Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » কাতালোনিয়া গণভোট: কেন বেরিয়ে যেতে চায় স্পেন থেকে





 কাতালোনিয়া গণভোট: কেন বেরিয়ে যেতে চায় স্পেন থেকে

স্পেনিশ পুলিশকে ফুল দিয়ে সমর্থন জানাচ্ছেন স্বাধীনতাকামী এক কাতালান
কাতালোনিয়া প্রদেশের নিজেদের একটি স্থানীয় সরকার থাকা সত্ত্বেও তারা স্পেন থেকে বের হয়ে স্বাধীন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
এজন্যে তারা আগামীকাল রোববার স্বাধীনতার প্রশ্নে একটি গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। এই ভোট বন্ধ করতে মরিয়া উঠেছে স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার।
কাতালোনিয়ার জনসংখ্যা ৭৫ লাখ। সুইজারল্যান্ডের জনসংখ্যার সমান। স্পেনের মোট জনসংখ্যার ১৬ শতাংশ এই কাতালোনিয়ায়। স্পেনের উত্তর-পূর্বের এই প্রদেশটির রাজধানী বার্সেলোনা। তাদের আছে নিজস্ব ভাষাও। বার্সেলোনা বিশ্বের অত্যন্ত জনপ্রিয় শহরগুলোর একটি, ফুটবল এবং একই সাথে পর্যটনের কারণে।
রোহিঙ্গাদের আসা আবার বেড়ে যাওয়ার কারণ কি
স্পেন সরকার বলছে, এই গণভোট অবৈধ। শুধু তাই নয়, আদালত থেকেও এই ভোটের আয়োজন বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই কাতালোনিয়ার সরকার স্কুলগুলোতে ভোটকেন্দ্র বসানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। অভিযান চালিয়ে অনেক ভোট কেন্দ্রই পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছে।

ভোট কেন্দ্র বানানোর লক্ষ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অবস্থান
শুধু তাই নয়, কাতালোনিয়ার সরকারের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে গ্রেফতারও করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ব্যালট পেপার, স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে।
কিন্তু ভোটের পক্ষে রাস্তায় নেমে এসেছেন কাতালানরা। কেন্দ্রীয় সরকারের বাধার প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ করছেন।
প্রশ্ন হচ্ছে, স্পেনের ক্ষুদ্র একটি অংশ হয়েও তারা কেন স্বাধীনতা চাইছে? আর এর সম্ভাবনাই-বা কতোটা?
কিভাবে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো?
কাতালোনিয়া স্পেনের অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল। এর লিখিত ইতিহাস এক হাজার বছরেরও বেশি পুরনো।
স্পেনের গৃহযুদ্ধের আগে এই অঞ্চলের ছিলো বড়ো রকমের স্বায়ত্তশাসন। কিন্তু ১৯৩৯ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জেনারেল ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর স্বৈরশাসনের সময় কাতালোনিয়ার স্বায়ত্তশাসনকে নানা ভাবে খর্ব করা হয়।
কিন্তু ফ্রাঙ্কোর মৃত্যুর পর সেখানকার জাতীয়তাবাদ আবার শক্তিশালী হতে শুরু করে। এবং তীব্র আন্দোলন ও দাবির মুখে ওই অঞ্চলকে স্বায়ত্তশাসন ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আর সেটা করা হয় ১৯৭৮ সালের সংবিধানের আওতায়।

গণভোটের বিলে সই করছেন কাতালান প্রেসিডেন্ট
স্পেনের সংসদে ২০০৬ সালে একটি আইন প্রণয়ন করা হয় যেখানে কাতালোনিয়াকে আরো কিছু ক্ষমতা দেওয়া হয়। কাতালেনিয়াকে উল্লেখ করা হয় একটি 'জাতি' হিসেবে।
কিন্তু সংবিধানে কাতালোনিয়াকে দেওয়া এরকম অনেক ক্ষমতা পরে স্পেনের সাংবিধানিক আদালত বাতিল করে দেয় যা কাতালোনিয়ার স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ক্ষুব্ধ করে তোলে।
স্বায়ত্তশাসন কাটছাঁট করার ফলে ক্ষুব্ধ কাতালানরা, এর সাথে যুক্ত হয় বছরের পর বছর ধরে চলা অর্থনৈতিক মন্দা, সরকারি খরচ কমানো, ২০১৪ সালে অনানুষ্ঠানিক-ভাবে স্বাধীনতার প্রশ্নে একটি গণভোটের আয়োজন করে।
বিজ্ঞাপনে মডেলের ফিগার পাল্টানোর ফাঁকি আর চলবে না
তখন ভোটার ছিলো ৫৪ লাখ। ভোটে অংশ নেয় ২০ লাখেরও বেশি ভোটার। এবং কর্মকর্তারা ঘোষণা করেন যে ৮০ শতাংশেরও বেশি ভোটার স্পেন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেন। অর্থাৎ জনরায় হলো কাতালোনিয়া চায় স্বাধীনতা।
বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ২০১৫ সালে কাতালোনিয়ার নির্বাচনে জয়লাভ করে। তখন তারা এমন একটি গণভোট আয়োজনের কথা বলে যার আইনি বৈধতা থাকবে এবং সেটা মানতে কেন্দ্রীয় সরকার বাধ্য হবে।
স্পেনের সংবিধানকে লঙ্ঘন করেই তারা এই ঘোষণা দেয়। কারণ সংবিধানে বলা আছে, স্পেনকে ভাগ করা যাবে না।
তাহলে সমস্যা কোথায়?
কাতালান পার্লামেন্টে গণভোটের প্রসঙ্গে একটি আইন তৈরি করা হয় এবছরের সেপ্টেম্বর মাসে। সেখানে রাখা হয় মাত্র একটি প্রশ্ন: আপনারা কি চান কাতালোনিয়া প্রজাতন্ত্রের কাঠামোয় একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে উঠুক?
আর সেখানে দুটো ভোট দেওয়া উপায় রাখা হয়: হ্যাঁ অথবা না।

বিতর্কিত এই আইনটিতে ভোটের ফলাফলকে মানতে বাধ্যতামূলক করা হয় এবং বলা হয় কাতালোনিয়ার নির্বাচন কমিশন গণভোটের ফলাফল করার দু'দিনের মধ্যে পার্লামেন্টে কাতালোনিয়াকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
কাতালান প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন, অন্য কোন আদালত বা রাজনৈতিক শক্তি তার সরকারকে ক্ষমতা থেকে বরখাস্ত করতে পারবে না।
মাদ্রিদের প্রতিক্রিয়া কি ছিলো?
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখয় এই ভোটকে অবৈধ হিসেবে ঘোষণা করেন। বলেন, "আমি অত্যন্ত নরম সুরো কিন্তু কঠোর করে বলতে চাই কোন গণভোট হবে না। এটা হবে না।"
প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে স্পেনের সাংবিধানিক আদালত কাতালোনিয়ার ওই আইনটিকে বাতিল করে দেয়। এতে কাতালানরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এবং তারপর থেকেই স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার কাতালোনিয়ার অর্থনীতি ও পুলিশের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে।

স্পেনের মানচিত্রে কাতালোনিয়া
গণভোটের আয়োজনকারী কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে এক কোটি ব্যালট পেপার এবং যেসব ওয়েবসাইটে এই গণভোটের প্রচারণা চালানো হচ্ছে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ভোট কি হবে?
বিবিসির সংবাদদাতারা বলছেন, কোন না কোন উপায়ে, কাতালোনিয়ার কোথাও না কোথাও এই গণভোট ঠিকই অনুষ্ঠিত হবে, যদিও এই ভোট বন্ধ করার জন্যে বাইরে থেকে সেখানে আরো ৪,০০০ পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন সেজন্যে একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ভোট কেন্দ্রগুলো কোথায় কোথায় সেটা বলে দেওয়া হচ্ছে। তবে ভোট কতোটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে সেটা বলা কঠিন।
স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি সমর্থন আছে এরকম একটি রাজনৈতিক দল, যারা ২০১৫ সালে কাতালোনিয়ার নির্বাচনে ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে, তারা এই গণভোট বর্জন করছে।

কেন্দ্রীয় পুলিশ বহু ভোট কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে
ফলে না ভোট পড়লেও তার সংখ্যা হবে খুবই কম এবং সেটা প্রতিনিধিত্বশীল হবে না। তবে ভোটের হার যদি খুব বেশি হয় তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষেও এই জনরায়কে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া অতোটা সহজ কাজ হবে না।
কাতালানরা কি আসলেই স্বাধীনতা চায়?
স্বাধীনতার পক্ষের সমর্থকরা স্পেন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার দাবিতে বড়ো রকমের সমাবেশ করেছে। ১১ই সেপ্টেম্বরে জাতীয় দিবস উপলক্ষে জড়ো হয়েছিলো ১০ লাখেরও বেশি মানুষ।
কাতালান সরকারের উদ্যোগে চালানো এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৪১ শতাংশ স্বাধীনতার পক্ষে, আর বাকি ৪৯ শতাংশ স্বাধীনতা চায় না।
ধারণা করা হয়েছিলো স্বাধীনতার সমর্থনে গত কয়েক বছরে হয়তো ভাটা পড়েছে। কিন্তু স্পেন সরকার যেভাবে দমন পীড়ন চালিয়ে গণভোট বন্ধ করেত চাইছে তাতে অনেকেই হয়তো স্বাধীনতার দিকে ঝুঁকেও পড়েছেন, তবে আসল চিত্রটা যে কি বলা কঠিন।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post