ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন ন্যাম'র পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক
আন্তর্জাতিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর মাধ্যমে বিশ্বে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
এমন সময় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হল যখন ভেনিজুয়েলাসহ আরো কয়েকটি দেশের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের একতরফা নীতি, হুমকি ও নিষেধাজ্ঞার কারণে সারা বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়েছে। এ কারণে ভেনিজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ আরিয়াজা এ বৈঠককে আন্তর্জাতিক অধিকার রক্ষার জন্য সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আমেরিকার পক্ষ থেকে জাতিগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদের হাতিয়ার ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন ন্যামের সদস্য দেশগুলো মার্কিন সরকারের অন্যায় কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। এ কারণে ন্যামের এ বৈঠক বিশ্বের দেশগুলোর বিরুদ্ধে মার্কিন ধ্বংসাত্মক নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানানোর সুযোগ এনে দিয়েছে।"
ভেনিজুয়েলায় এমন সময় ন্যাম জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন ওই দেশটির বিরুদ্ধে আমেরিকা কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। যদিও ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেও এখন পর্যন্ত ভেনিজুয়েলাকে নতজানু করতে পারেনি। বিশেষ করে ন্যামের সদস্য ১২০টির বেশি দেশ, অস্থায়ী সদস্য ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধির অংশ গ্রহণে ভেনিজুয়েলায় ন্যামের বৈঠক অনুষ্ঠান থেকে বোঝা যায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওই দেশটিকে কোণঠাসা করার মার্কিন নীতি কার্যত ব্যর্থ হয়েছে।
ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অধ্যাপক ওয়াল্টার ওরতিয এ ব্যাপারে বলেছেন, "ন্যাম সম্মেলন বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা, বহুপক্ষীয় সহযোগিতা বিস্তার, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিরোধ অবসানে শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের নিন্দা জানানোর সুযোগ এনে দিয়েছে।"
জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সদস্য দেশগুলোর এ বৈঠক এমন সময় অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন আমেরিকার একতরফা ও স্বেচ্ছাচারী নীতি সারা বিশ্বের শান্তির জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রায় সবগুলো দেশ ভুক্তভোগী হওয়ার কারণে ভেনিজুয়েলার এ বৈঠক বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। বৈঠকে উপস্থিত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, "আমেরিকার উগ্র নীতি বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে যা আমাদের সবাইকে ভোগান্তির মুখে ঠেলে দিয়েছে। এ পরিস্থিতি বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"
বিশ্ব যখন দুই মেরুকেন্দ্রীক ব্যবস্থায় বিভক্ত ছিল তখন জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন বা ন্যাম গঠিত হয় এবং এর অবস্থান ছিল দুই মেরুকেন্দ্রীক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। বর্তমানেও বহুপক্ষীয় সহযোগিতা বিস্তার, মার্কিন একাধিপত্য মোকাবেলা এবং বিশ্বে গঠনমূলক ভূমিকা পালনের জন্য আন্তর্জাতিক বৃহৎ সংস্থাগুলোর হাত শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন ভূমিকা রাখতে পারে। #
Tag: world
No comments: