শুনছেন? সামনেই সোনমের বিয়ে
এবছর জুন মাসে বিয়ে করছেন সোনম কাপুর। দীর্ঘদিনের বয়ফ্রেন্ড আনন্দ আহুজার গলায় মালা দেবেন তিনি। বিয়ের পোশাক থেকে গন্তব্য সব নিয়েই তৈরি হয়েছে খবর।
বিয়েটা হচ্ছে। এবং এবছরই। পাত্র আনন্দ আহুজা। পাত্রীর নামটা কি তাও বলে দিতে হবে? কী বললেন ধরে ফেলেছেন? আজ্ঞে হ্যাঁ, পাত্রী সোনম কাপুর। আনন্দ-সোনম সম্পর্ক নিয়ে কথাবার্তার চলছিল বহুদিন। তাঁদের প্রেম থেকে এনগেজমেন্ট সবই উঠে আসছিল বলিউড গসিপ কলমে। সোনম আর আনন্দের ভেকেশনও তৈরি করেছিল খবর। কিন্তু বিয়ে! এমন খবর তো আগে ততটা শোনা যায়নি। যাও বা হাওয়ায় বিয়ের কথা ভেসে উঠেছিল, তাও উড়িয়ে দেন স্বয়ং পাত্রী। তাঁর কথায়, ‘এই মুহূর্তে ছবির কাজে ভীষণ ব্যস্ত। এখুনি বিয়ে নিয়ে ভাবতে পারছি না। তাই বিয়ের প্রসঙ্গ বরং থাক।’ কিন্তু কই? তেমনটা তো হল না। বছর পড়তে না পড়তেই নতুন খবর। ২০১৮-র মাঝামাঝি গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন এবছরের জুন মাসে।
ভালোবাসা
আনন্দ আহুজার সঙ্গে সোনম কাপুরের রোম্যান্সটা শুরু হয়েছিল স্কুল জীবন থেকে। তারপর পারিবারিক পথে হেঁটে সোনম এলেন বলিউডে। আনন্দ কিন্তু সে পথে যাননি। তাই বলে প্রেমে তাঁদের ভাটা পড়েনি মোটেও। ভালোবাসা যেমন ছিল, তেমনই থেকে গিয়েছে চিরকাল। তাই তো পরিণত বয়সে পৌঁছেই তাঁরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন একটুও দেরি না করে। আনন্দ ব্যবসার কাজে দিল্লি নিবাসী। আর কাজের সূত্রে সোনমের বাস মুম্বই। তবু লং ডিস্টেন্স রোম্যান্স দিব্য চালিয়েছেন তাঁরা। এরপর সময় হতেই বিয়ে। অনিল কাপুরের অবশ্য হবু জামাতাটির বিষয়ে একটু ‘কিন্তু কিন্তু ভাব’ ছিল মনে। তবে সম্পর্ক চলতে চলতে বিশ্বাসও জন্মেছে। ফলে অবশেষে বিয়েতে রাজি হয়েছেন তিনিও। ভালোবাসার জয় হয়েছে। সোনম-আনন্দ বিয়ে একেবারে পাকা।
ব্যস্ত জীবন
সোনম এখন সুপার বিসি। প্যাডম্যান রিলিজ করল বলে। এছাড়াও আবার রণবীর কাপুরের সঙ্গে সঞ্জয় দত্তর বাওপিকেও আছেন সোনম। আর করিনা কাপুরের সঙ্গে বরে দ্য ওয়েডিং তো সোনমের হোম প্রোডাকশন। তবু এত কাজের মাঝেও বিয়ের জন্য সময় বার করেছেন তিনি। আনন্দ আহুজা কি একটু চাপ দিয়েছিলেন বিয়ে নিয়ে? মোটেও না। বললেন নায়িকা। তাঁর কথায়, ‘একটা সম্পর্কের দুটো পিলার থাকে। বিশ্বাস আর সম্মান। আমাদের ক্ষেত্রে এই দুটোই সম্পূর্ণ মাত্রায় রয়েছে। আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করি। নিজেদের কাজকেও সম্মান করি। ফলে চাপের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।’ আনন্দের সঙ্গে সোনমের সম্পর্ক তেই দীর্ঘ যে প্রায় স্বামী-স্ত্রীর মতোই কেয়ারিং আর শেয়ারিং তাঁদের মধ্যে। ফাঁক পেলেই সোনম পাড়ি জমান দিল্লি। সেখানেই তাঁদের গৃহস্থী। সোনমের জন্মদিন থেকে যে কোনও বিশেষ অনুষ্ঠানে আনন্দকে সব সময়ই পাশে পেয়েছেন নায়িকা। এমন কি ভেকেশনও কাটান তাঁরা একসঙ্গে। তাই সম্পর্কটা আরও জোরদার করতে এবার বিয়ের পিঁড়িতেই বসবেন বলে মনস্থ করেছেন পাত্র-পাত্রী দু’জনেই।
ডেস্টিনেশন ওয়েডিং
অনুষ্কা শর্মার দেখাদেখি এখন বলিউডে ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের ধুম লেগেছে। সোনম আর আনন্দ দু’জনেরই সমুদ্র পছন্দ। সোনম অবশ্য বরফও ভালোবাসেন। কিন্তু সবার কথা ভেবে পাত্র-পাত্রী দু’জনেই নাকি বিচ ওয়েডিং-এর কথা ভেবেছিলেন। তবে এখনও সেই সিদ্ধান্তে শীল মোহর লাগেনি। অনিল কাপুর অন্যরকম ভাবছেন। মেয়ের জন্য তাঁর আবার পাঞ্জাবি বিয়েই পছন্দ। তাই ভারতেই পাঞ্জাবি ওয়েডিংয়েও মত দিতে পারেন সোনম। আনন্দ দিল্লির ছেলে। তাই দিল্লিতে বিয়ে হলেও আশ্চর্যের কিছু নেই। দিল্লিতে বিয়ে আর মুম্বইয়ে রিসেপশন, এমনও শোনা যাচ্ছে। বিয়ের ভেনু নিয়ে মাঝে খুব গুজব রটেছিল। যোধপুরের উমেদ ভবন রাজপ্রাসাদে নাকি বিয়ে হবে সোনম-আনন্দের। ইন্ডিয়ান ডেস্টিনেশন ওয়েডিং বলা চলে তাকে। সেই মতো নাকি গোটা রাজপ্রাসাদটাই বুক করে ফেলেছিলেন সোনম কাপুর। কিন্তু সে খবরও পাকা নয়। এখনও পর্যন্ত বিয়ের ভেনু নিয়ে জোর জল্পনা চলছে।
ড্রেস ডিজাইনার
সোনম চিরকালই ফ্যাশন কনশাস। আর তাঁর জামা কাপড় ও ফ্যাশনের দায়িত্বে বোন রিয়া কাপুর। তাই সোনমের বিয়ের পোশাক নিয়ে যে প্রচুর আলোচনা হবে এ আর নতুন কথা কি? প্রচুর চিন্তা ভাবনার পর সোনম ঠিক করেছেন বিয়ের পোশাক নিয়ে কোনওরকম এক্সপেরিমেন্ট তিনি করবেন না। সন্দীপ খোসলা আর আবুজানির ডিজাইন করা পোশাকই পরবেন বলে স্থির করেছেন। প্রচুর জরি, চুমকি বসানো ঝলমলে লেহেঙ্গা চোলি পড়তে চান সোনম। সঙ্গে সোনার সুতোর কাজ থাকলেও মন্দ হবে না। চোলির কাজ নাকি ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন আবু জানি। রং নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে ভালোবাসেন সোনম। তাই বিয়ের পোশাকেও থাকবে আনকমন কালারস। তবে রঙের ব্যাপারে ডিজাইনাররা এখনও মুখ খোলেননি।
বাবার সঙ্গে
‘এক লেড়কি কো দেখা তো এয়সা লাগা’— সিনেমার কাজ এখনও শুরু হয়নি। তবে কাস্ট থেকে স্টোরি লাইন সব ঠিক হয়ে গিয়েছে। এই প্রথম বাবা অনিল কাপুরের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করবেন সোনম কাপুর। ইন্ডাস্ট্রিতে সোনমের এক দশক কেটে গিয়েছে। কিন্তু পিতা-পুত্রীর অভিনয়ের সুযোগ হয়নি এর আগে। এবার তাঁরা একসঙ্গে। দু’জনের কাছেই এটা ড্রিম প্রোজেক্ট। বিয়ের আগে পরে শ্যুটিং চলবে। তাহলে উপায়? বিয়ের পরেই কি মিঞাঁ বিবি আলাদা থাকবেন নাকি? কখনওই না। আনন্দ তাঁর শিডিউলটা এমনভাবেই ফেলেছেন যে শ্যুটিংয়ের সমেয় তাঁরা একইসঙ্গে থাকতে পারবেন। হবু স্ত্রীয়ের সব কাজে আনন্দ তাঁর ছায়া সঙ্গী। ভীষণ সাপর্টে করেন তিনি সোনমকে। সোনমও তেমনই আনন্দ বলতে অজ্ঞান। বিশ্বাস, ভরসা, ভালোবাসায় মিলেমিশে রয়েছেন সোনম-আনন্দ দু’জনে।
No comments: