মিজান-বাছিরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন
চল্লিশ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের মামলায় সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান ও দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এ অভিযোগপত্রে অনুমোদন দেয়া হয়।
গত বছরের ১৬ জুলাই মিজান ও বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদুক। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি করেছিলেন দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও তিনি।
মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা জানান, শিগগিরই অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় ঠিক করে রেখেছে আদালত।
ডিআইজি মিজান ও দুদক পরিচালক এনামূল বাছিরের বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং সংস্থারটির কর্মকর্তাদের ওপর নজরদারি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন দুদক সচিব।
এদিকে, অবৈধ ব্যবসা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে সম্পদ অর্জনকারীদের মামলার অভিযোগপত্র ও তদন্তে অগ্রগতির অংশ হিসেবে অভিযুক্তদের রিমান্ডে নেয়া ছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।
সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদের বিষয়ে নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার উদ্দেশ্যে দুদক পরিচালক এনামূল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেন ডিআইজি মিজান। গতবছর ১৬ জুলাই ঘুষ লেনদের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ ঘটনার পর সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এনামূল বাছিরকে।
দীর্ঘ ৫ মাস পর আজ রোববার এ সংক্রান্ত অভিযোগপত্র কমিশনে জমা দিলে তা অনুমোদন দেন কমিশন। দুদক সচিব জানান, আইনানুযায়ী বাছিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং অন্যসব কর্মকর্তাদের ওপরও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, অবৈধ সম্পদ অর্জনের ‘দায় থেকে বাঁচার জন্য’ ডিআইজি মিজান অসৎ উদ্দেশ্যে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে খন্দকার এনামুল বাছিরকে ‘প্রভাবিত করেন’ বলে অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়েছে।
এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় গত বছরের জানুয়ারিতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় মিজানকে। এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক; এক হাত ঘুরে সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান গত ৮ জুন দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা বাছির। এর সপক্ষে তাদের কথপোকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপ একটি টেলিভিশনকে দেন তিনি। ওই অডিও প্রচার হওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা।
অভিযোগটি অস্বীকার করে বাছির দাবি করেন, তার কণ্ঠ নকল করে ডিআইজি মিজান কিছু 'বানোয়াট' রেকর্ড একটি টেলিভিশনকে সরবরাহ করেছেন।
ঘুষের অভিযোগ ওঠার পর তাদের দুজনকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গত বছর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। অপরদিকে আরেক মামলায় গ্রেফতার ডিআইজি মিজানকে পরে এই মামলায়ও গ্রেফতার দেখানো হয়।
এদিকে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর ওয়ার্ড কমিশনার রাজিবকে ৫ দিনের রিমান্ডে এনে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ক্যাসিনো কাণ্ডে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে গ্রেফতার খালেদ মাহামুদ ভূইয়ার পরিবারের সদস্যদের।
এছাড়াও নবাবপুরে মুক্তিযোদ্ধার নামে বরাদ্দ জমি জোর করে দখল করার অভিযোগে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ভূমিদস্যু শেখ মো. জাভেদ উদ্দীনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে দুদক।
Tag: Featured
No comments: