তাজরীন অগ্নিকাণ্ডের ৭ বছর
ঢাকার আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডের ৭ বছর পূর্তি আজ। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে নির্মমভাবে নিহত হন ১১১ পোশাকশ্রমিক। আহত হন ১০৪ জন।
নিহতদের মধ্যে ভবনের তৃতীয় তলায় ৬৯, চতুর্থ তলায় ২১, পঞ্চম তলায় ১০, পরবর্তীতে বিভিন্ন হাসপাতালে মারা যান ১১ জন। লাশ শনাক্ত হওয়ায় ৫৮ জনকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাকি ৫৩ জনের লাশ অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা হয় জুরাইন কবরস্থানে।
দিবসটি উপলক্ষে আজ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও নিহতদের স্বজনরা কারখানার সামনে ফুল দিয়ে নিহত শ্রমিকদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত শ্রমিকেরাও এতে অংশ নেন।
আজ রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টা থেকেই নিশ্চিন্তপুর এলাকায় পুড়ে যাওয়া তাজরীন ফ্যাশনের সামনে জড়ো হতে থাকে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সাধারণ শ্রমিকরা। পরে কারখানাটির ফটকের সামনে ফুল দিয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তারা।
শ্রদ্ধা শেষে শ্রমিক নেতারা তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডে সব ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিককে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ ও মালিক দেলোয়ার হোসেনের কঠোর শাস্তির দাবি জানান। তারা কারখানা মালিকের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগানও দিতে থাকেন।
এদিকে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার সব সাক্ষীকে সাত বছরেও আদালতে হাজির করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১২ সালে দায়ের করা এই মামলায় ২০১৫ সালে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার পর থেকে গত চার বছরে ১০৪ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৬ জনের জবানবন্দি-জেরা শেষ হয়েছে। বাকি সাক্ষীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে দুষছেন শ্রমিক নেতারা। আর আশুলিয়া থানা পুলিশ দায়ী করছেন রাষ্ট্রপক্ষের সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। তার দাবি, সমন পাঠানোর পরেও সাক্ষীদের হাজির করে না পুলিশ।
২০১৫ সালের ১ অক্টোবর মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। এরপর থেকে এই পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য মোট ৩৫টি তারিখ ধার্য করা হয়। এই ৩৫ দিনের মধ্যে মাত্র ৬দিন রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্য হাজির করেছে।
সর্বশেষ গত ২০১৯ সালের ৭ মার্চ সাক্ষী সাভার থানার এস আই আবিদ হোসেনকে হাজির করে রাষ্ট্রপক্ষ। তিনি অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিকদের লাশের সুরতহাল তৈরি করেছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য গত ৭ নভেম্বর তারিখ ধার্য ছিল। ওই দিন কোনও সাক্ষীকে আদালতে হাজির করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২০ জানুয়ারি পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত।
No comments: