কলকাতা টেস্টে মাথায় বলের আঘাত পাওয়া দুই ক্রিকেটার লিটন দাস ও নাঈম হাসান শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন বিসিবি চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী। একই ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ১ সপ্তাহ বিশ্রামে থাকতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি জাতীয় দলের আরও কয়েকজন ক্রিকেটার চোটে পড়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, তরুণ লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, নারী দলের ওয়ানডে অধিনায়ক রুমানা আহমেদ। মঙ্গলবার বিসিবি কার্যালয়ে তাদের সবশেষ অবস্থা সংবাদমাধ্যমকে জানান ডাক্তার দেবাশীষ।
লিটন-নাঈম: ‘প্রাথমিকভাবে ওরা মাথায় চোট পাওয়ার পর সেখানেই (কলকাতায়) দেখেছে। পরে সেখানকার স্থানীয় হাসপাতালে স্ক্যান করানো হয় তাদের। স্ক্যানের রিপোর্টে কোন ব্লিডিং বা খারাপ কিছু পাওয়া যায়নি। ধরে নিচ্ছি ওদের অবস্থা তেমন মারাত্মক নয়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী প্রথম দুই দিন ওদের সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। আইসিসির কিছু গাইডলাইন আছে মাথায় চোট পাওয়ার বিষয়ে। আঘাত লাগার দুই দিন পর ওরা স্বাভাবিক শারীরিক কাজ শুরু করতে পারে। এখন পর্যন্ত রিপোর্ট দেখে বলতে পারছি যে ওরা আশঙ্কামুক্ত। ওরা দেশে ফিরলে আমরা আবার ওদের রিভিউ করব। তবে সকলের সহযোগিতায় এতটুক বলতে পারি যে ওরা শঙ্কামুক্ত আছে।’
মাহমুদউল্লাহ: ‘ওর ইনজুরিটা হচ্ছে গ্রেড ওয়ান হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি। সে গতকাল স্ক্যান করিয়েছে আমরা এখনও রিপোর্ট হাতে পাইনি। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে খুব অল্প মাত্রার হ্যামস্ট্রিং হলেও আমরা ৭ দিনের বিশ্রাম বেঁধে দেই। বিশ্রাম নেয়ার জন্য, রিহ্যাব করার জন্য। ফিট না হয়ে খেলায় ফিরলে আবার ইনজুরিতে পরার সম্ভাবনা থাকে। একই ইনজুরি ওই জায়গাতে হলে সারতে সময় নেয়। আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে ওর দ্বিতীয় ইনজুরিটা আটকানো। কারণ একই জায়গায় দ্বিতীয়বার চোট পেলে ফিরতে দিগুন সময় লাগতে পারে। এতে এক মাসের মতো সময় লেগে যায়। আর তৃতীয়বার লাগলে খেলোয়াড়ের ওই মৌসুম মিস করার একটা সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে আমাদের প্রথম এবং প্রধান কাজ হচ্ছে ইনজুরিটা যেন দ্বিতীয়বার না হয় সেটার ব্যবস্থা করা।’
বিপ্লব: ‘সাউথ এশিয়ান গেমসের জন্য দল শিগগিরই দল নেপাল যাচ্ছে। সেখানে ইনজুরির কিছু সমস্যা আছে। বিপ্লবকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। ওর চোট এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেনি।’
মাশরাফী: ‘সে মোটামোটি চেষ্টা করছে নিজের রিহ্যাব প্রোগ্রামটা চালিয়ে নেয়ার জন্য। আজকেও সে ফিজিওথেরাপি এবং জিম সেশন করেছ। তবে আমরা যেভাবে চাচ্ছি তাকে সময় দিতে রিহ্যাবের জন্য সেভাবে সে সময় দিতে পারছে না। ওর ব্যথা কমে আসছে আগের থেকে কিন্তু পুরোপুরি সেরে গেছে এটা বলা যাবে না। ও যদি ব্যস্ততার বাইরে আরেকটু সময় দিতে পারত তাহলে আরেকটু তাড়াতাড়ি সেরে উঠতো। বিপিএলের আগে ঠিক হয়ে যাওয়া উচিত। যে সময় সে আঘাত পেয়েছে, আর সেরে ওঠার জন্য যতটুক সময় পেয়েছে তাতে আশা করা যায় সে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এখানে ওর বড় ভূমিকা রাখবে ওর পুনর্বাসন প্রক্রিয়াটা। যত বেশি সময় দিতে পারবে তত বেশি ওর জন্য সহজ হবে ফিরে আসা।’
রুমানা: ‘আমাদের মেয়েদের দলের (ওয়ানডে) অধিনায়ক রুমানার একটা হাঁটুর সমস্যা গত পাঁচ-ছয় মাস ধরে আছে। আমরা চেষ্টা করছি এটাকে ম্যানেজ করার। ওর প্যাচেলার টেন্ডেনে একটা সমস্যা আছে। এই ধরণের সমস্যায় দেখা যায় কয়েক মাস লেগে যায়। ওর ব্যাপারে সমস্যা হচ্ছে যে আমরা ওকে টানা বিশ্রামে রাখতে পারছি না। মাঝে মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে ওকে অংশ নিতে হয়েছে। তো এখন আমরা ওকে আগামী বিশ্বকাপের আগে কোনো ম্যাচ বা টুর্নামেন্টে অংশ নিতে দিব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী ২ মাস সম্পূর্ণ ফিজিও এবং ট্রেনারদের তত্ত্বাবধানে থাকবে। এভাবে যদি ওকে আমরা ম্যানেজ করতে পারি খেলার বাইরে রেখে রিহ্যাব করাতে তাহলে ফলাফলটা আরেটু ভালো হত। গেল এক মাস ধরে সে বিশ্রামে আছে, আরও এক-দেড় মাস সে খেলার বাইরে থাকবে। আশা করছি এভাবে করলে ফেব্রুয়ারির আগে সে পুরোপুরি ফিট হয়ে যাবে।’
No comments: