Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » চীনের করিডোর প্রশ্নে ঢাকা ও দিল্লির মতবিরোধ





 চীনের করিডোর প্রশ্নে ঢাকা ও দিল্লির মতবিরোধ

বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমারের মধ্যে দিয়ে প্রস্তাবিত বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডরকে কেন্দ্র করে দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য সামনে চলে এসেছে।
তার কারণ, এই করিডরটিকে চীন তাদের উচ্চাভিলাষী 'বেল্ট রোড ইনিশিয়িটিভে'র অংশ হিসেবেই দেখাতে চায় - কিন্তু সেটি পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে এই যুক্তিতে ভারত তা আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভারত সমগ্র কাশ্মীরকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করে থাকে এবং সেই ভূখন্ডের ওপর অন্য দেশের কোনও আন্তর্জাতিক প্রকল্প মেনে নেওয়াকে নিজেদের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস হিসেবেই দেখে।
কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক গত সপ্তাহে দিল্লি সফরে এসে স্পষ্ট করেছেন, তার দেশের কাছে অর্থনীতির দাবি আগে - এবং বাংলাদেশ আশেপাশের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তোলাতেই বেশি গুরুত্ব দেবে।
ফলে গত আট-নবছরে ভারত ও বাংলাদেশ মিলে প্রায় একশোর কাছাকাছি কানেক্টিভিটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পর হয়েছে এখন বিসিআইএম করিডরকে ঘিরে দুটো দেশ ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে - আর তার মূলে আছে এই প্রকল্পে চীনের ভূমিকা।
বিতর্কিত কাশ্মীর এলাকার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বলে চীনের বেল্ট রোড ইনিশিয়িটেভ থেকে ভারত গত মে মাসেই নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিল - আর বিসিআইএমও যেহেতু চীনের সেই উদ্যোগেরই অংশ, তাই ভারত সেখানেও শীতল মনোভাব দেখাচ্ছে।
দিল্লির ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিটের মঞ্চে কিন্তু শহীদুল হক পরিষ্কার করে দিয়েছেন, তারা বিষয়টিকে ভারতের মতো করে দেখছেন না।
মি হক সেখানে বলেন, "সার্বভৌমত্ব অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ভৌগোলিক ও অন্যভাবেও যেহেতু আমরা ছোট দেশ - তাই সেই সীমাবদ্ধতা দূর করতে হলে আমাদের বাকি দুনিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতেই হবে। তাই আমাদের এলাকার অন্য অনেক দেশের চেয়ে অনেক আগে আমরা নিজেদের দরজা খুলে দিয়েছি।"
"শেখ হাসিনা সরকারের নীতিও খুব স্পষ্ট, দেশের মানুষের স্বার্থেই আমাদের সংযুক্ত হতে হবে, সার্বভৌমত্বের নামে আমরা বিচ্ছিন্ন থাকব তা হতে পারে না।"

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক
কিন্তু চীনের প্রতি ইঙ্গিত করে ভারতের সাবেক কূটনীতিক তথা সহকারী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা লীলা পোনাপ্পা বলছিলেন, একটা বহুপাক্ষিক প্রকল্পে কোনও বিশেষ একজন অন্যায় আধিপত্য দেখাবে এটা ভারতের পক্ষে মানা সম্ভব নয়।
মিস পোনাপ্পার যুক্তি, "ঠিক এই কারণেই চীনের বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়ে ভারত ধীরেসুস্থে এগোতে চায়। আর ইউরোপের অভিজ্ঞতা আমাদের বলে, ঠিকমতো জমি প্রস্তুত না-করে ও সবাইকে তৈরি হওয়ার সময় না-দিয়ে যদি এগোনো হয় তাহলে দারুণ পরিকল্পনাও মুখ থুবড়ে পড়ে, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নই তখন বড় হয়ে ওঠে।"
তবে বিসিআইএম করিডরকে যে বেল্ট রোড ইনিশিয়িটিভের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে না, চীন এটা স্পষ্টভাবে বললে হয়তো এই সমস্যার সমাধান হতে পারে, মনে করছেন দিল্লিতে আসিয়ান-ইন্ডিয়া সেন্টারের প্রধান ড: প্রবীর দে।
বহু বছর ধরে তিনি এই আলোচনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, আর বেল্ট-রোডের অনেক আগে থেকেই যে বিসিআইএম নিয়ে আলোচনা চলছে, সে কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
ড: দে-র কথায়, "বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভ বড়জোর পাঁচ-ছবছরের কনসেপ্ট। প্রথমে ছিল মেরিটাইম সিল্ক রোড, তারপর এল ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড। আর সেই জায়গায় বিসিআইএম নিয়ে আলোচনা চলছে গত কুড়ি বছর ধরে।"
"বিসিআইএমের যে ট্র্যাক টু ফোরাম, যাকে বলা হয় কুনমিং ইনিশিয়েটিভ, তার সূচনা হয়েছিল কুনমিংয়ে ১৯৯৭ সালে। প্রথম বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল কলকাতা থেকে কুনমিংয়ের মধ্যে সড়ক সংযোগ গড়ে তোলা - যাকে বলা হত ট্রান্সপোর্ট করিডর।"
"ইকোনমিক করিডরের ভাবনাটা অবশ্য আরও পরে এল। এই প্রকল্প রূপায়িত হলে বাংলাদেশের জন্য তা যে বিরাট উপকার বয়ে আনবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। তাদের জন্য আরও একটা সুবিধা হল চীনের সঙ্গে তাদের সরাসরি কোনও সীমান্ত নেই ... কিন্তু ভারত-চীনের সীমান্ত আছে, আর সেটাও বিতর্কিত", বলছিলেন প্রবীর দে।
একই ভাবনার শরিক শহীদুল হকও -তিনিও বলছেন বেল্ট রোডের চেয়ে বিসিআইএমের ভাবনা আসলেই অনেক বেশি পুরনো - এবং বাংলাদেশ বহু বছর ধরে বিসিআইএম নিয়ে নিবিড় আলোচনা চালাচ্ছে।
কিন্তু চীনের নতুন পরিকল্পনা সেই আলোচনাকেই এখন থমকে দিয়েছে - এবং প্রস্তাবিত করিডরের দুই গুরুত্বপূর্ণ শরিক দেশ, ভারত ও বাংলাদেশ সার্বভৌমত্বের প্রশ্নটি নিয়ে একমত হতে পারছে না।
অন্যভাবে বললে, বিতর্কিত কাশ্মীরের ছায়া পড়ায় আপাতত আটকে গেছে কলকাতা-ঢাকা-মান্দালে-কুনমিংয়ের সেতুবন্ধন!







«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post