অবশেষে জয়ের মুখ দেখলো ইউনাইটেড, শেষ মুহূর্তের গোলে লিভারপুলে জয়
অবশেষে কোচ হোসে মরিনহোর মুখে হাসি ফিরিয়ে এনেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড়রা। নতুন বছরের প্রথম ম্যাচে এভারটনকে ২-০ গোলে হারিয়ে প্রিমিয়ার লীগে তিন ম্যাচ পরে জয়ের মুখ দেখলো মরিনহোর দল। এন্থনী মার্শাল ও জেসে লিনগার্ডের গোলে ইউনাইটেডের জয় নিশ্চিত হয়। দিনের অপর ম্যাচে বার্নালিকে শেষ মুহূর্তে ২-১ গোলে পরাজিত করেছে লিভারপুল।
ইনজুরি আক্রান্ত রোমেলু লুকাকুর অনুপস্থিতিতে কাল মার্শাল মূল একাদশে মাঠে নেমেছিলেন। গোডিসন পার্কের এ্যাওয়ে ম্যাচে ৫৭ মিনিটে ডেডলক ভাঙ্গেন এই ২২ বছর বয়সী এই ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড। জাতীয় দলের সতীর্থ পল পগবার দারুন এক পাসে মৌসুমের নবম গোল পূরণ করেন মার্শাল। ২০১৭ সালের শেষের দিকে প্রায় পুরোটা সময় নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে ইউনাইটেড। তবে নতুন বছরের প্রথম ম্যাচেই মরিনহো জয় উপহার দিয়ে সকলের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে মার্শাল, পগবারা। ৮১ মিনিটে প্রায় একক প্রচেষ্টায় লিনগার্ড দলের জয় নিশ্চিত করেন। ইংলিশ এই উইঙ্গার এভারটনের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ২০ গজ দুর থেকে কার্লিং শটে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকে পরাস্ত করেন। গত পাঁচ ম্যাচে এটি ছিল লিনগার্ডের চতুর্থ গোল।
কিছুদিন ধরেই খেলোয়াড়দের সাথে মরিনহো চলমান শীতল সম্পর্কে এই জয়ের মাধ্যমে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসবে। একের পর এক ব্যর্থতায় খেলোয়াড়দের ‘অপরিণত’ হিসেবে আখ্যা দেয়ায় ও জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে সিটিকে ধরার লক্ষ্যে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয়ের ইঙ্গিত থেকেই খেলোয়াদের সাথে মরিনহোর সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
বড়দিনের ব্যস্ত সময়টিতে পরপর তিনটি ম্যাচে ড্র করে প্রিমিয়ার লীগ টেবিলে চেলসির পরে নীচে নেমে যাওয়া ইউনাইটেড এই জয়ে আবারো দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন। ম্যাচ শেষে মরিনহো বলেছেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা, আমাদের সামর্থ্য সবকিছুই আজ শীর্ষ পর্যায়ের ছিল। সব মিলিয়ে আমরা দুর্দান্ত খেলেছি। এটা পরিশ্রান্ত খেলোয়াড়ের পারফরমেন্স নয়। তবে সবার মাঝে জেসে সবচেয়ে বেশী ধারাবাহিক ছিল। শুধু এটুকু বলতে পারি সে সঠিক পথেই আছে।’
টেবিলের শীর্ষে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির থেকে ইউনাইটেড এখন ১২ পয়েন্ট পিছনে আছে।
দিনের অপর ম্যাচে থাইয়ের ইনজুরির কারনে ফিলিপ কুতিনহো ও কুঁচকির ইনজুরির কারনে লিভারপুলের হয়ে খেলতে পারেননি মোহাম্মদ সালাহ। রবার্তো ফিরমিনহো ছিলেন বদলী বেঞ্চে। বৃষ্টি¯œাত বার্নলির টার্ফ মুরে লিভারপুলের ‘ফ্যাব ফোর’ এর মধ্যে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে মূল একাদশে ছিলেন সাদিও মানে। ৬১ মিনিটে গোল করে সেনেগালের এই উইঙ্গার প্রমান করেছেন তারকা সতীর্থদের ছাড়াও দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। এই নিয়ে মৌসুমে অষ্টম গোল পেলেন মানে। ৮৭ মিনিটে স্যাম ভোকসের পাসে ইয়োহান গুডমান্ডসন বার্নালির পক্ষে সমতা ফেরান। কিন্তু ম্যাচের নাটকীয়তা তখনো বাকি ছিল। স্টপেজ টাইমের চতুর্থ মিনিটে ডেজান লোভরেনের ফ্রি-কিক থেকে এস্তোনিয়ার ডিফেন্ডার রাগনার ক্লাভান লিভারপুলের জয় নিশ্চিত করেন।
এই নিয়ে টানা তিন জয়ে লীগে লিভারপুল ১৩ ম্যাচে অপরাজিত থাকলো। আর এতেই ২২ ম্যাচে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানটি পোক্ত রয়েছে লিভারপুলের।
ম্যাচ শেষে লিভারপুল বস জার্গেন ক্লপ বলেছেন, ম্যাচটা বেশ কঠিন ছিল। বিশেষ করে এই ধরনের আবহাওয়ায় খেলা খুবই কষ্টকর। পুরো মৌসুমে এই একটি স্থানে খেলাটা আমাদের জন্য সত্যিই কঠিন। তবে দিনের শেষে তিন পয়েন্ট অর্জিত হয়েছে এটাই মূল বিষয়।
No comments: