Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » বাউন্সার, গুগলির ছড়াছড়ি





 বাউন্সার, গুগলির ছড়াছড়ি

সুনীল গাভাসকার: খেলাধুলো মানেই সবসময় যে দক্ষতা বা মানসিকতার ব্যাপার, তা নয়। এর সঙ্গে ভাগ্যও জড়িয়ে থাকে। এর আদর্শ উদাহরণ কেনিয়া জয়ন্তীলাল। ১৯৭১ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ওপেন করেছিল। ওকে ‘‌জয়ন্তীভাই’‌ বলেই সবাই ডাকত। তখনকার দিনে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে যারা বাউন্সার ভাল খেলত, ও তাদের মধ্যে অন্যতম। ম্যাটিং উইকেটে খেলে ও বড় হয়েছিল। ম্যাটিং উইকেট মানেই বাড়তি বাউন্স, বাড়তি গতি। ফলে সবসময় হুক, পুল করার জন্য তৈরি থাকত। দুটোই ভাল মারত।
সাবাইনা পার্কে প্রথম টেস্টে ও একটা শর্ট বল পেয়েছিল গ্যারিসন শিলিংফোর্ডের কাছ থেকে। প্রিয় হুক শট খেলার জন্য নিজেকে সঠিক জায়গায় নিয়েও গিয়েছিল। কিন্তু উইকেটের পিচ্ছিল চরিত্রটা ও সম্ভবত বুঝতে পারেনি। আর দীর্ঘদেহী শিলিংফোর্ডের যা গতি, সেটা ওকে সম্ভবত ম্যাটিং উইকেটেও সামলাতে হয়নি। যখন দেখেছিল, বলটা প্রত্যাশার থেকে বেশি গতিতে এসেছে, তখন শট খেলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু ব্যাটটা ওপরে রয়ে গিয়েছিল। বল ব্যাটে লেগে রকেটগতিতে দ্বিতীয় স্লিপে গিয়েছিল। সরাসরি দ্বিতীয় স্লিপে যায়নি, সেখান থেকে সামান্য দূরে গিয়েছিল। সেখানে ছিল গ্যারি সোবার্স।

বিদ্যুৎগতিতে সোবার্স ডানদিকে ঝাঁপিয়ে মাটির এক মিলিমিটার ওপর থেকে বলটা তালুবন্দী করেছিল। মনে রাখতে হবে, যেহেতু সোবার্স বাঁহাতি, ক্যাচটা ওর দুর্বল দিকে এসেছিল। সত্যিই অসাধারণ ক্যাচ। এরপর দিলীপ সারদেশাইয়ের ডাবল সেঞ্চুরির সুবাদে ভারত ফলো অন করিয়েছিল। বেচারা জয়ন্তীভাই আর ব্যাট করার সুযোগই পায়নি।
প্রথম আর দ্বিতীয় টেস্টের মাঝে কয়েকটা প্র‌্যাকটিস ম্যাচ ছিল আমাদের। ওই ম্যাচগুলোয় রান পাওয়ায় দ্বিতীয় টেস্টে আমাকে দলে নেওয়া হয়েছিল। জয়ন্তীভাই বাদ পড়েছিল। আমাদের স্পিনাররা দুর্দান্ত বল করে প্রথম দিনই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস শেষ করে দিয়েছিল। এরপর আমরা যখন ব্যাট করতে নেমেছিলাম, আমার সহজ ক্যাচ সেই গ্যারি সোবার্সই ফেলে দিয়েছিল। ওর হাঁটুর উচ্চতায় বল গিয়েছিল। আমি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলাম। ভারত ম্যাচটা জিতেছিল। আমার ক্রিকেট জীবনও বেঁচে গিয়েছিল। জয়ন্তীভাই জীবনে আর দ্বিতীয় টেস্ট খেলার সুযোগ পায়নি। অথচ ওই সফরে এবং পরের ইংল্যান্ড সফরে প্রথম শ্রেণির ম্যাচগুলোয় ও রান পেয়েছিল। এটাকেই বলে ভাগ্য।
একজনের সৌভাগ্য আরেকজনের দুর্ভাগ্যের কারণ হতে পারে। শ্রীলঙ্কা যে ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলার সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করল, তার জন্য ওদের নিজেদের ভাগ্যবান মনে করা উচিত। বৃষ্টির জন্য আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচ ভেস্তে গিয়েছিল। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ্বকাপে সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করতে হলে ইংল্যান্ডকে সব ম্যাচে হারাতে হত। কিন্তু ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও ওদের একটা ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়েছিল। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এখন অ্যাসোসিয়েট দেশগুলোর সঙ্গে যোগ্যতা অর্জন পর্বের প্রতিযোগিতা খেলতে হবে। ওরা যোগ্যতা অর্জন করতেই পারে, এমনকি বিশ্বকাপও জিততে পারে। কারণ এখন বিশ্ব ক্রিকেটে কোনও কিছুই অনুমান করা সম্ভব নয়। কিন্তু এক সময়ের শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই অবস্থা হওয়াটা খুব খারাপ। ওদের আসল সমস্যা হল, ওখানে খেলে তেমন টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। খেলা ছাড়ার পর তেমন কিছু করারও থাকছে না। তাই আর্থিক নিশ্চয়তা পাওয়ার জন্য ওরা দেশের হয়ে না খেলে বিভিন্ন টি২০ লিগ খেলছে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটের কয়েকজন ধ্বংসাত্মক ক্রিকেটার ওদের দেশে থাকা সত্ত্বেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিকাংশ সময়ই পূর্ণশক্তির দল নামাতে পারে না। ফলে যেসব দলকে ওরা অনায়াসে হারাতে পারত, এখন তাদের কাছেও হারতে হচ্ছে। ওদের কয়েকজন ক্রিকেটার এই সব টি২০ লিগে ভাল খেলছে। কিন্তু দেশের ক্রিকেট প্রশাসকদের সঙ্গে ওদের এতই ঝামেলা, ওরা জাতীয় দলের হয়ে না খেলাকেই সঙ্গত মনে করে। ক্রিকেটার–‌প্রশাসক ঝামেলা লেগেই থাকে। বিশেষ করে টাকা‌পয়সা নিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সঙ্গেও সে দেশের অ্যাসোসিয়েশনের এই নিয়ে দীর্ঘ ঝামেলা। কোনও উন্নত দেশেই যদি এরকম হয়, উন্নয়নশীল দেশে এরকম ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কোনও সন্দেহ নেই, প্রশাসকরা ক্রিকেটারদের সংগঠনকে ভয় পায়।
ভারতে সুপ্রিম কোর্ট ক্রিকেটারদের সংগঠন তৈরির ব্যাপারটা অনুমোদন করেছে। ভারতের ক্রিকেটীয় পরিবেশে এই সংগঠন কীভাবে কাজ করবে, সেটা দেখার বিষয়। এখন মাঠের ভেতরে ভারতীয় ক্রিকেট অন্যতম সেরা একটা জিনিস। অসাধারণ কিছু স্ট্রোক প্লেয়ার, এবং পেসার ও স্পিনার একসঙ্গে রয়েছে এই দলে। দুর্দান্ত কিছু ফিল্ডারও রয়েছে। মাঠের বাইরেও ভারতীয় ক্রিকেট কম উত্তেজক নয়। রোজ বাউন্সার, গুগলির ছড়াছড়ি।








«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post