Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » 'জিতলে আমি জার্মান, হারলে বিদেশি': -- ফুটবলার মেসুত ওজিল





'জিতলে আমি জার্মান, হারলে বিদেশি': জার্মানিতে বর্ণবাদের অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর তুর্কী বংশোদ্ভূত ফুটবলার মেসুত ওজিলের

জার্মানিতে 'বর্ণবাদ এবং অসম্মানের' শিকার হয়েছেন এই অভিযোগ তুলে তুর্কী বংশোদ্ভূত জার্মান ফুটবলার মেসুত ওজিল আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।

লন্ডনে গত মে মাসের এক অনুষ্ঠানে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সাথে ছবি তোলার পর জার্মানিতে তীব্র সমালোচনা হয় ইংলিশ ফুটবল ক্লাব আর্সেনালের ২৯ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার।

েসুত ওজিল বলেছেন, একারণে অনেকে তাকে হুমকি ধামকি দিয়েছেন, তার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে তাকে অনেকে ইমেইল করেছেন এবং রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের শুরুতেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার জন্যে তাকে দায়ী করেছেন।

"আমরা যখন জিতি তখন আমি জার্মান, কিন্তু যখন হেরে যাই তখন একজন বিদেশি," বলেন ওজিল। ওজিলের এই অভিযোগের জবাবে জার্মান ফুটবল প্রধানের কাছ থেকে এখনও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মেসুত ওজিলের জন্ম জার্মানির গেলজেনকিরশেনে। তিনি তুর্কী বংশোদ্ভূত তৃতীয় প্রজন্মের জার্মান নাগরিক। ২০১৪ সালে জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

জার্মানির হয়ে ৯২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ওজিল। জার্মান ফুটবল ভক্তদের ভোটে ২০১১ সালের পর থেকে মোট পাঁচবার তিনি বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন।

কিন্তু ওজিল বলছেন, সম্প্রতি তার প্রতি যে ধরনের আচরণ করা হয়েছে তাতে তিনি "জার্মান জাতীয় দলের শার্ট পরতে আর আগ্রহী নন।"

সোশাল মিডিয়াতে লম্বা একটি বিবৃতি দিয়েছেন মেসুত ওজিল যাতে তিনি বলেছেন, জার্মানিতে সরকারকে কর দেওয়া, ভালো কাজের জন্যে দান করা এবং বিশ্বকাপ জয়ের অংশীদার হওয়ার পরেও তার মনে হচ্ছে যে জার্মান সমাজ তাকে গ্রহণ করে নিতে পারছে না।

তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সাথে ছবি তোলার পর তাকে যারা সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে জার্মান ফুটবল এসোসিয়েশন ডিএফবিও।

ওজিল লিখেছেন, "সাম্প্রতিক এসব ঘটনাবলীর কথা বিবেচনা করে আমাকে অত্যন্ত দুঃখের সাথে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এটা খুবই কষ্টের যে জার্মানির হয়ে আমি আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবো না। এরকম বর্ণবিদ্বেষ এবং অসম্মান নিয়ে আমি জার্মানির হয়ে খেলতেও পারবো না।"

"খুব গর্ব আর আনন্দ নিয়ে আমি জার্মান জার্সি পরতাম। কিন্তু এখন আর সেরকম নয়। আমার নিজেকে এখানে অনাকাঙ্খিত মনে হয়। আমার মনে হয়, ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে আমার অভিষেক হওয়ার পর থেকে আমি যা কিছু অর্জন করেছি সেসব মানুষ ভুলে গেছে," লিখেছেন তিনি।

২০১৪ সালে জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন মেসুত ওজিল।


তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সাথে ওজিলের দেখা হয়েছিল গত মে মাসে লন্ডনের একটি অনুষ্ঠানে। তার সাথে ছিলেন আরো একজন জার্মান ফুটবলার ইলকে গুনদোগান। তিনিও তুর্কী বংশোদ্ভূত। খেলেন ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে।

ওজিল বলেছেন, সেদিনের সেই অনুষ্ঠানে তিনি ও গুনদোগান মিলে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সাথে ফুটবল নিয়ে কথা বলেছিলেন। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে আর্সেনালের একটি জার্সিও এসময় উপহার দিয়েছিলেন তিনি।

পরে তুরস্কের ক্ষমতাসীন দল একে পার্টি নির্বাচনের আগে ছবিটি প্রকাশ করে। নির্বাচনে মি. এরদোয়ান আবারও জয়ী হয়েছেন।

এই ছবিটি গণমাধ্যমে আসার পর জার্মান গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি ওজিল এবং গুনদোগানের আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক জার্মান রাজনীতিক।

তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সরকার যেভাবে বিরোধী রাজনীতিকদের দমনপীড়ন করছে তার তীব্র সমালোচনা করেছে জার্মানি।

অনেকে অভিযোগ করেছেন, এই ছবি তুলে কার্যত ওজিল নির্বাচনে মি. এরদোয়ানকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।

তবে মেসুত ওজিল বলেছেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ানের সাথে তার ছবি তোলার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। তার পূর্বপুরুষের দেশের প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা না করলে তাকে অসম্মান করা হতো বলে মনে করেন তিনি।

"এটা রাজনীতি কিংবা নির্বাচনের বিষয় ছিল না। এটা ছিল আমার পরিবার যে দেশ থেকে এসেছে সেই দেশের প্রেসিডেন্টকে সম্মান জানানো," বলেন তিনি।

জার্মানিতে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ তুর্কী বংশোদ্ভূত যা প্রায়ই দেশটির রাজনৈতিক বিতর্কে ইস্যু হয়ে উঠে। দেশটিতে অভিবাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে জার্মানিতে দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

ওজিল তার বিবৃতিতে প্রশ্ন তুলেছেন, জার্মান দলে তার মতো আরো অনেকেই আছেন যাদের সাথে জার্মানি ছাড়াও অন্য আরেকটি দেশের যোগাযোগ আছে, তাদের বেলাতে সেরকম আচরণ করা হয়নি কেন?

"এটা কি একারণে যে দেশটি তুরস্ক? এটা কি একারণে যে আমি একজন মুসলমান? আমার মনে হয় এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় আছে," বলেন তিনি।

জার্মানির বিচারমন্ত্রী কাটারিনা বার্লি বলেছেন, মেসুত ওজিলের মতো এতো বড় একজন ফুটবলারের মনে যদি এই ধারণা তৈরি হয় যে তিনি এই দেশে কাঙ্খিত নন তাহলে এটা খুব উদ্বেগজনক।"

জার্মানির ফুটবল সাংবাদিক রাফায়েল হনিগস্টেইন বলেছেন, এটা জার্মান ফুটবলের জন্যে একটি দুঃখজনক দিন। তিনি বলেন, জার্মান ফুটবল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তার যেধরনের সমর্থন পাওয়ার কথা ছিল সেটা তিনি পান নি।







«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply