প্রথমেই বলতে হয় বাংলাদেশে পেঁপেঁ সবত্র পাওয়া যায়। তাই হয়তো আমরা পেঁপেঁর মূল্য বা উপকারীতা বুঝি না। ইউরোপে এমনও দেশ রয়েছে যেখানে একটি পেঁপেঁ ৫ ডলার দিয়েও ক্রয় করতে হয়। আসল কথা হলো পেঁপেঁ এমন একটি ফল যা পুষ্টিগুণে ভরপুর। কাঁচা পেঁপেঁ যেমন রান্না করে খাওয়া যায় তেমনি সালাদ করে কাঁচাও খাওয়া যায়।
কাঁচা পেঁপেঁতে যা পাওয়া যায়
১০০ গ্রাম কাঁচা পেঁপেঁতে শর্করা পাওয়া যায় ৭.২ গ্রাম, ক্যালোরী থাকে ৩২ কিলোক্যালোরী, ভিটামিন সি ৫৭ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৬.০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৬৯ মিলিগ্রাম, খনিজ ০.৫ মিলিগ্রাম এবং ফ্যাট বা চর্বি থাকে ০.১ মিলিগ্রাম।
কাঁচা পেঁপেঁর উপকারীতা
১। কাঁচা পেঁপেঁ হৃদরোগের জন্য অত্যান্ত উপকারী। সকালে কাঁচা পেঁপেঁ সালাদ বা ভর্তা করে খেলে শরীরের সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কম থাকে।
২। কাঁচা পেঁপেঁতে অ্যান্টি অ্যামোবিক ও অ্যান্টি প্যারাসিটিক উপাদান রয়েছে। যা কোষ্ঠকাঠিণ্যতা দূর করতে ভূমিকা রাখে। অনেক সময় অনেক শিশু অতিরিক্ত কেমিক্যাল যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিণ্যতা দেখা দেয়। তাদের কাঁচা পেঁপেঁর একটু টুকলো খাইয়ে দিলে কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর হবে।
৩। কাঁচা পেঁপেঁতে পেপসিন নামক উপাদান থাকে। যা কৃমি নাশক হিসাবে কাজ করে। পেটে অতিরিক্ত কৃমির সংক্রমণ দেখা দিলে কাঁচা পেঁপেঁর রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে সকালে খালি পেটে সেবন করলে পেটের কৃমি দূর হবে।
৪। পেঁপেঁতে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বকের জন্য দারুন কার্যকরী। যাদের মুখে মেছতা, ত্বক কালো সহ মুখে ব্রণের সমস্যা তারা কাঁচা পেঁপেঁ বেটে মুখে লাগাতে পারেন।
৫। তুলনা মূলক ভাবে বাংলাদেশের মধ্যে স্তরের মানুষ গুলো পুষ্টিকর বা স্বাস্থ্যকর খাবার কম খাই। আর পুষ্টিজনিত সমস্যাতে নানা রকমের রোগ বালাই দেখা দেয়। যেমন চোখে কম দেখা। চোখের রেটিনার ক্ষতি হলে মানুষ তখন চোখে কম দেখে। প্রতিদিন কিছু পরিমান কাঁচা পেঁপেঁ খেলে চোখে কম দেখা দূর হয়। কারন পেঁপেঁতে প্রচুর ভিটামিন এ, ডি ও ভিটামিন সি থাকে। যা বয়সের ছাপ দূর করতে বিশেষ ভাবে সহযোগীতা করে।
৬। অনিয়মিত মাসিকের ব্যথাতে ভূগে থাকেন অনেক মেয়েরা। মাসিক চক্র শুরু হওয়ার পরে ব্যথা হতে দেখা দিলে কাঁচা পেঁপেঁ খেতে পারেন। কাঁচা পেঁপেঁ বেটে পেটের ব্যথা যুক্ত স্থানে লাগিয়ে দিলে ব্যথা কমে যাবে। এছাড়াও হাটুর অথবা কোমর ব্যথা হলে কাঁচা পেঁপেঁ পানিতে সিদ্ধ করে আক্রান্ত স্থানে পানি ঢাললে উপকার পাওয়া যায়।
৭। ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁচা পেঁপেঁ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাঁচা পেঁপেঁতে যথেষ্ট আঁশ বা ফাইবার রয়েছে। পেঁপেঁতে যেমন কম ক্যালোরী আছে তেমন মেদ কমানোর জন্য বিশেষ কিছু উপাদান রয়েছে। প্রতিদিন দুপুরের খাদ্য তালিকাতে পেঁপেঁ রাখলে ওজন কমাতে অনেক সহজ হয়ে যায়।
পরিশেষে, প্রতিটা ফল মূল সৃষ্টি কর্তা সৃষ্টি করেছেন মানব জাতীর কল্যাণের জন্য। তাই কোন ফল বা খাবার কে অবহেলা না করে আসুন অল্প অল্প করে হলেও খায়। নিজে সুস্থ্য থাকুন এবং আশে পাশের মানুষদের কে সুস্থ্য রাখুন।
No comments: