তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড গত ১৩ দিনে ৮১ প্রকৌশলীসহ ৬৮০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করেছে। এরমধ্যে সিবিএ নেতা ও কর্মচারী ৫০৭ জন।
বৃহস্পতিবার বদলি করা হয়েছে প্রকৌশলীসহ ১১৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। তিতাস বোর্ডের অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় দফায় দফায় বদলি করা হয়।
জানা গেছে, বদলিকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে ৪ থেকে ২৫ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটির বিতরণ এলাকার একই অফিসে কাজ করে আসছিলেন। অভিযোগ আছে, একই কর্মস্থলে বছরের পর বছর থাকায় তারা শক্তিশালী ঘুষ-দুর্নীতির সিন্ডেকেটে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
সম্প্রতি এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরপর জ্বালানি বিভাগের আদেশে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার শুরু করে তিতাস।
তিতাস গ্যাস সূত্র জানায়, ৪ জুলাই থেকে এ বদলি শুরু হয়েছে। ওই দিন বদলি করা হয় ১৮৭ জনকে। এরপর ৭ জুলাই ১৩৩ জনকে বদলি করে তিতাস। এর আগে এত বেশিসংখ্যক কর্মীকে একসঙ্গে বদলি করার নজির নেই প্রতিষ্ঠানটিতে।
তিতাসের এক পরিচালক বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, যারা বছরের পর বছর একই জায়গায় আছেন তাদের বদলি করা হচ্ছে। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, অনেকে বদলি চান, হয় না। আবার অনেককে বদলি করলেও যান না। তিনি বলেন, ‘দুদকের সুপারিশ ছিল, আমাদের বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
দুর্নীতি কমাতে অর্থাৎ দুর্নীতির পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সেজন্য এ উদ্যোগ নেয়া জরুরি ছিল।’ এমন উদ্যোগ আরও আগে নেয়া দরকার ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কেউ দায়িত্ব নেয়নি। আগে কাজটি হলে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে একটি ধারণাও তৈরি হতো যে, তিনিও বদলি হতে পারেন। একই জায়গায় বছরের পর বছর থাকা যাবে না।’
বৃহস্পতিবার বদলি হওয়াদের মধ্যে আছেন প্রকৌশলী, সুপারভাইজার, বিক্রয় সহকারী, কম্পিউটার অপারেটরসহ বেশ কিছু পদের কর্মচারী। এ পর্যন্ত বদলি হওয়া কর্মীদের বেশিরভাগই কারিগরি ক্যাডারের। ৯২ জন রাজস্ব বিভাগের। যেহেতু বিল আদায় থেকে সব কাজই কম্পিউটারের মাধ্যমে করা হয়, তাই কম্পিউটার অপারেটরদের ভূমিকাকে বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়েছে।
সম্প্রতি দুদক জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো এক প্রতিবেদনে জানায়, তিতাসের কর্মীরা একই কর্মস্থলে অনেক দিন কাজ করে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
এর আগে এপ্রিলে তিতাসের অপেক্ষাকৃত উপরের সারির কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়। ওই সময় প্রতিষ্ঠানটির কাঠামোর বাইরে গঠিত ১৮টি ভিজিল্যান্স টিম বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এবার মধ্যম শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মস্থল বদলে দিল প্রতিষ্ঠানটি।
তিতাস বলছে, দুদকের প্রতিবেদন ধরে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে। এর আগে ট্র–থ কমিশনে যাওয়া ব্যক্তিদের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে জ্বালানি বিভাগে। এরপর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন দুর্নীতি করতে না পারে সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের অংশ হিসেবেই এই বদলি করা হচ্ছে বলে তিতাসের প্রশাসন বিভাগের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
তিতাসে ১৩ দিনে ৬৮০ কর্মকর্তা কর্মচারী বদলি
Tag: others
No comments: