যুদ্ধাপরাধের দায়ে নেত্রকোনার দুই রাজাকারের ফাঁসির আদেশ
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নেত্রকোনার দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই দুজন হলেন মো. হেদায়েতুল্লাহ ওরফে আঞ্জু বিএসসি ও সোহরাব ফকির ওরফে সোহরাব আলী ওরফে ছোরাপ আলী। এর মধ্যে আঞ্জু পলাতক আর সোহরাব জেলে আছেন।
আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। গতকাল মঙ্গলবার এ মামলা রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
মোট ছয়টি অভিযোগের মধ্যে ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগের কারণে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১, ৫ ও ৬ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বেলা ১১টার দিকে ২০৮ পৃষ্ঠার রায় ঘোষণা শুরু করা হয়। বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে রায় পড়া শেষ হয়।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রসিকিউটার মোখলেছুর রহমান বাদল।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম বলেন, রায়ে ন্যায়বিচার বঞ্চিত করা হয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়ার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ওই সময় আসামি ছিলেন তিনজন। তাঁরা হলেন শান্তি কমিটির সদস্য হেদায়েতুল্লাহ ওরফে আঞ্জু বিএসসি (৮০), রাজাকার এনায়েত উল্লাহ ওরফে মঞ্জু (৭০), রাজাকার সোহরাব ফকির ওরফে সোহরাব আলী ওরফে ছোরাপ আলী (৮৮)। তিনজনের বাড়িই নেত্রকোনার আটপাড়া থানার কুলশ্রীতে। তবে আঞ্জু থাকেন রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার হেতেম খাঁ মেথরপাড়ায়। অন্যদিকে, ছোরাপের বসবাস ছিল একই নেত্রকোনার মদন থানার জাহাঙ্গীরপুরে।
২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এনায়েত উল্লাহ ওরফে মঞ্জু। হেদায়েতুল্লাহ ওরফে আঞ্জু বিএসসি ও এনায়েত উল্লাহ ওরফে মঞ্জু আপন দুই ভাই। এর আগে গত ৭ মার্চ মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।
২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান। জানা যায়, ৪০ জনের সাক্ষ্যে তাঁদের বিরুদ্ধে আটক অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, গণহত্যা এবং দেশত্যাগে বাধ্য করার মতো অপরাধের সন্ধান পাওয়া গেছে। নেত্রকোনার আটপাড়া থানার মধুয়াখারী গ্রাম, মোবারকপুর গ্রাম, সুখারী গ্রাম এবং মদন থানার মদন গ্রামে তাঁরা এসব অপরাধ করেছেন। এসবের ভিত্তিতে এই তিন আসামির বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
No comments: