জার্মানির মুসলিম বিদ্বেষী দল এএফডি কি চায়?
আলেক্সান্ডার গাওল্যান্ড এবং আ্যালিস ভিডেল - এএফডি'র দুই শীর্ষ নেতা
মাত্র চার বছর আগে জন্ম নিলেও জার্মান সংসদের ৯০টিরও বেশি আসন জেতা কট্টর ডানপন্থী দল এএফডি (অলটারনেটিভ ফর জার্মানি) বিশ্বাস করে জার্মান সমাজে ইসলামের কোনো জায়গা নেই।
তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে দলটি খোলাখুলি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো যে জিতলে তারা জার্মানির মসজিদগুলোতে বিদেশ থেকে আসা অর্থ আসা নিষিদ্ধ করবে। একইসাথে বোরকা এবং আজান নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতিও ছিল তাদের ইশতেহারে।
রোববারের ভোটের আগে যেখানে ধারনা করা হচ্ছিলো তারা বড়জোর ১০ শতাংশ ভোট পেতে পারে, চূড়ান্ত ফলাফলে তার চেয়েও ভালো করেছে দলটি। তারা প্রায় ১৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে যার অর্থ জার্মান সংসদে তাদের আসন সংখ্যা হবে ৯৪ ।
জার্মানির ১৬টি রাজ্যের আঞ্চলিক সংসদের ১৩টিতেই তাদের এমপি রয়েছে। এখন তারা জার্মানির তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসাবে জার্মানির কেন্দ্রীয় সংসদে জায়গা নিচেছ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানিতে কোনো নতুন দল এই মাত্রার জনপ্রিয়তা পায়নি।
এএফডি'র জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
ইউরোপের অভিন্ন মুদ্রা ইউরো বাতিলের দাবি নিয়ে ২০১৩ সালে রাজনৈতিক দল হিসাবে এএফডি'র আত্মপ্রকাশ। কিন্তু পরপরই তাদের রাজনীতির প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে অভিবাসন এবং ইসলাম।
তাদের নেতারা বলতে শুরু করেন জার্মান সমাজের সাথে ইসলামি সংস্কৃতি এবং জীবনধারার সহাবস্থান অসম্ভব। মসজিদের মিনার নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হয়।
তারপর ২০১৫ সালে কয়েক মাসের মধ্যে জার্মানিতে সিরিয়া এবং কয়েকটি মুসলিম দেশ থেকে প্রায় ১০ লাখ মানুষকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া নিয়ে যে জন-অসন্তোষ জার্মানিতে ছড়িয়ে পড়ে, তার রাজনৈতিক ফায়দা নিতে উঠেপড়ে লেগে যায় এএফডি।
বোরখা এবং মসজিদে বিদেশী অর্থ নিষিদ্ধ করার কথা দাবি তোলা শুরু করে তারা। জার্মানি সহ ইউরোপের দেশে দেশে বিভিন্ন জাতিধর্মের লোকজনকে নাগরিকত্ব এবং বসবাসের অধিকার দেওয়ার যে নীতি রয়েছে, সেটিকে 'অকার্যকর' বলে স্লোগান তুলতে থাকে দলটি।
বিশেষ করে জার্মানিতে যে প্রায় ৩০ লাখ তুর্কি বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠী রয়েছে, তারাই এএফডির আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যতে পরিণত হয়।
রোববারের নির্বাচনে অসামান্য ফলাফলের পর এএফডি পরিষ্কার ইঙ্গিত দিয়েছে তারা অভিবাসনের বিরুদ্ধে তাদের রাজনীতিকে আরো শাণিত করবে।
দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক্সান্ডার গাওল্যান্ড বলেন, তার দল "বিদেশীদের আগ্রাসন" বন্ধের জন্য লড়াই এখন আরো জোরদার করবে।
"জার্মানি নতুন নীতি চায়...হঠাৎ দশ লাখ লোক ডেকে এনে দেশের একটি অংশ তাদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে..ভিন্ন একটি সংস্কৃতি থেকে এত বিদেশীর আগ্রাসন আমি চাইনা। সোজা কথা।"