?
পরমাণু অস্ত্রের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে বিভিন্ন এনজিও'র জোট আইসিএএন। দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার ওয়েপনসের সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে এই আইসিএএন। নোবেল বিজয়ী হিসেবে ঘোষিত হওয়ার আগে এ সংগঠনের খুব একটা পরিচিতি ছিল না। কিন্তু কেন দেওয়া হলো এ পুরস্কার? কী কাজ করেছে এ সংগঠন?
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়ার অনুষ্ঠানে নরওয়েজীয় নোবেল কমিটির নেতা বেরিট-রিজ-অ্যান্ডারসন এ প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণে চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী প্রচেষ্টার জন্য আইসিএএন-কে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে'।
গত জুলাইয়ে পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধ ও পর্যায়ক্রমে সেগুলো ধ্বংস করার জন্য প্রণীত জাতিসংঘের একটি চুক্তি ১২২টি দেশ গ্রহণ করে। এটি স্বাক্ষরে বিভিন্ন দেশকে উৎসাহিত করতে ভূমিকা রেখেছে এ প্রতিষ্ঠান। পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী নয়টি দেশ এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। এসব দেশের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রিটেনও রয়েছে।
তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) একটি জোট হিসেবে নিজেদের পরিচিতি দেয় দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার ওয়েপনস (আইসিএএন)। শত শত এনজিওর এই জোট প্রায় ১০ বছর ধরে শতাধিক দেশে কাজ করছে। জেনেভাভিত্তিক এই গোষ্ঠী অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম কাজ শুরু করে। ২০০৭ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ভিয়েনায় কাজ শুরু করে।#
বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পদক নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে পরমাণু অস্ত্র বিলুপ্তিকরণ জোট দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার ওয়েপনস (আইক্যান)। পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রচারণার স্বীকৃতি হিসেবে তারা এ সম্মানজনক পুরস্কারটি পেয়েছে।
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টার দিকে নরওয়ের রাজধানী অসলোতে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি এ নাম ঘোষণা করে। নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বেরিত রেইস অ্যান্ডারসন এ পুরস্কারের জন্য আইক্যানের নাম ঘোষণা করেন।
নাম ঘোষণা অনুষ্ঠানে কমিটির নেতা অ্যান্ডারসন বলেন, ‘আমরা এমন একটি বিশ্বে বাস করছি, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্রের ঝুঁকি আগের চেয়ে অনেক বেশি।’ তাই পারমাণবিক অস্ত্র বিলুপ্তির জন্য জনমত সৃষ্টি করায় আইক্যান এ পুরস্কার অর্জন করেছে।
আইক্যানের নির্বাহী পরিচালক বেটরিস কেইন বলেন, আইক্যানের উদ্দেশ্য হচ্ছে পরমাণু অস্ত্রধারী দেশগুলোর কাছে একটি ম্যাসেজ দেয়া যে, তারা যে পরমাণু অস্ত্রের ওপর নির্ভর করছে তা অগ্রহণযোগ্য আচরণ। আমরা নিরাপত্তার নামে হাজার হাজার মানুষকে হত্যার মতো কোনো অস্ত্রকে মেনে নিতে পারি না। যা নিরাপত্তার নামে অন্যদের হত্যা করে তা কোনো দিন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না।'
কার হাতে নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০১৭ উঠছে তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী বেশ আগ্রহ ছিল এবার। এবছর ৩শ ১৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য তালিকা থেকে চূড়ান্ত পর্যায়ে আইক্যানের নাম ঘোষণা করা হল।
অনুষ্ঠানে নোবেল কমিটির নেতা বলেন, এটা খুবই বিপজ্জ্বনক যে, অনেক দেশ তাদের পরমাণু অস্ত্র উন্নত করছে আবার অনেকে নতুন করে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে। এসব কার্যক্রম পৃথিবীতে মানুষের বসবাসের জন্য হুমকি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইতিপূর্বে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু পরমাণু অস্ত্রের বিরুদ্ধে সে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এই যায়গাটিতে যে দুর্বলতা ছিল সেটি পূরণে আইক্যান কাজ করছে।
তবে এবার শান্তিতে নোবেলের মনোনয়ন তালিকায় লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, জো কক্স, বুলগেরিয়ার অর্থোডক্স চার্চ, ডেভিড বোয়ি, ভ্লাদিমির পুতিন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ছিলেন।