ব্রিটিশ নাগরিক মানবদরদী লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট অবশেষে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পেলেন
ব্রিটিশ নাগরিক লুসি পেলেন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব
ব্রিটিশ নাগরিক মানবদরদী লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট অবশেষে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পেলেন। এই দেশের জন্য তাঁর অমিত ভালোবাসা এবং মানবতার সেবায় নিবেদিত থাকার জন্য বাংলাদেশ সরকার ৮৭ বছর বয়সী লুসি হেলেনকে নাগরিকত্ব প্রদান করে সম্মানে ভূষিত করেছে। লুসি হেলেন ৫৭ বছর ধরে বাংলাদেশে বসবাস করে আসছেন।
আজ বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লুসি হেলেনের কাছে নাগরিকত্বের সনদ হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং শেখ রেহানা উভয়ই ৮৭ বছর বয়স্ক মানবতাবাদী লুসি হেলেনের সঙ্গে কথা বলেন। লুসি বর্তমানে বরিশাল নগরীর অক্সফোর্ড মিশনে কর্মরত রয়েছেন।
পিতা জন হল্ট এবং মা ফ্রান্সিস হল্টের কন্যা লুসির জন্ম ব্রিটিশ শহর সেন্ট হেলেন্সে ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর। কোল হিলস জুনিয়র স্কুলের শিক্ষকতা থেকে বিদায় নেয়ার পরে মাত্র ১৯ বছর বয়সে মানবতার সেবায় অনুপ্রাণিত হন এবং নার্সিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।লুসি হেলেন শৈশবের পর থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেছিলেন।
মানবতার সেবার অঙ্গীকার নিয়ে তিনি ১৯৬০ সালে বাংলাদেশে আসেন। ওই বছরেই লুসি হেলেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে যোগদান করেন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়াতে শুরু করেন। এরপরে তিনি আর নিজের দেশে ফেরেননি এবং এই দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি ভালোবাসার আকর্ষণে বাংলাদেশেই অবস্থান করেন।
পরে তিনি যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে ৫৭ বছর ধরে কাজ করেছেন। ২০০৪ সালে তিনি অবসনে যান এবং ওই বছরেই বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে ফিরে যান।
অবসর জীবনে লুসি এখন দুস্থ শিশুদের ইংরেজি শেখাচ্ছেন এবং মানসিক বিকাশে সহায়তা করছেন। পাশাপাশি লুসি দুস্থ শিশুদের জন্য সম্পদশালী লোকদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করছেন। অকৃতদার লুসি হেলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রেখেছেন। নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে যুদ্ধকালে তিনি যুদ্ধাহত লোকদের সেবা করেছেন। এ সময় লুসি যশোর ক্যাথোলিক চার্চে কাজ করছিলেন, সেখানে তিনি শিশুদের ইংরেজি শেখাতেন।
No comments: