দেশের বিরুদ্ধে গেলেই ঠাঁই হবে গোপন কুঠুরিতে৷ আরও একবার সরকারি কর্মীদের মধ্যে জিইয়ে দেওয়া হল কুঠুরি আতঙ্ক৷ তবে, সরাসরি নয়, পরোক্ষ ভাবেই৷ সরকারি আধিকারিকদের জন্য একটি সংশোধিত নিয়মাবলী প্রকাশ করল চিনের শাসক দল- কমিউনিস্ট পার্টি। যার বক্তব্য, সরকারি কর্মীদের আচরণ, রাজনৈতিক গুজব ছড়ানোর বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নেবে দল। পাশাপাশি ধর্মীয় বিশ্বাসে আস্থা রাখতে চাইলে ছাড়তে হবে দলের সদস্যপদ৷
প্রেসিডেন্ট জি জিংপিনের নের্তৃত্বে কড়া এই কড়া বার্তা চিনা সরকারি কর্মীদের জন্য৷ যা অনেকটাই ফরমান জারির মতই৷ গোপনীয়তা রক্ষা করা দেশ চিন লিখিত ভাবেই দেশের সরকারি কর্মীদের বাক স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে নিল বলে মনে করা হচ্ছে৷ জিংপিন দাবি করছেন, দলের শিকড়গত দুর্নীতিকে উচ্ছেদ করার জন্য অবিরাম লড়াই করে চলেছেন তিনি। যে কারণে দলের অন্য নেতাদের সঙ্গেও তাঁর দূরত্ব বাড়ছে৷
তিনি মনে করেন, তাঁর সমসাময়িক অন্য নেতাদের চেয়ে তিনি বেশী প্রভাবশালী, তিনি প্রেসিডেন্ট৷ যা মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই৷ সেই কারণে নিয়মানুবর্তী ও নৈতিকতার উপর প্রভাব পড়ছে৷ যা ঠেকাতেই মুখ বন্ধের এই নির্দেশনামা৷
রবিবার সেন্ট্রাল কমিশন ফর ডিসিপ্লিন ইন্সপেকশন সংশোধিত নিয়মাবলী প্রকাশিত হয়। বলা হয়, আইনভঙ্গের অভিযোগে দলের সদস্যরা যুক্ত থাকলে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। দলের মধ্যমণি হিসেবে জি জিংপিন -এর নাম সংশোধিত নিয়মাবলীতেও রাখা হয়েছে। প্রসঙ্গত জি জিনপিং-এর নাম দল ও দেশের সংবিধানে রয়েছে।
নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় নীতি বা সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্য সদস্যরা মন্তব্য করতে পারবেননা। পাশাপাশি দলের ঐক্য নষ্ট করার জন্য কেউ গুজব ছড়াতে পারবেননা। জনগণ তাদের এই ক্ষমতা দিয়েছে, একথা তাদের মাথায় রাখতে হবে। নিজেদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কেউ দলকে ব্যবহার করতে পারবেন না।
পাশাপাশি নতুন নিয়মাবলীর একটি অধ্যায়ে বলা হয়েছে, দেশের সংবিধানে ধর্মের স্বাধীনতা দিলেও দল যেহেতু নাস্তিক সেই নিয়মই মানতে হবে দলের সদস্যদের। অন্যথায় ছাড়তে হবে দল। উস্কানিমূলক ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে, সেকথাও স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সংশোধনী নিয়মাবলীতে৷ দেশের ইতিহাসকে ক্ষতিগ্রস্ত করলে তার কঠোর শাস্তি পেতে হবে বলে নির্দেশ জারি হয়েছে৷ চিনের কাছে তাদের ইতিহাস একটি অতি স্পর্শকাতর বিষয়।
প্রসঙ্গত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান কে হারায় চিন। এই গৌরবের ইতিহাসকে কলঙ্কিত বা ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হলে কাউকেই যে রেয়াত করা হবে না বলেও জানায় জিনিচিনের অভ্যন্তরীন রক্ষণশীলতা এখনও যে বর্তমান তা আরও একবার প্রমাণ হল এই সংশোধনী নিয়মাবলী প্রকাশে৷ সরকারের বিরুদ্ধে বলা তো দূর সরকারি কর্মীরা এই নিয়মের ফাঁদে কার্যত পুতুল নাগরিকে পরিণত৷
‘বিরুদ্ধে কথা বরদাস্ত নয়’-নির্দেশ জারি জিংপিনের
Tag: world
No comments: