Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » ইরান-আমেরিকা: ট্রাম্পের ভাষণের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ দিক




ইরানী জেনারেল কাসেম সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তেহরান যখন মার্কিন বাহিনীকে লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, তার পরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করেন যে "সবকিছু ঠিক আছে"। হামলার পরদিন সকালে দেয়া এক বক্তব্যে তিনি কেন এটাকে ঠিকঠাক বলেছেন তা ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেন। এখানে ট্রাম্পের ১০ মিনিটের বক্তৃতা থেকে পাঁচটি মূল বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে। যা ইঙ্গিত দেয়, এই মুহূর্তে, চলমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হয়ে আসতে পারে। বেরিয়ে যাওয়ার পথ "ইরান সরে দাঁড়িয়েছে বলে মনে হচ্ছে, যা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্য একটি ভাল ব্যাপার এবং বিশ্বের জন্যও খুব ভাল একটি বিষয়।" ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের প্রতিক্রিয়াকে কীভাবে দেখবেন? তিনি কি একে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করার অজুহাত হিসাবে দেখবেন বা নাকি সেটা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজবেন। মঙ্গলবার সকালে তিনি পরের অপশনটি বেছে নেন। তিনি ঘোষণা দিয়ে বলেন, ইরানের হামলায় তেমন হতাহত হয়নি এবং ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে অনেক কম। তিনি মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রশংসা করেন এবং "শাস্তিস্বরূপ আরও বেশি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিশ্রুতি দেন" - মানুষ একটি অস্বাভাবিক, অসম সামরিক প্রতিক্রিয়ার যে আশঙ্কা করেছিল (চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে তিনি যে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন) তেমন কিছু ট্রাম্প বলেননি। ট্রাম্প পাল্টা হামলা না চালানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে ইরানীদের সামনে এমন দাবি করার সুযোগ এসেছে যে, ট্রাম্পই তার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। তবে এটি যে ট্রাম্পের একটি বিজয় বক্তৃতা ছিল সেবিষয়ে কোন ভুল নেই - এই অঞ্চলে আমেরিকান আধিপত্য যে খুব ভালোভাবেই আছে সেটিই তিনি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।- আর সেটি ছিল তার বক্তব্যের সবেমাত্র শুরু।

মার্কিন ড্রোন হামলায় সোলেইমানির বন্ধু এবং ইরাকি আধা সামরিক বাহিনীর প্রধান অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াও নিহত হয়েছিলেন। আমরা অক্ষত অবস্থায় জেগে উঠেছি "সোলেইমানিকে সরিয়ে দিয়ে আমরা সন্ত্রাসীদের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠিয়েছি: আপনি যদি নিজের জীবনকে মূল্য দেন তবে আমাদের মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলবেন না।" ট্রাম্প সকালে যেসব বিষয়ে কথা বলেছেন তার বেশিরভাগ ইতিমধ্যে ঘটে গেছে। তবে সামনে আরও কি আসতে পারে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি। সোলেইমানি কেন "বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী" সেটা প্রতিষ্ঠিত করার দিকে ট্রাম্প বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। তিনি সোলেইমানিকে পৈশাচিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আমেরিকানরা তাকে তার দীর্ঘকালের প্রাপ্য শাস্তি দিয়েছে। তিনি বলেন, "সোলেইমানির হাত আমেরিকান ও ইরানি উভয়ের রক্তেই ভিজে ছিল, তিনি জঙ্গি সেনাদের প্রতি তার সমর্থন জানিয়েছেন, আঞ্চলিক গৃহযুদ্ধ উস্কে দিয়েছেন এবং প্রমাণ হিসাবে মার্কিন সেনাদের লক্ষ্যবস্তু করেছেন।" তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন যে, সোলেইমানি আমেরিকানদের উপর আরও আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করেছিল - এখানে তিনি আগের উদাহরণ টেনে আনেন, যেগুলোর পক্ষে তেমন কোন প্রমাণ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে যে, মার্কিন স্বার্থের জন্য সোলেইমানি হুমকি হয়ে ওঠাই তাকে হত্যার জন্য প্ররোচিত করেছে। সোমবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাদে সোলেইমানির মৃত্যু এবং এর মাধ্যমে যে বার্তাটি দেয়া হয়েছে, সেটার দিকে যদি মনোযোগ দেয়া যায় - তাহলে দেখা যাবে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলতে চেয়েছেন যে, এই সঙ্কট অশান্তি এবং নাটকীয়তা তৈরি করলেও সেটি প্রয়োজনীয় ছিল। তবে কিছু ভাষ্যকার ট্রাম্পকে এতোটা আত্মতৃপ্ত থাকার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন, কারণ ইরানের এমন প্রতিক্রিয়া চলমান থাকতে পারে। ইরাকের ওই মার্কিন ঘাঁটিতে ইরান বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তবুও ওবামার দিকে আরেকটি ধাক্কা "গত রাতে আমাদের ও আমাদের মিত্রদের লক্ষ্য করে যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করা হয়েছিল সেগুলো গত প্রশাসনের তহবিলের সাহায্যে সংগ্রহ করা হয়।" যদি ট্রাম্পের শাসনামলে একটি বিষয় স্থির থাকে, তা হল, তিনি তার পূর্বসূরি বারাক ওবামার সকল সিদ্ধান্ত থেকেই একে একে সরে এসেছেন। স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ, অর্থনীতি, অভিবাসন এবং বিশেষত - ইরান পরমাণু চুক্তি, এসব বিষয়ে বারাক ওবামার কাজগুলো বদলে দিতে ট্রাম্প এক নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এতে অবাক হওয়ার মতো কিছু নেই যে জাতীয় টেলিভিশন ভাষণ দেয়া ভাষণেও তিনি ওবামার আরেকদফা সমালোচনা করার সুযোগ ছাড়েননি। ওবামা প্রশাসনের সময় আলোচিত ইরান পারমাণবিক চুক্তির কারণে ইরানের কয়েক বিলিয়ন ডলারের সম্পদ খালাস পায়, যেগুলো ১৯৭৯ সালের ইরানের বিপ্লবের পরে মার্কিন ব্যাংকগুলিতে জব্দ অবস্থায় ছিল। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য এই তহবিলগুলো ব্যবহার করার কোনও প্রমাণ নেই। ইরানের সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার অনেক আগে থেকেই এই ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি কার্যকর ছিল - তবে ট্রাম্পের মূল বক্তব্য হল, এই চুক্তি ইরানকে ওই অঞ্চলে আরও আগ্রাসী হওয়ার জন্য রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সুযোগ দিয়েছে। এ বক্তব্যের জন্য কোন প্রমাণের প্রয়োজন মনে করেননি ট্রাম্প। ওবামার ইরান চুক্তি শেষ হয়ে গেছে, ট্রাম্প তার বক্তৃতায় চুক্তি স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলিকে বলেছেন যে, সময় এসেছে একটি নতুন চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করার -সেটা হবে একটি ট্রাম্প চুক্তি - যা বিশ্বকে "নিরাপদ এবং আরও শান্তিপূর্ণ স্থান" হিসেবে গড়ে তুলবে। আমি মধ্য প্রাচ্য থেকে প্রস্থান করতে পারি "আজ, আমি নেটোকে মধ্য প্রাচ্যের প্রক্রিয়ায় আরও বেশি জড়িত হতে বলবো।" ইরানের সাথে একটি নতুন চুক্তি নিয়ে অন্য দেশগুলোকে ট্রাম্প যে বার্তা দিয়েছে, তা এখানেই শেষ হয়নি। তিনি সামরিক জোট ন্যাটোকে এতদিন ছোট করে কথা বললেও এখন তাদেরকেই অগ্রসর হতে বলছেন। এটি ট্রাম্পের বৈদেশিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যেখানে তিনি প্রায়ই বিদেশী জোট থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বিচ্ছিন্ন করার কথা বলতেন। তিনি প্রায়শই এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, যা মধ্য প্রাচ্যের সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। এখন, ইরানী সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হামলার আদেশ দেওয়ার পরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানী বাহিনীর সরাসরি সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারতো। কিন্তু তারপরও প্রেসিডেন্ট আবারও পিছিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। মার্কিন অর্থনীতি বিকশিত হচ্ছে এবং তারা এখন জ্বালানিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ, বলেন ট্রাম্প। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন - বা হুঁশিয়ারি করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের সময় এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের বোঝা ভাগ করে নেয়ার। অবশ্যই, মধ্য প্রাচ্যের অস্থিতিশীলতা বৈশ্বিক জ্বালানির বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানির দাম বাড়িয়ে তুলতে পারে। সেই তেল ও গ্যাস উত্তর ডাকোটা শেল ডিপোজিট বা পারস্য উপসাগরীয় তেলকুপ থেকে আসলেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এর প্রভাব পড়বে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান তাই পরিষ্কার বা সহজ হবে না। "যতক্ষণ আমি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আছি, ইরানকে কখনও পারমাণবিক অস্ত্র রাখার অনুমতি দেওয়া হবে না।" সবাইকে শুভ সকাল বলার আগেই মি. ট্রাম্প একটি গ্যারান্টি দিয়ে বক্তব্য শুরু করেন - যেখানে ছিল শক্তির প্রদর্শন এবং সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি। মঙ্গলবার সকালে প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে নাটকীয়তার অনেক ছোঁয়া ছিল। তার পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল কঠোর চেহারার, পুরস্কারের ব্যাজে ঠাসা একদল সামরিক কর্মকর্তা। এছাড়া প্রশাসনের সিনিয়র সদস্যরা তাকে ঘিরে ছিলেন। আরও পড়তে পারেন: ইরানের ৫২টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলার হুমকি ট্রাম্পের সোলেইমানি হত্যা ট্রাম্পকে নির্বাচনে সহায়তা করবে? 'মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিনীদের দিন শেষ হয়ে গেছে' ঘরে তাঁর প্রবেশের দৃশ্যটা ছিল অনেকটা বার্তাবাহকদের মতো, উল্টোপাশে একটি খোলা জানালা থেকে আলোর আভায় তার অবয়ব উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। কিন্তু তার বক্তব্য ছিল অনেক ধীর এবং সংক্ষিপ্ত। এবং পুরো বক্তব্যই ছিল অগোছালো- তবে মার্কিন রাজনীতিতে ছবির গুরুত্ব এখনো ব্যাপক। সাম্প্রতিক ইরান সঙ্কট, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক সুবিধা দেবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়। যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের সুরক্ষার জন্য এটি ইতিবাচক উন্নয়ন হবে কিনা সে সম্পর্কেও কোন নিশ্চয়তা মেলেনি। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এভাবে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অবয়ব নিয়ে প্রধান সেনাপতি হিসেবে জনসমক্ষে আসা,তারপর সোলেইমানি ও ইসলামিক স্টেট নেতা আবু বকর আল-বাগদাদীর মৃত্যুর জন্য কৃতিত্ব গ্রহণ- এসব তার আসন্ন পুনঃনির্বাচনের প্রচারের মূল থিম হয়ে উঠবে বলে ধারণা করাই যায়।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply