চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী-জোহরের নামাজের পর গাংনী উপজেলার কুঞ্জ নগরে মসজিদের মাইকের ব্যাটারী চুরি !
চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী পাঠ্যপুস্তকে এই প্রবা...
জামাল খাসোগজির হত্যকাণ্ড সম্পর্কে আরেকটি নতুন ভাষ্য হাজির করেছে সৌদি আরব।
ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসের ভেতরেই যে জামাল খাসোগজি নিহত হয়েছেন তা স্বীকার করে নিয়ে গতকাল একটি বিবৃতি দিয়েছিল সৌদি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখন একজন উর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ সম্পর্কে যে সর্বশেষ ভাষ্য দিয়েছেন, তা আগের বিবৃতির সঙ্গে মিলছে না।
সৌদি আরবের আগের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, জামাল খাসোগজি সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পরপরই সেখানে উপস্থিত সৌদি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার ঘুষোঘুষি শুরু হয়। সেসময় পেছন থেকে গলার ওপর দিয়ে হাত দিয়ে জাপটে ধরে নিরস্ত করার সময় তিনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান।
কিন্তু উর্ধ্বতন একজন সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে যে ভাষ্য এখন জানিয়েছেন তা একটু ভিন্ন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তার বর্ণনা অনুযায়ী, যে পনের সদস্যের দল সৌদি আরব থেকে গিয়েছিল, তারা জামাল খাসোগজিকে ঔষধ দিয়ে অচেতন করে অপহরণের হুমকি দেয়। কিন্তু মিস্টার খাসোগজি তাতে বাধা দিলে তখন তাকে জাপট ধরলে তিনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান। এরপর এই সৌদি দলের একজন সদস্য জামাল খাসোগজির কাপড় খুলে তা পরেন এবং কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ভান করেন যেন মনে হয় জামাল খাসোগজি আসলেই বেরিয়ে গেছেন।
ছবির কপিরাইটEPAImage caption১৫ সদস্যের কথিত সৌদি দল। এত বড় দল কেন পাঠিয়েছিল সৌদি আরব?
উল্লেখ্য, এ নিয়ে জামাল খাসোগজির ঘটনা সম্পর্কে সৌদি ভাষ্য বেশ কয়েকবার পরিবর্তিত হলো।
সৌদি আরব প্রথমে জোর গলায় এই খবর অস্বীকার করেছিল যে কনস্যুলেটের ভেতর থেকে জামাল খাসোগজি নিখোঁজ হয়েছেন। তারা দাবি করেছিলেন মিস্টার খাসোগজি কনস্যুলেট ভবন থেকে বেরিয়ে যান।
ঘটনার ১৮ দিন পর সৌদি আরব স্বীকার করে যে জামাল খাসোগজি কনস্যুলেটের ভেতরেই মারা যান।
অপহরণের পরিকল্পনা
উর্ধ্বতন এক সৌদি কর্মকর্তা এখন এই ঘটনা সম্পর্কে এখন যে সর্বশেষ ভাষ্য দিচ্ছেন তা এরকম:
ছবির কপিরাইটOZAN KOSEImage captionকনস্যুলেটের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন জামাল খাসোগজির তুর্কি বান্ধবী হেতিস
"পনের সদস্যের সৌদি দলটি ইস্তাম্বুলে এসেছিল জামাল খাসোগজিকে অপহরণের উদ্দেশ্যে। তারা মিস্টার খাসোগজিকে কনস্যুলেট থেকে তুলে নিয়ে ইস্তাম্বুলের বাইরে একটি 'সেফ হাউজে' আটকে রাখবেন এমনই পরিকল্পনা ছিল। মিস্টার খাসোগজি যদি সৌদি আরবে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানান, তখন তাকে ছেড়ে দেয়ার কথা ছিল।"
"কিন্তু শুরু থেকে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে শুরু করে। কারণ তারা উপরের নির্দেশ অমান্য করে গায়ের জোর খাটাতে শুরু করে। কনস্যুলেটে ঢোকার পর জামাল খাসোগজিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কনসাল জেনারেলের কক্ষে। সেখানে মাহের মুতরেব নামে একজন তার সঙ্গে কথা বলেন এবং তাকে সৌদি আরবে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। মিস্টার খাসোগজি এতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি মাহের মুতরেবকে বলেন, তার প্রেমিকা বাইরে অপেক্ষা করছেন এবং এক ঘন্টার মধ্যে যদি তিনি ফিরে না আসেন তাহলে তুর্কি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলে এসেছেন তাকে।"
"কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মাহের মুতরেব যখন অপহরণের হুমকি দেন, তখন জামাল খাসোগজি তার গলা চড়াতে থাকেন। তখন সৌদি দলটি আতংকিত হয়ে তাকে থামানোর চেষ্টা করেন। তাকে জাপটে ধরা হয়, তার মুখের ওপর হাত চেপে ধরে চিৎকার বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। তখন তিনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান। তাকে মেরে ফেলার কোন ইচ্ছে ছিল না।"
ছবির কপিরাইটGETTY IMAGESImage captionগাড়িতে করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে জামাল খাসোগজির দেহাবশেষ?
"এরপর জামাল খাসোগজির কাপড়, সানগ্লাস, অ্যাপল ওয়াচ খুলে তা পরেন মুস্তাফা মাদানি। কনস্যুলেটের পেছনের দরোজা দিয়ে তিনি এমনভাবে বের হন, যেন মনে হয় যে জামাল খাসোগজিই কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গেছেন।"
মৃতদেহ কোথায়
ঘটনা যদি এটাই হয়ে থাকে তাহলে জামাল খাসোগজির মৃতদেহ কোথায়?
এই সৌদি কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, ঘটনার পর জামাল খাসোগজির মৃতদেহ একটি কম্বলে মুড়িয়ে কনস্যুলেটের একটি গাড়িতে তোলা হয়। এরপর একজন 'স্থানীয় সহযোগী'কে দায়িত্ব দেয়া হয় এই মৃতদেহ গুম করার। আর সৌদি দলের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ সালাহ তুবাইগি এই ঘটনার সমস্ত চিহ্ন মুছে ফেলার কাজ শুরু করেন।
তুরস্কের কর্মকর্তাদের সন্দেহ জামাল খাসোগজির দেহাবশেষ হয়তো ইস্তাম্বুলের কাছের বেলগ্রাড জঙ্গলে ফেলে দেয়া হয়েছে। এটি খুঁজে পেলে অনেক রহস্যের জট খুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বড় প্রশ্ন
ছবির কপিরাইটGETTY IMAGESImage captionএই পরিকল্পনা সম্পর্কে কতটা জানতেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান?
জামাল খাসোগজিকে সৌদি আরবে ফিরে যেতে রাজী করানোই যদি এই পুরো মিশনটির উদ্দেশ্য হয়ে থাকবে, তাহলে সেই দলে কেন এত এত সামরিক কর্মকর্তা আর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
ঘটনার ব্যাপারে সৌদি ভাষ্য কেন বার বার বদলে যাচ্ছেও, সেটাও একটা বড় প্রশ্ন।
এসব প্রশ্নের কোন বিশ্বাসযোগ্য উত্তর অবশ্য এই সৌদি কর্মকর্তার ভাষ্যে নেই।
যেটি স্পষ্ট, তা হলো এই ঘটনা সৌদি আরবকে পুরো বিশ্বের সামনে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
জামাল খাসোগজির ঘটনা সৌদি রাজপরিবারের জন্য এক বিরাট সংকটে পরিণত হয়েছে।
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
No comments: