বিমান বাহিনীর যুদ্ধ বিমান ওভারহলিং ইউনিটের স্বীকৃতি সনদপত্র লাভ
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ২১৪ মেইন্টেন্যান্স, রিপেয়ারিং ও ওভারহলিং (এমআরও) ইউনিটের সফল কার্যক্রমের স্বীকৃতি স্বরূপ এই ইউনিটকে চীনের জিলিন এয়ারক্রাফট মেইন্টেন্যান্স কোম্পানী লিঃ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ওভারহল ইউনিট হিসেবে সনদপত্র প্রদান করেছে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে এ উপলক্ষে আজ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ একথা জানানো হয়েছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, পূর্বে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যুদ্ধ বিমান ওভারহল এর কোন ফ্যাক্টরী ছিলনা, যার জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর চীনের তৈরী বিমানগুলোকে ওভারহলিং এর জন্য সুদূর চীনে পাঠাতে হতো। এতে করে একদিকে যেমন অনেক সময়ের প্রয়োজন হতো, তেমনিভাবে প্রয়োজন হতো প্রচুর অর্থের। এখন দেশে ওভারহলিং-এর মাধ্যমে সময় ক্ষেপণ রোধের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব হচ্ছে। অপারেশনাল সক্ষমতার ক্ষেত্রেও এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। ২১৪ এমআরও ইউনিট এর এই সফলতাকে বিবেচনায় নিয়ে কারিগরি সহায়তা প্রদানকারী চীনের জিলিন এয়ারক্রাফট মেইন্টেন্যান্স কোম্পানী লিঃ ২১৪ এমআরও ইউনিটকে স্বীকৃতিস্বরূপ ওভারহল ইউনিট হিসেবে এই সনদপত্র প্রদান করে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর স্থাপিত হয় বঙ্গবন্ধু এ্যারোনটিক্যাল সেন্টার (বিএসি)।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু এ্যারোনটিক্যাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়। বঙ্গবন্ধু এ্যারোনটিক্যাল সেন্টারের অর্ন্তগত ২১৪ এমআরও ইউনিটও একই সাথে কার্যক্রম শুরু করে। চীনের প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের (ওইএম) সার্বিক তত্ত্বাবধানে জিলিন এয়ারক্রাফট মেইন্টেন্যান্স কোম্পানী লিমিটেডের সার্বিক সহযোগিতায় এই ইউনিট প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিমান বাহিনীর প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানগণ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে বিমান ওভারহল করতে সক্ষম। বিমান বাহিনীর নিজস্ব টেকনিশিয়ান কর্তৃক সফলভাবে ওভারহল করে প্রথম বিমানটি হস্তান্তর করা হয় ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। বর্তমানে আরো ৩ টি বিমান, বিমান বাহিনীর নিজস্ব টেকনিশিয়ান কর্তৃক ওভারহল কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে ২১৪ এমআরও ইউনিটকে সনদপত্র অর্জনের জন্য অভিনন্দন জানান। সহযোগিতার জন্য তিনি চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নপূরণে এই ২১৪ এমআরও ইউনিট ভবিষ্যতে বিমান প্রস্তুত করতে সক্ষম হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ২১৪ এমআরওইউ ওভারহলিং ইউনিট হিসেবে সনদপত্র পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সেই সাথে ভবিষ্যতে বিমান বাহিনীর অপারেশনাল কার্যক্রম আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত সেনা ও নৌবাহিনী প্রধান, সাবেক বিমান বাহিনী প্রধানগণ, বিমান বাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ, চীনা দূতাবাসের প্রতিনিধিগণ এবং অন্যান্য সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
Tag: others
No comments: