যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে অচলাবস্থা এড়াতে সীমান্ত নিরাপত্তা বিলের অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) উচ্চকক্ষ সিনেট এবং পরে প্রতিনিধি পরিষদে ভোটাভুটির মাধ্যমে বিলটি পাশ হয়। এতে ডেমোক্র্যাটরা সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে ১৪০ কোটি ডলার বরাদ্দ দিতে রাজি হয় যা ট্রাম্পের দাবিকৃত অর্থের তুলনায় অনেক কম।
এর আগে, দাবিকৃত অর্থের পুরোটাই বরাদ্দ পেতে, প্রয়োজনে জরুরি অবস্থা জারির হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। জবাবে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হলে তা সামলাতে প্রয়োজনীয় যেকোন পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দের বিল পাস করতে বৃহস্পতিবার ভোটাভুটি হয়। এতে কংগ্রেসে বিলের পক্ষে ৮৩ ও বিপক্ষে ১৬ ভোট পরে। এরপর প্রতিনিধি পরিষদে বিলের পক্ষে ৩০০ এবং বিপক্ষে ১২৮ ভোটের মাধ্যমে আইন প্রণেতারা বিলটি পাস করেন। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের সমঝোতার মাধ্যমে পাস হওয়া বিলটিতে প্রায় ১৪০ কোটি ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ করা এই অর্থ দিয়ে অতিরিক্ত ৮৮ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি সম্ভব হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিলটিতে সাক্ষর করলেই এখন তা আইনে পরিণত হবে। তবে প্রেসিডেন্ট বিলটিতে অনুমোদন দেবেন কিনা, এখনও তা নিয়ে সন্দিহান ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান, দুই পক্ষেরই সিনেটররা।
রিপাবলিকান জন এইচ রাদারফোর্ড বলেন, 'প্রেসিডেন্টের জন্য এটা কোন হার নয় বরং বিজয়। ডেমোক্র্যাটরা আমাদের কোনো অর্থই দিতে রাজি ছিল না। কিন্তু আমরা ১৪০ কোটি ডলার পাচ্ছি। প্রেসিডেন্ট এখন বিলে সই করলেই দেশ আর অচলাবস্থায় পড়বে না।'
ডেমোক্র্যাট দলের সিনেটর বলেন, 'দেশে অচলাবস্থা মানেই দুর্ভোগ। ট্রাম্প বলেছেন, সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের অর্থ তিনি মেক্সিকো থেকে আদায় করবেন। সেটা আদৌ সম্ভব না। সবকিছু জেনে বুঝেই সরকার সচল রাখতে আমরা বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছি। এখন বিলটি অনুমোদন পেলেই হয়।'
নতুন করে পাস হওয়া বিলটিতে সন্তুষ্ট নন ট্রাম্প। তিনি সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য ৫৭০ কোটি ডলার অর্থ চেয়েছিলেন যা বরাদ্দ হওয়া অর্থের তুলনায় অনেক বেশি। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স এক বিবৃতিতে জানান, সরকারের অচলাবস্থা ঠেকাতে সিনেটরদের আনা বিলে সই করতে প্রস্তুত ট্রাম্প। কিন্তু সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে প্রয়োজনীয় অর্থ আদায় করতে আবারও জরুরি অবস্থা জারির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, 'ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির উত্তরে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হলেও তা সামাল দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন তিনি।'
পেলোসি বলেন, 'সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারির মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। একেবারেই মানবিক দিক থেকে সেখানকার অবস্থা বিবেচনা করতে হবে। কিন্তু সবার আগে দেখতে হবে ট্রাম্প কি পদক্ষেপ নেন। প্রেসিডেন্ট যদি জরুরি অবস্থা জারি করেন, তবে আমরাও উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত আছি।'
অভিবাসন নীতি ও সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের বিষয়ে ট্রাম্পের মনোভাবের সঙ্গে বিরোধী দলীয় ডেমোক্র্যাটদের বিরোধের জেরে টানা ৩৫ দিন ইতিহাসের দীর্ঘতম অচলাবস্থার অবসান হলেও শুক্রবারের মধ্যে নতুন বিল অনুমোদন না পেলে আবারও অচলাবস্থায় পড়বে মার্কিন প্রশাসন।
No comments: