সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। কেনা হয়েছে যন্ত্রপাতি। তারপরও চালু হয়নি কুড়িগ্রামের হ্যাচারিসহ আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারের কার্যক্রম। এর মধ্যে শেষ হয়ে গেছে প্রকল্পের মেয়াদ। হ্যাচারি চালু’র বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভেস্তে যেতে বসেছে দারিদ্রপীড়িত এ জেলায় আত্ম-কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টির সরকারি লক্ষ্য।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় কুড়িগ্রাম শহরের বাস টার্মিনালের পাশে ৩ একর জমিতে হ্যাচারিসহ আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার স্থাপনের কাজ ২০১৩ সালের জুনে শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের জুনে। কিন্তু তা হয়নি।
বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি প্রতি ২৮ দিনে ১৪ হাজার ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর সক্ষমতা সম্পন্ন হ্যাচারির যন্ত্রপাতি বসাতে সময় লেগেছে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। এ অবস্থায় প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় চালু হয়নি হ্যাচারি।
এখন ৩ হাজার ডিম পাড়া হাঁস রাখার শেডে বেইজিং, জিনডিং ও খাকি ক্যাম্বেল জাতের মাত্র ২৯২টি ডিম পাড়া এবং ১ হাজার ১৫৮টি বাড়ন্ত হাঁস নওগাঁ থেকে এনে পালন করা হচ্ছে। এই কার্যক্রমও যে কোন মুহূর্তে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে জেলার পাঁচ শতাধিক হাঁস পালনকারী ছোট বড় খামারি এখান থেকে কোন সুবিধাই পাচ্ছেন না।
হ্যাচারিসহ আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার তৃতীয় প্রকল্পের পাঁচ বছরের মেয়াদ চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ায় নিয়োগকৃত ১২ জনবল আর নেই। বন্ধ হয়ে যাওয়া মোরগ-মুরগী পালন কেন্দ্রের ৪ কর্মচারী এখন খামারটি দেখাশুনা করছেন।
দারিদ্রপীড়িত এই জেলার মানুষের নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টির লক্ষ্যে দ্রুত হ্যাচারিটি চালু করা প্রয়োজন বলে জানালেন কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেদওয়ানুল হক দুলাল।
তিনি বলেন, 'এই খামারটি চালু করার খুবই জরুরি। এটি দ্রুত চালু করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।'
এদিকে বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজ, পানিতে আয়রনের পরিমাণ বেশি এবং বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকার পাশাপাশি জনবল সংকটে হ্যাচারি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানালেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হাই সরকার।
তিনি বলেন, 'আমরা এই সমস্যাগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমাদের এই সমস্যাগুলোর সমাধান হলে আমাদের হ্যাচারিটা চালু করা সম্ভব হবে।'
একই জায়গায় ১৯৮৬ সালে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় মোরগ-মুরগি পালন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিল। এই কেন্দ্রে কোটি টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছিল হ্যাচারি। তিন দফায় সংস্কার ও মেরামত কাজে ব্যয় করা হয়েছে অর্ধ কোটি টাকা। তারপরও এই হ্যাচারিও একদিনের জন্য চালু হয়নি। এ অবস্থায় ২০১০ সালে পালন কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই শেষ প্রকল্পের মেয়াদ
Tag: others
No comments: