ভারতীয় চিকিত্সকের সাহায্যে বিমানেই সন্তান প্রসব মহিলার
নয়াদিল্লি: গত ১৭ ডিসেম্বর আটলান্তিক মহাসাগরের ৩৫ হাজার ফুট উপরে আন্তর্জাতিক রুটের বিমানে সন্তান প্রসব করলেন এক মহিলা। আর তাঁকে সাহায্য করলেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভুত মার্কিন চিকিত্সক সিজ হেমাল৷ নয়াদিল্লিতে এক বন্ধুর বিয়েতে যোগদান করে ওইদিন প্যারিস থেকে নিউ ইয়র্ক ফ্লাইটে বাড়ি ফিরছিলেন চিকিত্সক সিজ৷
তাঁর পাশের আসনেই ছিলেন চিকিত্সক সুজান শেপার্ড নামের এক ফ্রেন্চ পেডিয়াট্রিশিয়ান৷ হঠাত্ প্রসববেদনা অনুভব হয় ওই মহিলার। সাহায্যের আবেদন শুনে এগিয়ে যান চিকিৎসক সিজ ও সুজান৷ ২৭ বছরের চিকিৎসক সিজ ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকে দ্বীতিয় বর্ষের ইউরোলজির ছাত্র৷ তিনি জানান, ৪১ বছরের টয়িন ওগুনডাইপের প্রসববেদনা ১০ মিনিট অন্তর আসছিল, তাই তিনি ও চিকিৎসক সুজান দুজনে মিলে ওই মহিলার দেখাশোনা করেন ও মহিলাকে যথাসম্ভব আরামদায়ক অবস্থায় রাখার চেষ্টা করেন৷
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের ওয়েবসাইটে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে চিকিত্সক সিজ বলেন, ‘ আমি প্রচণ্ড ক্লান্ত ছিলাম৷ ভেবেছিলাম ড্রিংক করে ঘুমিয়ে পড়ব৷ কিন্তু আমি খুব খুশি আমি ডিংক করিনি৷’ বলা যেতেই পারে তাঁর বক্তব্যে সহমত প্রকাশ করেন পেশায় ব্যাঙ্কার টয়িন৷ বিমান মাঝপথে থাকাকালীন হঠাত্ তার প্রসববেদনা উঠে৷ সেই সময় বিমানটি গ্রিনল্যান্ডের দক্ষিন উপকূলের উপর দিয়ে যাচ্ছিল৷ সবচেয়ে নিকটতম বিপদকালীন ল্যান্ডিং ২ ঘন্টা দুরত্বে থাকায় ফ্লাইটটি নিউইয়র্কে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন উপস্থিত দুই চিকিত্সক৷ তারপর বিমানের মেডিক্যাল কিটের সীমাবদ্ধ উপকরণের সাহায্যে টয়িনের রক্তচাপ, অক্সিজেনের মাত্রা, নাড়ি-সহ যাবতীয় ভাইটালের উপর নজরদারী করেন তারা এবং টয়িনের ৪ বছরের কন্যা এমির দেখাশোনা করেন বিমানের এয়ারহোস্টেসরা৷
চিকিত্সক সিজ বলেন, ‘এক ঘন্টার মধ্যেই মহিলার প্রসবযন্ত্রণার মধ্যবর্তী সময় কমতে থাকে৷ প্রথমে ৭ মিনিট, তারপর ৫ মিনিট ও অবশেষে তা ২ মিনিট অন্তর আসতে থাকে৷ তখনই আমরা বুঝতে পারি বিমানেই প্রসব করাতে হবে৷’ নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে শিশুপুত্র জেকের মা টয়িন বলেন, ‘আমি নিশ্চিন্তে ছিলাম৷ কারণ আমি জানতাম আমি সুরক্ষিত৷ হাসপাতালের প্রসবরুমে একজন চিকিৎসক বা দাই আমার জন্য যা যা করত, ওনারা আমার জন্য তাই করেছেন৷ বরং আমি বলব আরও ভালো কাজ করেছেন৷ জন্মসূত্রে ভারতীয় চিকিৎসক সিজ হেমাল পূর্বে ৭ টি প্রসব করালেও এই ধরণের অভিজ্ঞতা তার জীবনে প্রথম৷
No comments: