সপ্তাহ খানেক আগের কথা। ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে নাস্তানাবুদ হয়েছে নিউজিল্যান্ড। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে কোনোরকম একটি ম্যাচ জিতে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা এড়িয়েছে। ম্যাচগুলো শুধু হারেইনি, রীতিমতো উড়ে গেছে। প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে, দ্বিতীয় ম্যাচে ৯০ রান, তৃতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে জয়ের পর শেষ ম্যাচে ৩২ রানে জিতে সিরিজ শেষ করেছে ভারত। কিন্তু সেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই কিনা প্রথম দুই ওয়ানডেতে রীতিমতো পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। কিন্তু কেন?
রহস্যের কিছুটা উন্মোচন হল নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের কথায়। ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮ উইকেটের ব্যবধানে বিশাল জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তিনি বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে সিরিজে হার থেকে ছেলেরা উপযুক্ত শিক্ষা নিয়েছে। আসলে এটিই ফ্যাক্টর। ওই ধরনের সিরিজ থেকে শিখতেই হবে। আমরা দারুণ পারফর্ম করেছি। সবাই নিজের দায়িত্বটা ভালোভাবে পালন করেছে।’
এছাড়া হোমভেন্যুর সুবিধাও এই সিরিজে একটু বেশি পাচ্ছেন বলে জানান উইলিয়ামসন।
‘আমরা হালকা মেঘাচ্ছন্ন কন্ডিশন পেয়েছি। উইকেট কিছুটা আমাদের পক্ষে ছিল। বাংলাদেশের শুরুর উইকেটগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
তামিম, লিটনদের যে উইকেটে ব্যাট করতে হাপিত্যেশ করতে দেখা গেছে সেখানেই কী সাবলীল ব্যাটিংটাই না করলেন মার্টিন গাপটিল। নেপিয়ারে প্রথম ওয়ানডেতে দারুণ সেঞ্চুরি (১১৭*) হাঁকিয়েছিলেন। ক্রাইস্টচার্চেও তার ব্যাট হাসল। ২৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ১১৮ রানের চকচকে ইনিংস খেলেন। যাতে ১০ ওভার হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা। ম্যাচ শেষে গাপটিল বেশ কয়েকবার বললেন, উইকেট নাকি ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালো ছিল। অথচ তামিম, মাহমদুল্লাহ, মুশফিকদের ব্যাটিং তো সে কথা বলে না।
গাপটিল বলেন, ‘আজ (শনিবার) নেপিয়ারের চেয়ে শুরুটা দ্রুত হয়েছিল। ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভালো উইকেট ছিল। আজ শুরুতেই তুলে মারা যাচ্ছিল, আমি সেটাই ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। বলের লাইনেই মারা যাচ্ছিল। খুব কম বলই থেমে এসেছে। ফলে বল খেলতে বেশি আত্মবিশ্বাস পাওয়া যাচ্ছিল। আমরা আজ ঝোড়ো শুরু পেয়েছি। এটাই ম্যাচ দ্রুত শেষ করায় ভূমিকা রেখেছে।’
সেভাবে দেখলে, টপ অর্ডারই ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। তামিম-লিটনরা যতটা ব্যর্থ গাপটিল-নিকোলস ঠিক ততটাই সফল। স্বাভাবিকভাবেই ওপেনারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অধিনায়ক উইলিয়ামসন। ‘গাপটিল অসাধারণ খেলেছে। ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। টানা দুটি সেঞ্চুরি প্রকৃত অর্থেই দুর্দান্ত। ছেলেরা তার সঙ্গে খেলেছে এবং জুটি গড়েছে। আমিও সোজা খেলতে চেয়েছি। ওকে ওর মতো খেলতে দিতে চেয়েছি। আমরা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম।’
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ডানেডিনে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে কিউইদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
No comments: