কারিগরি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত প্রকল্পে বিনিয়োগের আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কারিগরি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য দেশের শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ নগরীর আগারগাঁও-এ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন মিলনায়তনে ‘স্কিলস কম্পিটিশন ২০১৭’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষা দক্ষতা নির্ভর হওয়া উচিৎ উল্লেখ করে বলেন, দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে শিক্ষা নিয়ে অনেককেই বেকারত্বের যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। দক্ষতাবিহীন শিক্ষা ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের জন্য বোঝা স্বরূপ। বর্তমান সরকার শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আর এর মধ্যে কারিগরি শিক্ষাকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দক্ষতা নির্ভর কারিগরি শিক্ষাই কেবল পারে দেশকে দারিদ্র্যের দুষ্ট চক্র থেকে মুক্ত করে সরকারের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মধ্যম ও উচ্চ আয়ের দেশে রূপান্তর করতে। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং কারিগরি শিক্ষাকে আধুনিকায়নের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যদি আপনারা আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্ভাবনী প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন তবে তারা আরও বেশী আবিষ্কারের দিকে মনোযোগ দেবে এবং দেশ, কাল ও বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন প্রকল্প উদ্ভাবন করবে।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বর্তমান সরকার এরই মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় ১৪ ভাগ এর অধিক ভর্তি হার নিশ্চিত করেছে। সরকার এই হার ২০২০ সালের মধ্যে ২০ ভাগ ও ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ ভাগ এ উন্নীত করতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যদি আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদা পেতে চাই তবে আমাদের ছেলে মেয়েদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার কোন বিকল্প নেই।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, অতিরিক্ত সচিব একেএম জাকির হোসেন ভূঞা, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোডের্র চেয়ারম্যান ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিলের সচিব এবিএম খোরশেদ আলম, প্যাটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার মো. সানোয়ার হোসেন ও বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেসন্স অফিসার ড. মো: মোখলেছুর রহমান এবং স্টেপ প্রকল্প পরিচালক এবিএম আজাদ বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, স্কিলস কম্পিটিশন আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে কারিগরি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশের পথ প্রশস্ত করা, শিল্প-সংযোগ প্রতিষ্ঠা করা এবং কলকারখানাসমূহকে উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার মধ্য দিয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখা। ২০১৪ সাল থেকে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশের লক্ষ্যে স্টেপ এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে।
এবারের স্কিলস কম্পিটিশনের প্রাতিষ্ঠানিক পর্ব- দেশব্যাপী ১৬২টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আগামী ২১ অক্টোবর, আঞ্চলিক পর্ব- দেশের ১৩টি অঞ্চলে একযোগে ১৮ নভেম্বর এবং জাতীয় পর্যায়ে ৯ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে বিগত তিন বছরের সেরা ৩০টি উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শন করা হয়। প্রকল্পগুলোর বাণিজ্যিক উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সম্ভাব্যতা পর্যালোচনা করাই ছিল এই প্রদর্শনীর অন্যতম লক্ষ্য। প্রদর্শনীতে শিল্পকারখানার মালিক, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ভেঞ্চার গ্রুপ, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও কারিগরি শিক্ষা পরিচলনাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থেকে উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেন