বিরক্ত মেসি, দিন দিন হয়ে যাচ্ছেন একা
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে স্প্যানিশ সুপার কাপে হারের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা ছবি ঘুরছে। রোমা, লিভারপুল আর অ্যাটলেটিকো ম্যাচের তিনটি ভিন্ন ছবি একসঙ্গে জোড়া লাগানো। বিষয়বস্তু এক, বিষণ্ণ মুখে কোমরে হাত দিয়ে শূন্যে তাকিয়ে লিওনেল মেসি। শিরোপার খুব কাছে গিয়েও বারবার বার্সেলোনার খালি হাতে ফেরার প্রতীকী চিত্র হয়ে উঠেছে যে ছবি!
সবশেষ ২০১৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে বার্সা। পরে ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে বারবার পিছলে যাওয়া দলটির। এই প্রতিটি লড়াইয়ে কোন দোষ খুঁজে পাওয়া যাবে মেসির? হয়তো খানিকটা, হয়তোবা না। ব্যর্থতার বলির পাঠা যদি হতে হতো আর্জেন্টাইন মহাতারকাকে, তাহলে লা লিগা শিরোপাও জেতা হতো না বার্সার, মেসির হাতে উঠত না ষষ্ঠবারের মতো ব্যালন ডি’অর ট্রফিটাও।
বার্সার ব্যর্থতার জন্য দায়ী কারা? এ প্রশ্নে একযোগে দায় চাপিয়ে দেয়া যেতে পারে কাতালানদের বাকি খেলোয়াড়দের ঘাড়ে। গত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সেমিতে ডেম্বেলে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করায় লিভারপুলের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ব্যবধান ৪-০ করতে পারেনি বার্সা। পরে লিভারপুলের মাঠে গিয়ে মনোযোগেরও যথেষ্ট ঘাটতি ছিল। নয়ত পিকেদের ছন্নছাড়া অবস্থার সুযোগ নিয়ে ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার-আর্নল্ড যখন সবাইকে বোকা বানিয়ে কর্নার নিলেন, তখন বার্সার বাকি খেলোয়াড়রা তা প্রতিহত করতে পারলেন না কেন? ডিভোক অরিগি কেন আনমার্ক পজিশনে থেকে গোল করে ছিটকে দিতে পারলেন বার্সাকে?
গত কোপা ডেল রের ফাইনালে জর্ডি আলবার ভুলে কাপ পাওয়া হয়নি বার্সার। অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে গত বুধবার যেন দর্শক হয়ে ছিলেন স্যামুয়েল উমতিতি, পিকে, সার্জিও বুস্কেটসরা। একটা দলে প্রায় সবাই যখন ভঙ্গুর মানসিকতায় ভোগে, প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাদের দুর্বলতার চিত্রটা তখন দ্রুতই ফাঁস হয়ে যায়, প্রভাব পড়ে খেলাতেও।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
মেসিদের যেভাবে বোকা বানিয়েছিলেন অ্যালেক্সান্ডার-আর্নল্ড
দলের এই অবস্থায় অধিনায়ক হিসেবে মেসির কী করণীয়? আদতে তার কিছুই করার নেই। দেড় বছর আগে স্থায়ীভাবে বার্সার অধিনায়ক হবার পর কখনও মনে হয়নি অধিনায়কত্ব নিয়ে খুব একটা অস্বস্তিতে আছেন এলএম টেন। তার আগের তিন অধিনায়ক- পুয়োল, জাভি ও ইনিয়েস্তার মতোই যোগ্য নেতা তিনি। অধিনায়ক হিসেবে কী করতে হবে ভালোই জানা তার। সতীর্থদের উজ্জীবিত করার মন্ত্রটাও জানেন। পাশাপাশি নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলে যাওয়ার মতো বড় চ্যালেঞ্জও নিয়মিত উতরে যেতে হয় মেসিকে। তিনি শুধু যা পারেন না তা হল, সতীর্থদের খেলাটা খেলে দিতে!
মেসির বয়স চলছে ৩৩। খেলোয়াড়ি জীবনের শেষের ধাপে আছেন, সেটা ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর হাতে নিয়েই জানিয়ে দিয়েছেন। শেষ সময়টুকু যেন খানিকটা রঙিন হয় সেজন্যই সর্বোচ্চ চেষ্টা এ ফরোয়ার্ডের। বাকিরা সেটা হতে দিচ্ছেন কই?
এগারোজনের দলে বাকি দশজন যখন হাল ছেড়ে দেন সেখানে একা মেসির কতটুকু করার থাকে। শেষের আগে আরেকটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়, অধিনায়ক হিসেবে ট্রফি উঁচিয়ে উল্লাস করা হবে কিনা তা ভাবাচ্ছে আর্জেন্টিনা হয়ে বারবার শূন্য হাতে ফেরা ট্র্যাজিক মহানায়কের সমর্থকদের। মেসি নিজেও হয়ত উত্তরগুলো খোঁজেন, প্রতিবার ব্যর্থ হওয়ার পর। তখন মুখে লেপ্টে থাকে একরাশ বিরক্তি আর হতাশা!
Tag: games
No comments: