Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» »Unlabelled » ডিমের পুষ্টিগুন ও অপকারিতা






 ডিমের পুষ্টিগুন ও অপকারিতা

ডিম প্রোটিনে ভরপুর একটি খাবার। অনেকে যদিও ডিম নিয়ে বিভিন্ন চিন্তায় পড়ে থাকে। তবুও ডিম অত্যন্ত কম দামের পুষ্টিকর খাবার হিসেবে পরিচিত। সহজলভ্য পুষ্টির উত্স হিসেবে ডিমের তুলনা কেবল ডিমই হতে পারে। আর ডিমে রয়েছে বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান, যা দেহের ক্যালরি সরবরাহ থেকে শুরু করে নানা খাদ্যপ্রাণও সরবরাহ করে। তাই বাড়িতে বা রেস্তোরাঁয় সকাল-বিকেলের নাশতাতেই হোক কিংবা দুপুর-রাতের খাবারে ডিমের একটা মেন্যু ঘুরেফিরে আসেই। আর ব্যাচেলরদের জীবনে সহজে রান্নার সহজ মেন্যু হিসেবে ডিম তো প্রায় ‘জাতীয় খাদ্য’ই বটে! তো দেখা যাক ছোট একটা ডিমে কি কি গুনাগুন বিদ্যমান আছে।



ডিমের ১৬টি উপকারিতা তুলে দেখানো হল
১। হৃদরোগের সম্ভাবনা কমায়

এলডিএল কোলস্টেরলকে মন্দ কোলস্টেরল হিসেবে বলা হয়। এটি ডিম খেলে কমে যায়। তাই ডিম খাওয়ায় হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে না বরং কমে যায়।
২। দেহের ভালো কোলস্টেরল বাড়ায়

দেহের উচ্চমাত্রায় কোলস্টেরল ক্ষতি করে এমনটা অনেকেই জানি। কিন্তু কোলস্টেরলের রয়েছে ভালো ও মন্দ। মূলত মন্দ কোলস্টেরল দেহের ক্ষতি করে। আপনি যদি ভালো কোলস্টেরল গ্রহণ করেন তাহলে তা দেহের ক্ষতি করবে না। ডিমে রয়েছে এ ভালো কোলস্টেরল। এটি দেহের মন্দ কোলস্টেরল দূর করতেও সহায়ক। এ কারণে নিয়মিত ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা।
৩। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

ডিম দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। আপনি যদি দেহের জীবাণুগুলো দূর করতে চান, ভাইরাস ও বিভিন্ন রোগের জীবাণুকে শায়েস্তা করতে চান তাহলে নিয়মিত ডিম খান। একটি বড় ডিমে রয়েছে প্রায় ২২ শতাংশ আরডিএ বা সেলেনিয়াম। এটি শিশুদের পুষ্টি চাহিদা মেটাতেও বিশেষভাবে কার্যকর, যা তাদের বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে।
৪। উদ্যম শক্তি যোগায়

একটি ডিমে রয়েছে দৈনিক চাহিদা পূরণের উপযোগী ১৫ শতাংশ ভিটামিন বি। এটি দৈনিক খেলে দেহের ভিটামিন বি-র চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখে। ভিটামিন বি দেহে এনার্জি যোগায়। এ কারণে উদ্যমের প্রয়োজনে ডিম খাওয়ার তুলনা হয় না।
৫। ত্বক ও চুলের উন্নতি

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স থাকায় ডিম সুস্থ চুল, ত্বক, চোখ ও লিভার গঠন করতে সহায়তা করে। এটি ছাড়াও ডিমে রয়েছে নানা ভিটামিন। এসব ভিটামিন দেহের নার্ভাস সিস্টেম উন্নত করে এবং মাংসপেশির উন্নয়ন ঘটায়।
৬। মস্তিষ্কের উন্নতি

ডিম মস্তিষ্কের প্রচুর উন্নতি ঘটায়। এতে রয়েছে মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, যার নাম কোলিন। গবেষণায় দেখা গেছে, কোলিনের অভাবে মস্তিষ্কের নানা সমস্যা দেখা দেয়। বহু মানুষই ডিম না খাওয়ায় প্রয়োজনীয় এ উপাদানটির অভাবে ভোগেন।
৭। অ্যামাইনো অ্যাসিড

মানুষের দেহ ১১ ধরনের প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড বানাতে পারে। এটি জীবনধারণের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখতে পারে। মানুষের দেহে ২০ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রয়োজন হয়। দেহ তার মধ্যে ১১ ধরনের বানাতে পারলেও বাকি ৯ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিডের সহজ উপায় হলো ডিম খাওয়া।
৮। মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমায়

ডিম মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে ভূমিকা রাখে। এটি মানুষের মনের ওপর প্রভাব ফেলে। ২০০৪ সালের এক গবেষণায় ডিমের এ অসাধারণ উপকার সম্পর্কে জানা যায়।
৯। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বিদ্যমান

ডিমে দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়অ যায়। এগুলোর নাম হলো লুটেইন ও জিয়াজাথিন। এগুলো চোখ বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ডিমের কুসুমে এ উপাদানগুলো পাওয়া যায়। তাই ডিমের কুসুমসহ ডিম খাওয়াই ভালো।
১০। হাড় ও দাঁত মজবুত করা

ডিমের উপাদান আপনার হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সহায়তা করে। ডিম প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি-এর উৎস। এটি ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে সহায়তা করে। আর এতেই সুস্থ হাড় ও দাঁত নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
১১। পূর্ণতার অনুভূতি

পেট ভরে খাওয়া হলেও আমাদের ক্ষুধা লাগতে পারে। আর এতে বাড়তি খাবার খেয়ে দেহের ওজন বেড়ে যেতে পারে। ডিমের উপাদানগুলো আপনাকে খাওয়ার পর পেটে পূর্ণতার অনুভূতি দেবে। এতে বাড়তি খাওয়ার ক্ষুধা কমে যায়।
১২। দেহের ওজন নিয়ন্তনে

ডিম খেলে দেহের ওজন কমে একথা অনেকেই বিশ্বাস করতে চান না। কিন্তু বিভিন্ন গবেষণায় বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে যে পরিমিত মাত্রায় ডিম খেলে দেহের ওজন কমানো সম্ভব। মূলত ডিমে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থাকায় তা বাড়তি খাবার খাওয়ার চাহিদা কমিয়ে দেয়। এতে ক্ষুধা কমে যায় এবং দেহের ওজনও কমে যায়। সুতরাং ওজন কমাতে ডিমের অপরিসীম অবদান।
১৩। দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে

ডিমে অবস্থিত লুটিন ও জেক্সান্থিন এই দুটি ক্যারটিনইয়েড আমাদের দৃষ্টি শক্তিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ডিমে থাকা উপাদানগুলো আমাদের চোখের ছানি, মেকুলার পতন ও সূর্যের বেগুনি রশ্নি থেকে আমাদের চোখকে রক্ষা করে থাকে।
১৪। ক্যালরি বৃদ্ধিতে

ছোট্টো একটা ডিম হাজারো ভিটামিনে ভরা। এর ভিটামিন বি ১২ আপনি যা খাচ্ছেন সেই খাবারকে এনার্জি বা শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে প্রত্যেক নারীর শরীরে রোজ কমপক্ষে ৫০ গ্রাম প্রোটিনের দরকার। একটি ডিমে থাকে ৭০-৮৫ ক্যালোরি বা ৬.৫ গ্রাম প্রোটিন। সুতরাং সুস্থ থাকতে রোজ ডিম খেতেই পারেন।
১৫। ক্যানসার প্রতিরোধে

ডিমে আছে ভিটামিন ই। এটি কোষ এবং ত্বকে উত্‍পন্ন ফ্রি র‍্যাডিক্যাল নষ্ট করে দেয়। এবং স্কিন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। বর্তমানে প্রায় মেয়েদের স্তনের ক্যানসার দেখা দিচ্ছে, ডিমে প্রচুর ভিটামিন বিদ্যমান থাকাই সপ্তাহে যদি ৬টি ডিম আপনি খাইতে পারেন। আপনাকে স্তনের ক্যানসার নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। কারন ডিম ৪০% পর্যন্ত স্তনের ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।


ডিমের মধ্যে কি কি অপকারিতা আছে চলুন গবেষকেরা কি বলেন

অবশ্য ডিমের জনপ্রিয়তার পাশাপাশি অনেক দিন ধরেই এই ধারণাও ব্যাপকভাবে প্রচারিত যে, ডিমের কুসুম খাওয়া অনেক সময়ই প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। বিশেষত যাদের হৃদরোগ বা এ রোগের ঝুঁকি আছে, তাঁদের ডিমের কুসুম খেতে নিষেধ করা হয়। বলা হয়ে থাকে, ডিমের কুসুমে থাকা ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’ ও ‘উচ্চমাত্রার কোলেস্টরল’ উচ্চ রক্তচাপজনিত স্বাস্থ্যসমস্যা এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে বহুল প্রচলিত এ ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছেন হালের বিজ্ঞানীরা।

পুষ্টিবিদ লিজ উলফি ডিমের কুসুম খাওয়ার লাভ-লোকসান নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। তাঁর মতে, ডিমের কুসুম না খেলে লাভের চেয়ে লোকসানই বেশি। কেননা, কুসুম না খেলে ভালো মানের পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হবেন আপনি। কুসুম খেলে শারীরিক ক্ষতির ঝুঁকি নিয়েও বিশদ আলোচনা করেছেন উলফি। তিনি জানান, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টরলের উত্স কুসুম নিয়ে হইচই শুরু হয় বিশ শতকের গোড়ায় নিকোলাই আনিচকভের গবেষণার পর। আনিচকভ খরগোশের ওপর এ নিয়ে পরীক্ষা চালান এবং দেখেন, কোলেস্টরলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ওই গবেষণার ফল চ্যালেঞ্জ করে লিজ উলফি বলেন, ‘খরগোশের সঙ্গে মানুষের শরীরের তেমন কোনো সাধারণ মিল নেই। আর কোলেস্টরল ওদের ডায়েটের অংশও নয়।’ কিন্তু ওই গবেষণাই ডিমের কুসুমের বিষয়ে প্রচারণার ভিত্তি।

পরবর্তী সময়ে ১৯৫০ সালের দিকে গবেষক অ্যাঙ্কেল কিজ স্যাচুরেটেড ফ্যাট নিয়ে তাঁর বিখ্যাত ‘সাত দেশের গবেষণা’ করেন। কিজ দেখিয়েছিলেন, বেশি মাত্রায় ‘অ্যানিমেল ফ্যাট’ গ্রহণ করে এমন মানুষেরা হৃদরোগের ঝুঁকিতে বেশি থাকে। কিন্তু তাঁর গবেষণাও পূর্ণাঙ্গ ছিল না বলে দাবি করেন উলফি।

২০১০ সালে দ্য আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন এ বিষয়ে একটা বিশদ বিশ্লেষণী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২১টি আলাদা গবেষণার ফল নিয়ে প্রকাশিত ওই বিশ্লেষণে জানানো হয়, ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট করোনারি হার্ট ডিজিজ, স্ট্রোক কিংবা করোনারি ভাসকুলার ডিজিজের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।’ তা ছাড়া, চলতি বছরের শুরুর দিকে টাইম সাময়িকী তাদের ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছে, যাতে বলা হয়েছিল—ডিম এবং অন্যান্য উচ্চমাত্রার চর্বিযুক্ত খাবার ক্ষতিকর।

হৃদরোগের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে পুষ্টিবিদ উলফি বলেন, স্থায়ী দুশ্চিন্তা-উদ্বেগ এবং উদ্ভিজ্জ তেল ও প্রক্রিয়াজাত শর্করাজাতীয় খাবারের সৃষ্ট প্রদাহ থেকেই হৃদরোগ হয়ে থাকে। এই পুষ্টিবিদ আরও বলেন, ডিমের কুসুম ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-বি-এর খুবই ভালো উত্স। ভিটামিন-এ ত্বকের জন্য ভালো। ভিটামিন-বি শরীরে শক্তি জোগায়, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং মাংসপেশির গঠনে সহায়ক। এ ছাড়া গর্ভধারণের জন্যও ডিমের কুসুম খাওয়া উপকারী। ডিমের কুসুমে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে প্রয়োজনীয় হরমোনের উত্পাদন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং শরীরে ভিটামিন ও মিনারেল ধারণ করার ক্ষমতা বাড়ায়। খাবারদাবারে মোট ক্যালরির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে কুসুমসহ পুরো ডিম খেলেও ওজন বাড়বে না, বরং তা শরীরের জন্য উপকারী।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post