচীন হয়নি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডার পুনঃমুদ্রিত। আগের (প্রথম) প্রিন্ট করা কপিতে জাতির পিতার ছবি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিদ্র করে স্পাইরাল বাইন্ডিং করা হয়। এছাড়া জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি (ছবির মাথা কেটে) বিকৃত করা হয়, যা প্রথম মুদ্রিত ডেস্ক ক্যালেন্ডার থেকে স্পষ্টতই প্রমাণ পাওয়া যায়। জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা করেননি। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই তারা দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। তাদের ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বর করা উচিত ছিল।’
Tag: others
No comments: