সুমন/রিপন/ খোকন//
গাংনী উপজেলার
৫০টি গ্রামে পাতিহাঁস, রাজহাঁস পালনে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এরা অবদান রেখে চলেছে
গৃহিণীদের হাঁস পালনে আগ্রহ বেড়েছে মেহেরপুরেগাংনীতে ডিম ও গোশতের চাহিদা মেটাতে গৃহিণীদের মধ্যে পাতি হাঁস ও রাজ হাঁস পালনে আগ্রহ বেড়েছে। উপরন্তু ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ এমনকি পরিবারের টুকিটাকি খরচের যোগান দিতেও এখন গরু-ছাগল পালনের পাশাপাশি হাঁস পালনে তৎপরতা বেড়েছে। আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এরা অবদান রেখে চলেছে।
গাংনী উপজেলার চেংগাড়া, বানিয়াপুকুর, গোপালনগর, সাহারবাটি, ভাটপাড়া, নওপাড়া, ষোলটাকাসহ প্রায় ৫০টি গ্রামে পাতিহাঁস, রাজহাঁস পালন চোখে পড়া মতো। উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীর পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে এবং যেসব এলাকায় পুকুর খাল ডোবা রয়েছে সেসব এলাকায় নারীরা ডিম এবং গোশতের চাহিদা মিটিয়ে হাতখরচ যোগাড় এমনকি স্বামী সংসারে সহযোগিতা করতে রাজহাঁস পালন করে ভূমিকা রাখছে।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার অফিস, বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান পরিবারে স্বাচ্ছন্দ আনতে গরু-ছাগল পালনের পাশাপাশি হাঁস পালনে উদ্বুদ্ধ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রামের নারীরা সংসারে দু’পয়সা যোগান দিতে হাঁস পালন করছেন।পাতিহাঁস আকারে ছোট কিন্তু রাজহাঁস বেশ বড়।
গৃহিণীদের হাঁস পালনে আগ্রহ বেড়েছে মেহেরপুরেপাতিহাঁসের সাধারণত ২ থেকে আড়াই কেজি গোশত হয়। পক্ষান্তরে রাজহাঁসের ৪ থেকে ৬ কেজি গোশত হয়ে থাকে। বিভিন্ন গ্রাম ও হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাতিহাঁসের বাজারমূল্য ৩শ টাকা থেকে ৫শ টাকা। অন্যদিকে রাজহাঁসের বাজার মূল্য ৮শ টাকা থেকে ১২শ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাশাপাশি পাতিহাঁসের ডিমের দাম ৮ থেকে ১০ টাকা অন্যদিকে রাজহাঁসের ডিমের দাম ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা।
চেংগাড়া গ্রামের ছামেদ আলী, রিপন, মিকলাস, তোফাজ্জেল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, সাইফুল ইসলামের স্ত্রীরা সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে চেংগাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বের (রাস্তার পাশে) জমিতে সবুজ ঘাসের উপর বসে রাজহাঁসের বিভিন্ন বয়সী বাচ্চাদের কচি ঘাস খাওয়াচ্ছেন।রাজহাঁস পালনে বাড়তি খাবার ক্রয় করতে হয়না। এসব ছোট বাচ্চা ঘাস, কপির পাতা, খুদ, চালেরগুড়া, চেলটি, ভাত ইত্যাদি খেয়ে থাকে।
গৃহিণীদের হাঁস পালনে আগ্রহ বেড়েছে মেহেরপুরেসালমা খাতুন জানায়, রাজহাঁসের একজোড়া বাচ্চার দাম ৪শ টাকা। বছরে ভালোভাবে লালনপালন করলে ১০/১২টি ডিম দেয়। জরিনা খাতুন জানায়, বাড়িতে হাস-মুরগী, গরু ছাগল না থাকলে শূন্য শূন্য মনে হয়। হাঁস মুরগি পালন করে আমরা ডিমের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করে স্বামীর সংসারে খরচের যোগান দিতে পারি। এমনকি ছেলে মেয়েদের লেখাড়ার খরচ, ছোটখাটো বাইনা পূরণ করতে পারি।
তারা আরও জানায়, আমরা অর্থের অভাবে ফার্ম তৈরি করে হাঁস পালন করতে পারি না। অনেকে সখের বশে রাজহাঁস পালন করে থাকি। রাজ হাঁস দেখতে খুব সুন্দর। সাদা, বাদামী ও ছাই বর্ণের রাজহাঁস প্রায়শঃ দেখা যায়। রাজহাঁসের ডাক শূনতে খুব ভালো লাগে। সন্ধ্যায় যখন বাড়ি ফিরে তখন উচ্চ স্বরে প্যাক প্যাক পাড়া মাতিয়ে তোলে।
গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রফিকুল ইসলাম জানান, গাংনী উপজেলায় হাঁস এর তেমন খামার গড়ে ওঠেনি। সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নদী, পুকুর ও খাল বিল রয়েছে এমন এলাকায় অনেকেই ৫/১০টি রাজহাঁস পালন করে থাকে। প্রাণিসম্পদ অফিসের পরামর্শে উপজেলার অনেক গ্রামে রাজহাঁস পালনে আগ্রহ বেড়েছে।
No comments: