রোহিঙ্গাদের খাদ্য-আবাসনের সুযোগ বাড়াবে বাংলাদেশ
রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা এখন পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে
বাংলাদেশে নতুন করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ঢল নামতে পারে - জাতিসংঘের এমন আশংকার পর বাংলাদেশ সরকার বলছে, তারা খাদ্য এবং আবাসনের সুযোগ আরো বাড়াচ্ছে।
শুক্রবার জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ দফতরের প্রধান মার্ক লোকেক নতুন করে রোহিঙ্গাদের ঢল নামার একটি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
সাহায্য সংস্থাগুলো এজন্য প্রায় সাড়ে ৪৩ কোটি ডলারের তহবিল আহ্বান করেছে।
এ অবস্থায় নতুন করে বড় আকারে রোহিঙ্গা প্রবেশের যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তার কতটা প্রস্তুতি রয়েছে?
বাংলাদেশের ত্রাণ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল বলেন, ঢল নামার সম্ভাবনা তারা কম মনে করলেও তারা আগের ধারণার তুলনায় কিছুটা বেশি শরণার্থী আসবে বলে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
"আমরা আগে ৮৪ হাজার পরিবারের থাকার বিষয়ে পরিকল্পনা করেছিলাম, কিন্তু এখন আমাদের পরিকল্পনায় আছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার পরিবার। স্যানিটেশনের ক্ষেত্রেও আমরা আগের চিন্তাভাবনার চেয়ে একটু বাড়িয়ে চিন্তা করছি"।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের খাদ্যবিষয়ক সংস্থা ডব্লিউএফপির সাথেও ৮ লাখ মানুষকে টার্গেট করেই খাদ্য ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এদিকে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের আগমন এখনো চলছে। প্রতিদিনই সীমান্ত পাড়ি দিয়ে শরণার্থীরা বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন।
টেকনাফে বিজিবির কমান্ডিং অফিসার আরিফুল ইসলাম বলেন, দুদিন বিরতির পর গতকালও টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে প্রায় ৫০০ জন রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছেন।
তিনি বলেন, নতুন আসা রোহিঙ্গারাও বলছেন সীমান্তের ওপারে তাদের বাংলাদেশে আসার জন্য বলা হচ্ছে এবং সীমান্তে এখনো অনেকে অপেক্ষা করছেন। নৌকা কম থাকায় অনেকে আসতে পারছে না বলে ধারণা করছে বিজিবি।
এদিকে আবার নতুন করে যদি বড় আকারে রোহিঙ্গা আসতে শুরু করে তবে সেটি তাৎক্ষনাত সামাল দেয়ার মত প্রস্তুতি নেই বলে মনে করছেন দুর্যোগ প্রস্তুতি বিষয়ক সংগঠণগুলোর জোট ডিজাস্টার ফোরামের সদস্য সচিব নাঈম ওয়াহারা। তিনি বলেন, যে ছয় মাসের পরিকল্পনা রয়েছে সেটিও অপ্রতুল।
"অনেক বিষয় ভাবা হয়নি। যেমন বড় সাইক্লোন হলে এই ঘরগুলো টিকবে না, সেটির কোন পরিকল্পনা আছে কিনা আমরা জানি না। শীত আসছে, সেটাও আমাদের মনে রাখতে হবে। ছয় মাসের মধ্যে খাবার এবং থাকার জায়গার বিষয়ে পরিকল্পনা হয়েছে, কিন্তু অন্যান্য বিষয় সেরকমভাবে বিবেচনায় রাখা হয়নি"।
তিনি বলেন, এক মাসের মাথায় আরেকটা বৈঠক করে পরিকল্পনাটি পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।
আরো শরণার্থীর জন্য প্রস্তুতির পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে রোহিঙ্গা সঙ্কট কতটা সমাধানের দিকে যাচ্ছে সেটিও বিবেচনা করে পরিকল্পনা করতে হবে বলে মনে করছেন মি. ওয়াহারা।