বন্যা প্রতিরোধে জাতীয় সংলাপ চান ড. কামাল
বন্যা প্রতিরোধে জাতীয় সংলাপ চেয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে দলের সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল বলেন, ‘জানমালের নিরাপত্তায় সবাই ঐক্যবদ্ধ না হলে ক্ষয়ক্ষতি কমানো যাবে না।’
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
বন্যা মোকাবিলায় বাঁধ নির্মাণ, নদী খননে কোথায় ঘাটতি রয়েছে তা চিহ্নিত করা জরুরি বলে মনে করেন ড. কামাল হোসেন। বন্যা প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় বিভিন্ন সময় দুর্নীতি হয়েছে—টিআইবির রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে গণফোরাম সভাপতি বলেন, ‘এসব দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বন্যা হবে এটিই স্বাভাবিক, কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রতিবছর যে কোটি কোটি টাকা বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা কতটুকু কাজে আসছে, কার পকেটে যাচ্ছে টাকা তা স্পষ্ট হওয়া দরকার।’
ড. কামাল বলেন, ‘বন্যা কেন ও কীভাবে হয়, বন্যা থেকে বাঁচার জন্য কী কী করণীয়, সেগুলো নিয়ে জনগণকে আরো সচেতন করতে ও যথাযথ পদক্ষেপ-পরিকল্পনা গ্রহণ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবশ্যই একটা জাতীয় সংলাপ অপরিহার্য।’
ড. কামাল বলেন, ‘দেশে কার্যকর গণতন্ত্র নেই। দল-মত নির্বিশেষে জনগণকে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, বন্যার বিস্তৃতি ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে সঠিক তথ্য তুলে ধরুন। বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তলুন।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে কাজগুলো হয়নি, সেগুলো চিহ্নিত করে আমাদের এগোতে হবে। সে কাজগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। সরকারের পক্ষে একা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব নয়। সবাই মিলে সমন্বিতভাবে বন্যা মোকাবিলা করতে হবে।’
দেশে কার্যকর গণতন্ত্র না থাকায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ সফল হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন ড. কামাল। বলেন, ‘এ রকম বন্যা পরিস্থিতির সময় আমরা মনে করি, সবাইকে নিয়ে বসা দরকার। এলাকার লোক, দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে মতবিনিময় করা হোক। সবার কাছে তথ্য যা আছে, সবকিছু নিয়ে সেগুলোর মূল্যায়ন করা অপরিহার্য।’
তিনি বলেন, ‘অন্তত এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে আমরা যেন গর্ব করে বলতে পারি, স্বাধীনতার একটা অর্জন সফল হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বন্যা মোকাবিলায় শতভাগ প্রস্তুত। অন্তত এই কাজটুকু আমরা করি। বন্যা নিয়ন্ত্রণে কী কী কাজ হচ্ছে, সেটা জরিপ করা, এলাকায় গিয়ে দেখা উচিত কাগজে-কলমে যা বলা হচ্ছে আসলে তা হচ্ছে কি না।’
ড. কামাল বলেন, ‘নদীতে ড্রেজিং হলে তো এ রকম ভরাট হওয়ার কথা নয়। এ ব্যাপারে যে ভয়াবহতা, এতে সত্যি ভয় পাওয়ার কথা। কেননা বন্যা তো আমরা নতুন দেখছি না, এটার শিকার তো আমাদের পূর্বপুরুষ, পাকিস্তান আমল বা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই দেখে আসছি। স্বাধীনতার পর আমরা চিহ্নিত করেছি যে এটা আমাদের একটা সমস্যা। এখন এই সমস্যা সমাধান না করে যদি একে অন্যকে দোষারোপ করা হয় তাহলে সমস্যা থেকেই যাবে। সবাই মিলে এর মোকাবিলা করতে হবে। সরকারের একার পক্ষে সম্ভব না।’
Tag: others
No comments: