পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের বিনামূল্যের বই বিতরণ উৎসবে ভর্তি ফিসহ বিভিন্ন ধরনের ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আর এ চিত্র উপজেলার ২৭টি মাদরাসা এবং ৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সব কটিতেই। সন্তানদের ক্ষতির আশঙ্কায় শিক্ষকদের ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না সাধারণ অভিভাবকরা। এ চক্রের কাছে অসহায় হয়ে পরেছেন ওইসব অভিভাবকরা।
জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা বই বিতরণের দিন সেশন ফিসহ বিভিন্ন ফি আদায় শুরু করেন।
এ কারণে যেসব শিক্ষার্থীরা ওইসব ফির টাকা দিতে পারেনি তাদের বই দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে এক তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীরাই নতুন বই থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্টক দেখলেই বোঝা যায় কেন এখনও এক তৃতীয়াংশ বই বিতরণ করা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজের মতো করে এক ধরনের সেশন ফি আদায় করছে। ৫০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত সেশন ফিসহ ভর্তি বাবদ নেয়া হচ্ছে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে।
খেপুপাড়ার মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খেপুপাড়া নেছারউদ্দিন ফাজিল মাদরাসা অন্তত ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ফি বাবদ।
সন্তানের লেখাপড়ার কথা ভেবে অনেক দরিদ্র অভিভাবকরা ধার-দেনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করেই বই নিতে বাধ্য হয়েছেন।
এ ব্যাপারে মহিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস ছালাম জানান, নতুন ভর্তিসহ সেশনফি বাবদ ৫০০ টাকা নেন। তবে টাকার জন্য কোনও শিক্ষার্থীর বই বিতরণ বন্ধ রাখা হয়নি। তিনি এক হাজার ১৬০ সেট বই পেয়েছেন। এখনও অন্তত ৩৫০ সেট বই বিতরণ বাকি রয়েছে।
খেপুপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রহিম জানান, টাকার জন্য কোনও শিক্ষার্থীকে বই দেয়া বন্ধ ছিল না। তারা অন্যান্য চার্জসহ সেশনফি নেন ৭০০ টাকা। তার এখনও এক তৃতীয়াংশের বেশি (প্রায় পাঁচশ’ সেট) বই বিতরণ করা হয়নি। এমন চিত্র অধিকাংশ স্কুল-মাদরাসার।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। বই বিতরণে কেউ কোনও অনিয়ম করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
No comments: