দিনে ৩ লিটার জল না খেলে কি হতে পারে জানেন?
আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে জল। খাবার ছাড়াও আমরা কয়েকদিন বেঁচে যেতে পারি। কিন্তু জল ছাড়া, কোনও মতেই সম্ভব নয়। তাই তো চিকিৎসকেরা প্রতিদিন কম করে ৩-৪ লিটার জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ এমনটা না করলে ধীরে ধীরে শরীরের সচলতা কমে যায়, যে কারণে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে নানান ধরনের সমস্যা। যেমন...
১. কনস্টিপেশনের মতো রোগ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে:
বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ জল না খেলে দেহের অন্দরে ধীরে ধীরে এমন পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। আসলে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খেলে শরীরের অন্দরে জমতে থাকা বর্জ্য পদার্থ ডায়জেস্টিভ সিস্টেম থেকে ঠিক মতো বেরিয়ে যাওয়া সুযোগ পায়। ফলে পটির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে কনস্টিপেশনের মতো রোগ ঘারে চেপে বসার সুযোগই পায় না।
২. ক্লান্তি বেড়ে যায়:
আজকাল অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পরছেন নাকি? তাহলে একবার খেয়াল করে দেখুন তো ঠিক মতো জল খাচ্ছেন কিনা। কারণ শরীরের জলের চাহিদা না মিটলে কোষেদের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কমে দেহের সচলতাও। প্রসঙ্গত, জল কম খেলে আরেকটি ঘটনা ঘটে, যে কারণে ক্লান্তি ভাব আরও বেড়ে যায়। বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে দেহের অন্দরে জলের ঘাটতি দেখা দিলে শরীরকে বেশি মাত্রায় কাজ করতে হয়। কারণ এমনটা না করলে দেহের দৈনন্দিন যা কাজ, তা ঠিক মতো হওয়ার সুযোগ পায় না। আর বেশি বেশি কাজ করার কারণে স্বাভাবিকভাবেই শরীর দুর্বল হয়ে পরে। সেই সঙ্গে বাড়ে ক্লান্তিও।
৩. ত্বকের সৌন্দর্য কমে যায়:
কম পরিমাণে জল খেলে ত্বকের অন্দরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যাওয়ার সুয়োগ পায় না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে জলের অভাবের কারণে ধীরে ধীরে কোলাজেনের মাত্রাও যেমন কমে, তেমনি ইলাস্টিক টিস্যুরা জলের অভাবে ক্রমাগত ভাঙতে থাকায় বলিরেখা প্রকাশ পেতে শুরু করে। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে বলিরেখা যত প্রকাশ পায়, তত ত্বক বুড়িয়ে যেতে থাকে। তাই তো স্কিনকে দীর্ঘকাল সুন্দর এবং প্রাণচ্ছ্বল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পান করতে ভুলবেন না যেন!
আরও পড়ুন: যে কারণে মুরগির বুকের সাদা অংশ খাবেন না
৪. ব্রেন পাওয়ার মারাত্মক কমে যায়:
মানব মস্তিষ্কের ৮০ শতাংশই জল দিয়ে তৈরি। তাই তো দিনে কম করে ২-৩ লিটার জল যদি খেতে না পারেন, তাহলে কিন্তু বেজায় বিপদ! কারণ সেক্ষেত্রে ধীরে ধীরে কগনিটিভ পাওয়ার কমতে শুরু করে, যে কারণে স্মৃতিশক্তি তো কমেই। সেই সঙ্গে বুদ্ধি এবং মনযোগ ক্ষমতাও কমে যায়। তাই ব্রেনকে যদি বহুদিন অ্যাকটিভ রাখতে চান, তাহলে ঠিক ঠিক পরিমাণে জল পান করতে ভুলবেন না যেন!
৫. চোট-আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে:
বছরের পর বছর ধরে হওয়া নানা গবেষণায় দেখা গেছে নির্দিষ্ট পরিমাণে জল না খেলে জয়েন্টের সচলতা যেমন কমে, তেমনি বিভিন্ন অঙ্গের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে সার্বিকভাবে শরীরের সচলচতা কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চোট-আঘাত লাগার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, জল অনেকাংশেই লুব্রিকেন্টের কাজ করে, যা জয়েন্টের কর্মক্ষমতা বজায় রাখে। তাই তো দেহের অন্দরে জলের প্রবেশ কমলে স্বাভাবিকভাবেই জয়েন্টের গতিবিধিতেও পরিবর্তন আসতে শুরু করে।
No comments: