সুচির মিথ্যা ভাষণ ও 'মিয়ানমারের লজ্জা': যা বললেন বিশ্লেষকরা
জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন সুচি
জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন সুচি
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচি বলেছেন, কিছু শরণার্থীকে ফেরত আনার জন্য যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করতে তিনি প্রস্তুত রয়েছেন। তিনি বলেন, যেকোনো সময় এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
জাপানের নিকি এশিয়ান রিভিউ পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সুচি আরও বলেছেন, শরণার্থীদের প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতির উদ্দেশে বক্তব্য দেয়ার এক দিন পরেই জাপানের পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাৎকারে সুচি রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার ভূমিকায় আন্তর্জাতিক সমালোচনা প্রসঙ্গেও কথা বলেন।
জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সুচি দাবি করেছিলেন, ৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে রাখাইনে আর কোনো অভিযান হয় নি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে দীর্ঘ সময় নীরব থাকার পর টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি মিথ্যাচার করেন বলে আন্তর্জাতিক মহলে অভিযোগ উঠেছে।
জাতিসংঘসহ বিশ্বনেতারা সুচির বিরুদ্ধে জাতিগত শুদ্ধি অভিযানে সমর্থন দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন। সমালোচকরা বলছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধে সুচি ইচ্ছুক নন। এসব সমালোচনা প্রসঙ্গে সুচি বলেন, কোনো কিছুই অবাক করার মতো নয়। কারণ, অন্য সব মতামতের মতো বিশ্ব মতামতও বদলায়।
এদিকে, টাইম ম্যাগাজিনের চলতি সংখ্যার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন করা হয়েছে রাখাইন সংকট নিয়ে। এতে রোহিঙ্গা সংকটকে ‘মিয়ানমারের লজ্জা’ আখ্যা দিয়ে পত্রিকাটি বলছে, রোহিঙ্গাদের দুর্দশা মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচিকে কলংকিত করেছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন রেডিও তেহরানকে বলেন, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সুচি একটু নরম সুরে কথা বললেও তার কথায় ফাঁকি রয়ে গেছে। যে রোহিঙ্গাদের তারা নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিক করে তাড়িয়ে দিয়েছে তাদের দেশে ফেরার অনিশ্চয়তা থেকেই গেল।
তিনি মনে করেন, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেন রোহিঙ্গাদের একটি অসহায়, করুণাপ্রার্থী উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠিতে পরিণত না করে; বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের পূর্ণাঙ্গ নাগরিক মার্যাদার সাথে নিজ ভূমিতে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে।
ওদিকে, মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যের গ্রামগুলোর ঘর-বাড়ি এখনো আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল স্যাটেলাইটের ছবি ও ভিডিও’র প্রমাণ দিয়ে গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে।#