দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদান প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
: দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিতে সব হাসপাতাল ও ক্লিনিককে নির্দেশনা দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
দুটি ঘটনার প্রকাশিত খবর সংযুক্ত করে গতকাল রোববার মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)-এর পক্ষে আইনজীবী ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী ও মাহবুবুল ইসলাম হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
রিটকারীর আইনজীবী বলেন, রুলে- খুলনার ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম ও গ্রিন লাইফ হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কর্মী হেলেনা বেগমের জীবন রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং যে কোনো দুর্ঘটনায় আহত যে কোনো রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে দেশের সব হাসপাতাল ও ক্লিনিকের প্রতি নির্দেশনা জারি করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- সংশ্লিষ্টদের তার কারণ জানাতে বলা হয়। এছাড়াও ভিকটিম মো. ইব্রাহিমের পরিবারকে দশ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে সালাহউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতালকে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য সচিব, আইজিপি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের মহাপরিচালক (ডিজি), ডিএমপি কমিশনার, গেন্ডারিয়া, যাত্রাবাড়ি, ধানমন্ডি, ওয়ারি থানার ওসি ও সালাহউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতালকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জাবাব দিতে বলা হয়েছে।
এডভোকেট মনজিল মোরশেদ বলেন, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বেঁচে থাকার অধিকার হল মানুষের মৌলিক অধিকার। সুতরাং দুর্ঘটনায় বা ছিনতাইয়ে কেউ আহত হয়ে নিকটস্থ হাসপাতালে গেলে সে হাসপাতাল সরকারি-বেসরকারি যাই হোক, সেবা দিতে বাধ্য। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় সড়কের দুর্ঘটনাস্থলের কাছের হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলো ওই সময় আহত বা রোগীদের চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এ ধরণের ঘটনা বা পরিস্থিতি মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি ভোরে সায়েদাবাদ এলাকায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত খুলনার ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম নিজেই নিকটস্থ টিকাটুলির সালাহউদ্দিন হাসপাতালে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করে কর্তৃপক্ষ। তারা তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। পরে ঢাকা মেডিকেলে গেলেও বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়।
রাজধানীর ধানমন্ডির ৭ নম্বর রোডে মিরপুর সড়কের ক্রসিং। বরিশাল থেকে লঞ্চে এসে ভোরে স্বামীর হাত ধরে রাস্তা পার হচ্ছিলেন গ্রীন লাইফ হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কর্মী হেলেনা বেগম। রাস্তার মাঝামাঝি অংশে আসতেই ছিনতাইকারীরা চলন্ত প্রাইভেটকার থেকে হেলেনা বেগমের ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে আচমকা হ্যাঁচকা টান দেয়। ছিনতাইকারীর টানে হেলেনা বেগম ব্যাগসহ প্রাইভেট কারের সঙ্গে ঝুলে পড়েন। ওই অবস্থায় ছিনতাইকারীরা গাড়ির গতি বাড়িয়ে দিলে হেলেনা বেগম গাড়ির নিচে পড়ে যান। তখন তার মাথার উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে যায় ছিনতাইকারীরা। সঙ্গে সঙ্গে তার মৃত্যু হয়।
এ দুটি ঘটনার প্রকাশিত খবর যুক্ত করে এইচআরপিবি’র পক্ষে জনস্বার্থে রিট আবেদন করা হয়।
No comments: