অহরহ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ‘বিএসএফ’-এর হাতে প্রাণ দিতে হয় বাংলাদেশের সীমান্তের গ্রামের মানুষদের। এবার নিজ দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি সদস্যদের এলোপাতাড়ি গুলিতে মরে সীমান্তে জন্ম নেয়াই অপরাধ- এ কথাটি প্রতিষ্ঠিত করে গেলো দেশের উত্তরের ঠাকুরগাঁওয়ের তাজা তিনটি প্রাণ।
তবে চোরাচালানীর অপবাদ নিয়ে এ মৃত্যু মেনে নিতে রাজি নন নিহতদের আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী। তারা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
চোরাপথে সীমান্ত পার করে আনা গরু দাবি করে বেতনা বিওপির ১০ কিলোমিটার ভেতরের বহরমপুর গ্রামের মানুষের গরু কেড়ে নেয়ার সময় প্রতিবাদী মানুষের ওপর নির্বিচার গুলিবর্ষণ করে বিজিবি। এতে নিহত তিনজনের একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র, একজন শিক্ষক আরেকজন গা-গতরে খাটা কৃষক।
কিন্তু নির্দয় হত্যাকাণ্ডের পর তাদের সবাইকে চোরাকারবারি বলে প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে। তবে এই অপবাদ মেনে নিতে রাজী নন নিহতদের আত্মীয়-অনাত্মীয়রা।
১০ কিলোমিটার দূরের গ্রামে চোরাচালানের গরু ধরতে এসে বিজিবি সদস্যরা প্রমাণ করেছেন গরুগুলো সীমান্ত অতিক্রম করে আসে তাদেরই ব্যর্থতায়। নিজেদের দায় নিরীহ গ্রামবাসীর ঘাড়ে চাপানোর এই চেষ্টা দু:খজনক বলে মনে করেন সীমান্ত গ্রামের মানুষেরা।
ঘটনার দু’দিন পরও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো হতাহতদের চোরাকারবারী হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করছে বিজিবি। এ নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা না বললেও ফোনে এমন কথাই বলেন বিজিবি কর্মকর্তা।
৫০ বিজিবি পরিচালক লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, আমরা সব কিছু যাচাই করছি। কেউ যদি দোষী হয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। যে আক্রমণটা পুরো পরিকল্পিত।'
অবশ্য স্থানীয় সংসদ সদস্য কাউকে রামরাজত্ব কায়েম করতে দেয়া হবে না উল্লেখ করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসের বাণী শোনান।
ঠাকুরগাঁও-২ সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. দবিরুল ইসলাম বলেন, 'যারা অতি উৎসাহী হয়ে গ্রামবাসীর ওপর যে আক্রমণ করা হয়েছে, আমি এ ঘটনার প্রতিবাদ করছি। আমি প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন।
গত মঙ্গলবার চোরাচালানের গরু সন্দেহে বিজিবি হাট লাগোয়া হুকুম হাজীর বাড়ি থেকে গরু নিয়ে যাবার সময় তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিজিবি গুলি বর্ষণ করলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
No comments: