Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » আবর্জনার জঞ্জালে দম আটকে মরছে এই শহর




পৃথিবীর বহু দেশ প্লাস্টিক বর্জ্য অন্যকে দিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচতে চাইছে। কিন্তু ব্যতিক্রম মালয়েশিয়া। এটিই এখন পৃথিবীর অন্যতম বড় প্লাস্টিক-বর্জ্য-আমদানীকারক দেশ। কিন্তু এসব বর্জ্যের খেসারত দিচ্ছে ছোট্ট শহর জেনজারোম। ১৭ হাজার টন প্লাস্টিকের জঞ্জালের নিচে চাপা পড়ে শহরটি এখন ধুঁকে-ধুঁকে মরছে। জেনজারোমের বাসিন্দা ড্যানিয়েল টেয়। গত গ্রীষ্ম থেকে জীবনটা তাদের নরক হয়ে গেছে। দরজা, জানালা সব কিছুর খিল এঁটে বন্ধ করে রাখলেও তাদের এখন আর প্রাণ খুলে শ্বাস নেওয়ার জো নেই। ঘড়ির কাটা মধ্যরাত স্পর্শ করার পর থেকেই রোজ রাতে বিদঘুটে কটু ঝাঁঝালো গন্ধ চারদিক থেকে ঢুকতে থাকে ঘরে। রাবার পোড়ার গন্ধে ফুসফুস দম খুঁজে পায় না। কাশির দমকে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয় তখন। অবৈধ প্লাস্টিক রিসাইক্লিং বা পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলোতে গোপনে চলে অব্যবহৃত প্লাস্টিক পোড়ানোর কাজ। এ কারণেই মানুষের যত বিড়ম্বনা। ২০১৭ সালে চীন প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে। কিন্তু এই সুযোগে বর্জ্য-বাণিজ্যের পুরোটা নিজেরা নিয়ন্ত্রণে নিতে এগিয়ে আসে মালয়েশিয়া। তখন ২০১৭ সালে, মাত্র এক বছরেই সাত মিলিয়ন অর্থাৎ ৭০ লাখ টন বর্জ্য নিজের দেশে আমদানি করেছে মালয়েশিয়া। এর পরের বছর ২০১৮ সারে জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসের মধ্যেই ছাড়িয়ে যায় এর আগের বছরের হিসাব। এই ক’মাসেই দেশটিতে প্রবেশ করে ৭৫ লাখ ৪০০ টন প্লাস্টিক। বিপুল পরিমাণ এই বর্জ্য শিল্পের অর্থনৈতিক মূল্য ৭৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। স্লো পয়জনিং বর্জ্যের অর্থমূল্য যেমন ব্যাপক, এর জন্য যে খেসারত দিয়ে চলেছেন জেনজারোমের বাসিন্দারা সেটিও বেশ ব্যাপক। সবজাতের প্লাস্টিক পুনরায় প্রক্রিয়াজত করা যায় না। কিন্তু অব্যবহৃত প্লাস্টিকগুলোকে প্রক্রিয়া মেনে ধ্বংস করতে হলে গাঁটের পয়সা খরচা করতে হবে। তাই নিজের টাকা বাঁচাতে গিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা গোপনে সে সব দূষিত প্লাস্টিক পুড়িয়ে দেয়। এর ফলে জেনজারোমের বাসিন্দা ড্যানিয়েল টেয়-এর মতই অন্যদেরও টিকে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। নগো কিউই হং বলছিলেন, কাশির দমকে কেমন করে তার বুক থেকে রক্ত বেরিয়েছে সেই কথা। দুর্গন্ধে ঘুম না আসায় রাতের পর রাত নির্ঘুম থাকায় শরীর কত ভেঙে পড়েছে সেই বিবরণও তিনি বিবিসির কাছে দিয়েছেন। আর নিজের ১১ বছর বয়সী ছেলের শারীরিক কষ্টের কথা তুলে ধরতে গিয়ে দুশ্চিন্তায় মুষড়ে পড়েছেন মিজ. বেরে টান। তার ছেলের হাত-পা, গলা, পেটসহ শরীরে বিভিন্ন অংশে প্রথমে র‍্যাশ বা লাল-লাল ফুসকুড়ি উঠেছে। তারপর সেগুলো থেকে চামড়া খুলে পড়েছে। হাত দিয়ে স্পর্শ করলে এই ঘাগুলোতে ব্যথা অুনভব করে তার সেই ছোট্ট সন্তান। মূলত বায়ু দূষণের কারণেই শিশুটির এই দশা বলে জানা যাচ্ছে। দুষিত বায়ু গ্রহণ করতে-করতে শিশুটির পুরো রেসপিরেটরি সিস্টেম বা শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ার উপরেই প্রভাব পড়েছে। পোড়া প্লাস্টিকের ধোঁয়ায় এমন উপাদান আছে যা ক্যানসারের কারণ হতে পারে, বলে উল্লেখ করেছেন সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কেমিকেল ও বায়ো-মলিকিউলার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক টং ইয়িনে ওয়াহ। একখানে বিতাড়িত হলে, আরেক খানে নয়া আস্তানা জেনজারোমে ইতোমধ্যেই ৩৩টি অবৈধ কারখানাকে নিষিদ্ধ করেছে মালয়েশিয়ার সরকার। ফলে, এখন প্লাস্টিক পোড়ানোর ধোঁয়া থেকে কিছুটা রেহাই পেয়েছে আর্ত এই শহর। কিন্তু গজিয়ে উঠা অস্থায়ী এ সব বন্ধ কারখানার ১৭ হাজার টন প্লাস্টিক এখনও উন্মুক্ত পড়ে আছে যত্রতত্র। আর এরচেয়ের বড় বিপদ হচ্ছে, এক জায়গা থেকে প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা বিতাড়িত করলে আবার অন্য একখানে গিয়ে ঠিকই আস্তানা গেঁড়ে বসে। বেশি করে অর্থ দেয় বলে কারখানা খোলার জন্য এই বর্জ্য-ব্যবসায়ীদের জায়গা পেতেও ঝামেলা হয় না। অধিক অর্থের আশায় মালিকেরা জায়গা দিয়ে দেয়। বিশ্বকে যে বার্তা দিচ্ছে জিনজোরাম জিনজোরামের ভয়াল চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে যে, প্লাস্টিক বর্জ্য পুন:প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষেত্রে একটা বড় রকমের গলদ রয়ে গেছে। তার উপরে যে সব প্লাস্টিক আমদানি করা হচ্ছে সেগুলোর কতখানি ভালো প্লাস্টিক আর কতটুকু দূষিত সেই হিসাব নেই। তাই বিশ্লেষকরা বলছেন, প্লাস্টিক বর্জ্যের মান নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি। নইলে পৃথিবীর যে কোনোখানেই হয়তো তৈরি হতে পারে আরেকটি জেনজারোম। সূত্র: বিবিসি






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply