পদ্মা সেতু রঙিন কোনও স্বপ্ন নয়, আজ তা বাস্তব: ওবায়দুল কাদের
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ওবায়দুল কাদের
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ওবায়দুল কাদের
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক নেতৃত্ব ও সাহসিকতায় পদ্মা সেতুর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ (শনিবার) পদ্মাসেতুতে স্প্যান বসানোর কাজের উদ্বোধন শেষ শরিয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটির ওপর প্রথম স্প্যান বসানো হয়েছে। ৩৯, ৪০ ও ৪২ নম্বর পিলারের কাজও খুব দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। শিগগিরই ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যান বসানো হবে।’
মন্ত্রী জানান, ‘এ পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে পদ্মাসেতুর অগ্রগতি ৪৭ দশমিক ৫ ভাগ। মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৪৯ শতাংশ। মাওয়া পয়েন্টে সংযোগ সড়কের কাজ ১০০ ভাগ শেষ। জাজিরা পয়েন্টে সংযোগ সড়কের কাজ ৯৯ ভাগ সম্পন্ন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক যখন এই প্রকল্প থেকে তাদের কাজ গুটিয়ে নিয়েছিল, তখন পদ্মা সেতু প্রকল্প অনিশ্চয়তার মেঘে ঢাকা পড়ে। পরে শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্তে মেঘ কেটে গেছে। আজ পদ্মা সেতু রঙিন কোনও স্বপ্ন নয়, আজ তা বাস্তব। আজ পদ্মা সেতু পুরো বিশ্বের মানুষের কাছে দৃশ্যমান। এমন একটি দিনের স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই স্বপ্নের রূপকার তারই কন্যা, বিপন্ন মানবতার বাতিঘর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
প্রকল্প সাইটের জেটিতে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকের এই দিন জাতীয় জীবনে সোনালী স্বপ্নের দিন। এখানে অবদান আছে সবার; সচিব, প্রকল্প পরিচালক, জনপ্রতিনিধি, পদ্মার দুই পাড়ের জনগণ, সেনাবাহিনীর। আজ কোনও আনুষ্ঠানিকতা নয়, শুধু কাজ চালিয়ে নিলাম। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছিলাম। তিনি এখন ওয়াশিংটনে আছেন। আমরা ফোন করে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘আপনি আসা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করবো কিনা’। তার জবাবে উনি বলেছেন, ‘অপেক্ষা করতে হবে না, তোমরা কাজ চালিয়ে যাও।"
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, স্বপ্নের এই সেতু বাস্তবায়নে এর কাজ যেন এক মিনিটের জন্যও থেমে না থাকে। উনি যখন আসবেন, তখন সবাইকে নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। এজন্যই আমরা আজ কাউকে ডাকিনি।’
ভাসমান ক্রেনের সাহায্যে বহন করে আনা প্রথম সুপার স্ট্রাকচার (স্প্যান) সেতুর ৩৭ ও ৩৮ নং পিলারের উপর বসানো হয়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শরিয়তপুরে জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা সেতুর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে বসানো হয় প্রথম স্প্যান। ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ৩ হাজার ২০০ টন ওজনের স্প্যানটি ৪ হাজার টন ক্ষমতার একটি ক্রেনে তোলা হয় গত রোববার। এরপর মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ক্রেনটি চালিয়ে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছাতে সময় লাগে দুই দিন। পরে গতকাল সন্ধ্যায় এটি ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটির কাছে নিয়ে ক্রেনের মাধ্যমে ঝুলিয়ে রাখা হয়। আজ সকালে বাকি আনুষঙ্গিক কাজ সেরে সোয়া ১০টার দিকে স্প্যানটি বসানো হয়। পুরো কাজটি হয় ক্রেন আর প্রযুক্তির সাহায্যে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, কর্মরত দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা খুবই আনন্দিত, তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হচ্ছে।#