১০০ কোটি নয়, ২০১৩ সালে ৩০০ কোটি গ্রাহকের তথ্য চুরি হয়েছিল, নতুন স্বীকারোক্তি ইয়াহু-র
বোস্টন: ১০০ কোটি নয়। গত বছর হ্যাকাররা প্রায় ৩০০ কোটি গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল। এমনই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি করল ‘ইয়াহু’।
গতকাল, বোস্টন-স্থিত সংস্থা সাইবারিজন-এর চিফ সিকিউরিটি অফিসার স্যাম কারি জানান, যা সংখ্যা প্রকাশ্যে এসেছে, তা প্রায় বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যাকে প্রতিনিধিত্ব করে। তিনি বলেন, সংখ্যাটা ১০০ কোটি না ৩০০ কোটি—তা বড় বিষয় নয়। মোদ্দা কথা হল, এখানে গোপনীয়তা সবচেয়ে বড় শিকার হয়েছে।
গত ডিসেম্বর মাসে প্রথম তথ্য হাতানোর কথা ঘোষণা করে ইয়াহু। চুরি হওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে নাম, ইমেল আইডি, ফোন নম্বর, জন্মদিন এবং নিরাপত্তা-সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর।
সেই সময় ইয়াহু জানায়, ২০১৩ সালের অগাস্ট মাসে এক অননুমোদিত ‘থার্ড পার্টি’ প্রায় ১০০ কোটি গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করেছে। সংস্থা আরও জানিয়েছে, তাদের গোপন কোড-ও হয়ত হ্যাকারদের হাতে চলে গিয়ে থাকতে পারে। এই চুরিকে সংস্থার ইতিহাসে বৃহত্তম বলেও অভিহিত করেছিল ইয়াহু।
তার তিনমাস আগে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই সংস্থা জানিয়েছিল, তাদের সার্ভার থেকে প্রায় ৫০ কোটি গ্রাহকের তথ্য ফাঁস হয়েছে। এবার, নতুন ঘোষণায় আরও একটি কেলেঙ্কারি উঠে এল। এবার লুঠ হওয়া তথ্যের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ।
এক সময়ে বিশ্বের অন্যতম ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে নামডাক ছিল এই মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার। কিন্তু, পরবর্তীকালে, সংস্থার গুণগতমান পড়ে যাওয়ায়, গুগল এবং ফেসবুকের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে ইয়াহু পিছিয়ে যায়। সাম্প্রতিককালে, বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ইয়াহু।
এসবের মধ্যেই ৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ইয়াহুকে কেনার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিল আরেক মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ভেরিজন। কথাবার্তাও অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু গত বছর তথ্যফাঁসের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় তা থমকে যায়।
চলতি বছরের জুন মাসে ভেরিজন কিনে নেয় ইয়াহুকে। এরপরই তথ্য-চুরিকাণ্ডে বাইরের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো হয়। তদন্তকারীদের রিপোর্টকে হাতিয়ার করে ইয়াহু জানায়, চুরি যাওয়া পাসওয়ার্ডগুলি টেক্সট ফর্ম্যাটে ছিল না। এছাড়া, হ্যাকাররা পেমেন্ট কার্ডের তথ্য বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তথ্য হাতিয়ে নিতে পারেনি।
চুরির পরই, ইয়াহু তাদের গ্রাহকদের অবিলম্বে পাসওয়ার্ড এবং সিকিউরিটি প্রশ্ন বদল করার নির্দেশ দিয়েছিল। যাতে হ্যাকাররা কোনওভাবে ওই অ্যাকাউন্টে ঢুকতে না পারে। তবে, নতুন স্বীকারোক্তির পরও, ভেরিজন জানিয়ে দিয়েছে, ইয়াহু কেনায় তাদের আফশোস নেই